রাজশাহী বোর্ডে পদার্থবিজ্ঞানের জন্য বিজ্ঞানে ফেল বেশি
তানভীর আহম্মেদ : গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এই বছরও রাজশাহী বোর্ডে পদার্থবিজ্ঞানের জন্য বিজ্ঞানে ফেলের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ।আর এই সংখ্যা গ্রাম এলাকার কলেজ সমূহে বেশি । রাজশাহী বিভাগের গ্রাম এলাকার কলেজ সমূহের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানে কোনো শিক্ষার্থী পাশ করেনি শুধু পদার্থবিজ্ঞানের জন্য ।আবার কোনো কোনো কলেজ থেকে পাশ করেছে দুই বা তিন জন শিক্ষার্থী । এই বিভাগের এমনও পরীক্ষা কেন্দ্র আছে যেখানে পরীক্ষা দেয় চারটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ।চারটি প্রতিষ্ঠান মিলে বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ৮০ থেকে ৯০ জন ।দুঃখজনক বিষয় এই চারটি প্রতিষ্ঠান হতে কোনো শিক্ষার্থী পাশ করতে পারে নি ।তাদের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে তারা বেশিরভাগই পদার্থবিজ্ঞানে ফেল করেছে । কি কারণে এই বিষয়ে শিক্ষার্থী ফেল করছে তা নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের বেশ কিছু শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান গ্রাম এলাকার কলেজে বিজ্ঞানে ভালো শিক্ষার্থী ভর্তি কম হয়। বিজ্ঞানে যেসকল শিক্ষার্থী ভালো রেজাল্ট করে তারা সকলে শহরের কোনো না কোনো কলেজে ভর্তি হয়ে যায় ।আর যেসকল শিক্ষার্থী এই সকল কলেজে ভর্তি হয় তারা হয় কম মেধাবী না হয় আর্থিকভাবে অসচ্ছল ।আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ার ফলে তারা নিয়ম মতো কলেজ করতে পারেনা এবং পড়ালেখার প্রযোজনীয় উপকরণও ক্রয় করতে পারেনা । অপরদিকে কম মেধাবী হওয়ায় পদার্থবিজ্ঞান সৃজনশীল হওয়ার কারণে বিষয়টি তারা বুঝিয়ে উঠতে পারছেনা । এই ক্ষেত্রে জাফর ইকবাল স্যারের একটি কথা খুব মনে পড়ে যায় ।তিনি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন নবম ও দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বই তিনি নিজে বোঝেননা ।এই কথাটি সবচেয়ে বেশি মিলেযায় মনে হয় গ্রাম এলাকার কলেজ সমূহের বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বেলায় । যদিও কথাটি তিনি রশিকতার ছলে বলেছেন তবুও কথাটি সত্য। সর্বোপরি যেই কথা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায় ।তা হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞান বিষয় সৃজনশীল হওয়ার পরথেকে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ।আর এই সৃজনশীল পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সমস্যা এর সিলেবাস ।শিক্ষার্থীদের মতে এই পদার্থবিজ্ঞানের সিলেবাস এতো বিস্তৃত যে কোনো ভাবেই তা দুই বছরে কভার করা সম্ভব না ।তার উপর যুক্ত হয়েছে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ।যার ফলে দূর্বল শিক্ষার্থীদের সিলেবাস কভার করা খুব কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে ।কারণ পদার্থবিজ্ঞান এমন একটি বিষয় যেখানে যেকোন জায়গা থেকে প্রশ্ন করা সম্ভব ।তাই পদার্থবিজ্ঞানের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত হওয়া খুব জরুরি ।বিশেষ করে গ্রাম এলাকার কলেজের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ।না হয় গ্রামের কলেজ সমূহে বিজ্ঞান বিভাগ উঠিয়ে দিতে হবে ।কারণ যতো দিন যাচ্ছে এই সকল কলেজে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমছে ।
মন্তব্য চালু নেই