সেই হাতিটিকে ভোররাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!

ভারতের আসাম থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের স্রোতে ভেসে আসা সেই বন্য হাতিটিকে আজ সোমবার ভোররাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল রবিবার ট্রাংকুলাইজার বন্দুক দিয়ে গুলির পর হাতিটি নিখোঁজ হয়। ধারণা করা হচ্ছে, চেতনানাশক গুলি লাগার পর হাতিটি জ্ঞান হারিয়ে কোথাও পড়ে থাকতে পারে।

উদ্ধারকারী দলের প্রধান অসীম মল্লিক ভোররাতে বলেন, জামালপুরের সরিষাবাড়ির চরাঞ্চলে গত রাত দশটা থেকে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছিলেন তারা।

এক পর্যায়ে হাতিটি উঁচু স্থানে চলে এলে তাকে ট্রাংকুলাইজার বন্দুক নামে বৃহৎ প্রাণী অজ্ঞান করার বিশেষ বন্দুক দিয়ে গুলি করা হয়। তিনি বলেন, গুলিটি সম্ভবত লেগেছে, কারণ তার ভাষায় এরপর ‘তার একটু ঝিম আসছিল’। এসময় হাতিটি এলোমেলো ভাবে ঘুরছিল। তারা অপেক্ষা করছিলেন হাতিটি অজ্ঞান হয়ে পড়ার জন্য। কিন্তু মানুষের ভিড়ে এক পর্যায়ে হাতিটি তাদের দৃষ্টিসীমার আড়ালে চলে যায়।
“এত জনগণ ছিল এখানে এই জনগণের কারণে সে আবার একদিকে হারিয়ে গেছে। এরপর আমরা তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। অভিযান চলছে, হাতি খুঁজছি আমরা। পাওয়া গেলে আবার চেষ্টা করব”, বলছিলেন অসীম মল্লিক। তিনি বলছিলেন, দিনের বেলা মানুষের ভিড়ের চাপে হাতি উদ্ধারের চেষ্টা ব্যহত হচ্ছিল। তাই তারা রাতে উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

তবে উদ্ধারকারী দলের নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক সদস্য জানিয়েছেন, হাতিটির পাশে আমাদের লোকজন রয়েছে। ট্রাংকুলাইজার বন্দুকের গুলি লাগার পর সারারাত হাতিটি ঘুমিয়েছে। মানুষের ভীড় ঠেকাতে আমরা বলেছি হাতিটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, হাতিটির হয়ত মৃত্যু হয়েছে। কারণ এলাকাটি এখন বন্যাপ্রবণ। যদি সত্যিই হাতির গায়ে ট্রাংকুলাইজারের গুলি লেগে থাকে আর তারপর সে অজ্ঞান হয়ে পানিতে ভেসে যায়, তাহলেতো আর সে বাঁচবে না।

তবে উদ্ধারকারী দলের নেতা অসীম মল্লিক বলছেন, ট্রাংকুলাইজারের গুলি লাগার পর এক ঘণ্টা হাতি তাদের দৃষ্টিসীমায় ছিল। এক ঘণ্টা পর আবার সে যখন মুভ করতে শুরু করেছে তখন আর মনে হচ্ছে না যে তার এনেস্থেশিয়া (অবশ করে ফেলার উপাদান) কাজ করেছে।
নয় দিন ধরে হাতিটিকে উদ্ধারের জন্য অনুসরণ করছে ১৭ সদস্যের বাংলাদেশী উদ্ধারকারী দলটি। পরে ৩ সদস্যের একটি ভারতীয় উদ্ধারকারী দলও তাদের সাথে এসে যোগ দেয়। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়ে রবিবার ফিরে যায়।

ভারতের আসামে বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দলছুট হয়ে গত ২৭শে জুন বাংলাদেশে প্রবেশ করে এই হাতিটি। আনুমানিক ৫ টন ওজনের হাতিটি খাবারের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল বলে এর আগে জানিয়েছিলেন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশে প্রবেশের পর উত্তরাঞ্চলীয় নদনদী ও চরাঞ্চল ধরে ক্রমাগত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাচ্ছিল বন্য হাতিটি। এই সময়কালে সে অন্তত অর্ধ সহস্র কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে।



মন্তব্য চালু নেই