কমিটি হলেও আন্দোলনে যাবে না বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের কাউন্সিল করার প্রায় পাঁচ মাস পর কমিটি গঠন করেছেন। তার ও তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত ছিলো কমিটি গঠন করার পর এখন কোন আন্দোলনে যাবেন না। আন্দোলনে যাওয়ার আগে তিনি দল সুসংগঠিত করবেন। এখনও তার সেই পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ তিনি মনে করছেন, সরকারের নিপীড়ন, নির্যাতন ও মামলার জালে বিএনপির তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতারা আটকে যাওয়ার কারণে নেতাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। এই হতাশা দূর করা জরুরি। সেই জন্য মাঠের নেতাদের মধ্যে চাঙ্গাভাব তৈরি করতে হলে অবশ্যই দলের কর্মকান্ড আরো বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন নেতৃত্বে যারা এসেছেন তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে হবে। এছাড়া দলটি বেশ কয়েকবছর ক্ষমতায় না থাকার কারণে ও সরকার কাউন্সিল করতে না দেওয়ার কারণে অনেক নেতা পদ আকঁেড় ছিলেন কিন্তু কাজ করছিলেন না। ২০১৩ সালের নভেম্বরের পর রাজনৈতিক কর্মসূচীর কোনটি তেমনভাবে সফল হয়নি। সরকার বিএনপিকে মাঠেই দাঁড়াতেই দেয়নি। কোন অনুষ্ঠানও সরকার করতে দেয়নি। এতে করে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দলের এখন মূল লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় ঐক্য গঠন করা ও দলকে সুসংগঠিত করা। দলকে সুসংগঠিত করার জন্য নতুন দায়িত্ব পাওয়া নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন মহাসচিব। তিনি নির্দেশনা দিবেন কি করতে হবে। এছাড়াও এখন যেহেতু কমিটি হয়ে গেছে এই কারণে দলের কার কি দায়িত্ব তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। এর আগে তিন দফায় কমিটির নেতাদের নাম ঘোষণা করা হলেও ওই নেতাদের সুনির্দিষ্ট করে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এই কারণে তারা মহাসচিবের সহযোগি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক এক উপদেষ্টা বলেন, এখন কমিটি হয়ে গেছে। নেতারাও বুঝতে পারছেন কার কি দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে পালন করবেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের এতদিন অপেক্ষা ছিল যে একটি পূণর্ঙ্গি কমিটি করার। সেই কমিটি হয়ে গেছে। কমিটি হওয়ার কারণে এখন নেতাদের মধ্যে চাঙ্গাভাব তৈরি হয়েছে। তারা যে যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আশা করছি।
এখন কি করবেন নতুন করে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করবেন কিনা এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন নতুন করে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে না। আন্দোলন করার আগে আগে দল সুসংগঠিত করা প্রয়োজন। কারণ আমরা জানি সরকার কোন ভাবেই আমাদেরকে দাঁড়াতে দিবে না। আমরা সমাবেশ করতে চাইলেও দেয় না। আগামী দিবে। আমরা সেই রকম পরিস্থিতির তৈরি করতে চাই।
তিনি বলেন, নতুন করে আমরা আন্দোলনে যাওয়ার জন্য এখনই কোন কর্মসূচী ঘোষণা করছি না। তবে আমাদের সামনে রয়েছে জাতীয় ঐক্যর একটি বিষয়। জাতীয় ঐক্য গঠন করার জন্য ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বৈঠকও করা শুরু করেছেন। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় সোচ্চার ছিলাম ও কাজ করেছি। এখন দেশের যে পরিস্থিতি হয়েছে এই অবস্থায় আমাদের পক্ষে বসে থাকার সুযোগ নেই। কেবল বিএনপি বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসাবে এই কাজ করতে হবে এমন নয় বরং এই কাজ করার জন্য দেশের সব দল ও সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। এই জন্য আমরা ঐক্য করবো। সেই ঐক্য করার জন্য এখন কোন শর্ত ছাড়াই সবাইকে ঐক্যমত হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা সরকারের সঙ্গেও এই ইস্যুতে ঐক্য করতে চাই। কারণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করার জন্য দেশে গণতন্ত্রকে আরো সুসংহত করতে হবে। সরকারকে আমাদের চেয়ারপারসন আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু সরকার এই ব্যাপারে কোন আগ্রহ প্রকাশ করছে না উল্টো জাতীয় ঐক্যর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এনিয়ে সরকারি দলের নেতারা কটাক্ষও করেছেন।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এখন আমরা আন্দোলনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি দল সুসংগঠিত করা। সেই জন্য আমরা সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি। এই জন্য নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হবে।
মন্তব্য চালু নেই