যেভাবে উঠে আসেন গায়ক রূপম

কলকাতার ‘ফসিলস’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য কণ্ঠশিল্পী রূপম। সংগীতের বাইরে নানা ইস্যু তিনি প্রায়ই আলোচনায় আসেন। সর্বশেষ ‘টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ’এ ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচ নিয়ে রূপম সোশাল মিডিয়াতে নানা স্ট্যাটাস দেন। যার কারণে তোপের মুখে পড়েন!

গতকাল থেকে নতুন করে আবারো সমালোচনার মুখে পড়েছেন রূপম। এবার তিনি বাংলাদেশি ব্যান্ড মাইলস নিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছেন। রূপমের দাবি- ‘মাইলস’র শাফিন আহমেদ এবং হামিম আহমেদ ভারতের ক্রিকেট দলকে নিয়ে ছোট করে নানা মন্তব্য করেছেন কয়েক মাস আগে। সেজন্য মাইলস ব্যান্ড কলকাতায় গাইতে পারবে না। যদিও রূপম অকপটে স্বীকার করেছেন, তিনি মাইলস ব্যান্ডের একজন ভক্ত।

তবে অনেকেই জানেন না কণ্ঠশিল্পী রূপমের আসল পরিচয়। কিভাবে তিনি উঠে আসেন। পুরো নাম রুপম ইসলাম। তার জন্ম ১৯৭৪ সালের ২৫ জানুয়ারি, কলকাতায়। রূপমের গানে হাতেখড়ি মা-বাবার কাছে। ছোটবেলা থেকেই কলকাতা আকাশবাণীতে নিয়মিত গাইতেন। মাত্র ৪ বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে গান করেন মা-বাবার সঙ্গে। শুরুটা যদিও ভারতীয় শাস্ত্রীয় ধারার গান দিয়ে, পরে প্রজন্মের চাহিদা এবং নিজেকে সম্পূর্ণভাবে খুঁজে পাওয়ার জন্য রক ধারার সঙ্গীতচর্চা শুরু করেন।

তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম এবং মায়ের নাম মৃত চিন্দ্রিতা ইসলাম। রুপম ইসলাম এর সঙ্গীত জীবনের হাতেখড়ি হয় তার বাবা নুরুল ইসলাম এর হাতে। সঙ্গীত শিক্ষার পাশাপাশি তিনি আশুতোষ কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স সঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় একটি অধিভূক্ত কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। এরপর তিনি আগে স্বেচ্ছায় সঙ্গীত কর্মজীবন মননিবেশ করেন।

তবে রূপমের ফসিলসের শুরুটা ১৯৯৮ সালে। ব্যান্ডের নাম ‘ফসিলস’ হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে রূপম বললেন, ‘রক গান তখন শ্রোতারা খুব একটা গ্রহণ করছিল না। তার পরও আমরা রক গান নিয়েই এগিয়েছি। আমাদের কাছে রক মিউজিককে মনে হয়েছিল আগামী প্রজন্মের গান। নানা ধরনের চাপ নিতে নিতে লিখেছিলাম খোঁড়ো আমার ফসিল, অনুভূতির মিছিল/প্রতিক্রিয়াশীল কোনো বিপ্লবে, শোনো তুমি কি আমার হবে? এখান থেকেই ফসিলস নামটা নির্বাচন করা হয়। ফসিলসের অনুপ্রেরণা ছিল বাংলাদেশের রক ঘরানার মিউজিক।

রুপমের প্রথম অ্যালবাম `তোর বর্ষাতে` বাজারে আসে ১৯৯৮ সালে। ওই অ্যালবামটি ২০০৩ সালে `নীল রং ছিল ভীষণ প্রিয়` নামে আবা্রো বাজারে ছাড়া হয়। গানগুলো জনপ্রিয় হওয়ায় ২০০৭ সালে নতুন মোড়কে অ্যালবামটি আবার বাজারজাত করে সারেগামা এইচএমভি। ‘মহানগর অ্যাট কলকাতা’ ছবিতে গান গেয়ে নেপথ্য গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন রূপম। তারপর থেকে চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ, সুর ও সংগীত পরিচালনা করছেন রুপম।

২০১১ সালে বাংলাদেশে এসে দেশ টিভির আগের রাতের অনুষ্ঠান নিয়ে রূপম বলেন, ‘অনেকেই ফোন করে ফসিলসের জনপ্রিয় গানগুলোর জন্য অনুরোধ করেছেন। ভাবতেই পারিনি, বাংলাদেশে আমাদের গানের এত শ্রোতা আছেন। এবারের সফরটা অনেক দিন মনে থাকবে।’

কিন্তু সম্প্রতি রুপম মাইলসকে আঘাত করে তার ভক্তদের মনেই আঘাত করেছেন। ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে সেই ফসিলসকে প্রত্যাখ্যান করছেন। ২০০৩ সালে শাফিন আহমেদ ও মাইলস কলকাতায় গেছেন কনসার্ট করতে। যে হোটেলে ছিলেন, সেখানে এসেছিলেন ফসিলসের সদস্যরা। দেখা করতে চান শাফিনের সাথে। কিন্তু তখন বেশ ব্যস্ত ছিলেন শাফিন। বেশকিছু কাজও ছিল। তারমধ্যে কয়েক ঘণ্টা চলে যায়। তারপরেও ফসিলসের রূপমেরা শাফিনের সাথে দেখা না করে যাবেন না। যেন তাদের প্রথম অ্যালবামটি শাফিনের হাতে না দিতে পারলে তাদের কাজের সার্থকতা নেই। তিন থেকে চার ঘণ্টা পরে শাফিন-হামিনদের হাতে তারা নিজেদের অ্যালবাম তুলে দেয়। অবশ্য সেই অ্যালবামের গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়।



মন্তব্য চালু নেই