‘অতিরিক্ত ভারতপ্রেম প্রদর্শন মঙ্গলজনক নয়’

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গুলশানের আর্টিসানে হামলার পরে একটি হিন্দি টিভি চ্যানেলে হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দেয়। একজন মন্ত্রী হয়ে নিজের দেশের ভাষা ব্যবহার না করে অন্য দেশের ভাষা ব্যবহার করা কতটা যৌক্তিক?

সারা বিশ্ব যেখানে কথা বলার জন্য নিজের মাতৃভাষার পর ইংরেজিকে প্রাধান্য দিচ্ছে, সেখানে একজন মন্ত্রী কিভাবে ভিনদেশের ভাষায় কথা বললেন?

আজ সকালে বাংলাদেশের বিখ্যাত পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকি নিজের ফেসবুক পেজে তথ্যমন্ত্রী হাসানুক হক ইনুকে যথার্থ কিছু প্রশ্ন করেছেন।

পাঠকদের উদ্দেশ্যে তা তুলে ধরা হল-

কোনো ভাষার প্রতি বিরাগ বা বিদ্বেষ আমার নাই। সে হিন্দী হউক বা উর্দু হউক। ইনু ভাইয়ের প্রতিও আমার ব্যক্তিগত বিরাগ নাই।

কিন্ত তাঁর হিন্দি সাক্ষাৎকার কিছু কথার দাবী রাখে। প্রথমত ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমরা যে কোনো ভাষা শিখতে এবং ব্যবহার করতে পারি।

কিন্তু আপনি যখন বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন মন্ত্রী হিসাবে তখন আপনি হয় রাষ্ট্রের ভাষা ব্যবহার করবেন, না হয় আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য স্বীকৃত ইংরেজি ব্যবহার করবেন। আপনি যখন হিন্দি ব্যবহার করেন তখন আপনি অনেক গুলো সমস্যা তৈরি করে ফেলেন। তার মধ্যে রাষ্ট্রের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির বাইরেও আপনি যেটা করেন সেটি হচ্ছে জাতির ভিতরে থাকা ফাটলটাকে আরেকটু উস্কে দেন।

আপনি যদি ভুটানে গিয়ে ভুটানের ভাষায় দুয়েক লাইন বলেন তাতে ওদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন হবে। কেউ মাইন্ড করবে না । কিন্তু রাষ্ট্রের মন্ত্রী হয়ে পুরো একটা ইন্টারভিউ হিন্দি বা উর্দুতে দেয়ার বিপদ হলো আপনি আমাদের রাজনৈতিক সংকটের আগুনে আরেকটু ঘি ঢেলে দিলেন। । এক বিশাল জনগোষ্ঠীর হাতে সন্দেহ আর অবিশ্বাসের অস্ত্র তুলে দিলেন । বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় ভারত এবং পাকিস্তানের ইস্যু আপনি বুঝতে পারেন না- এটা আমি ভাবতে চাই না । কারন আপনার ইন্টারভিউ জুড়ে পাকিস্তানের উপস্থিতি বলে দেয়- এই বাস্তবতা আপনি পুরাপুরি বুঝেন, হয়তো আমাদের চেয়ে একটু বেশিই বোঝেন । এখন যদি খালি এইটুকু বোঝেন যে অতিরিক্ত ভারতপ্রেম প্রদর্শন ভারত এবং বাংলাদেশ কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়, তাহলে আমরা একটু বাঁচি।



মন্তব্য চালু নেই