যে ৮টি বদঅভ্যাসের কারণে আপনার হতে পারে স্তন ক্যান্সার

জেলিনা জোলির স্তন অপসারনের কথাও কারো অজানা নয়। তাই স্তন ক্যান্সার মোটেই হালকাভাবে নেয়ার মতন কোন বিষয় নয়। এটি নির্ণয়ের ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো হয়তো আপনার জানা আছে। কিন্তু আপনি কি জানেন, আপনার দৈনন্দিন কিছু অভ্যাসের কারণে আপনিও রয়েছেন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে?

জেনে নিন সেরকম ৮ টি খারাপ অভ্যাসের কথা যার কারণে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে আপনার স্তনেও!

১। ভুল সাইজের বক্ষবন্ধনী ব্যবহারঃ

স্তনের আকার অনুযায়ী সঠিক মাপের ব্রা ব্যবহার করুন। কেননা নয়তো এটি আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকখানি। স্তনের আকারের চেয়ে বড় মাপের বক্ষবন্ধনী স্তনের টিস্যুগুলোকে ঠিকমত সাপোর্ট দিতে পারে না আবার অতিরিক্ত ছোট বা টাইট ব্রা স্তনের তরলবাহী লসিকাগুলো কেটে ফেলতে পারে।

২। বক্ষবন্ধনী সারাক্ষণ পরে থাকাঃ

সারাক্ষণ বক্ষবন্ধনী পরে থাকার কারণে ঘাম নির্গত হবার অসুবিধে, আর্দ্রতা জমে থাকা, সব মিলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ঘরে থাকার সময়টুকুতে বক্ষবন্ধনী ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন।

৩। লেবেল না দেখে ডিওডোরেন্ট কেনাঃ

আজকাল কর্মজীবী নারী হোক বা শিক্ষার্থী সারাদিনের বাইরে থাকা আর সেই সাথে ঘামের দূর্গন্ধ এড়াতে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করেন প্রায় সবাইই! এতে নিজের ফ্রেশ ভাবটা যেমন বজায় থাকে তেমনি ঘামের গন্ধের কারণে অন্য কারো সামনেও বিব্রত হতে হয় না। কিন্তু এই ডিওডোরেন্ট কেনার সময় খেয়াল রাখুন কী কী উপাদান আছে এতে। এলুমিনাম বেসড উপাদান থাকলে তা স্তন ক্যান্সারের ঝুকি বাড়ায়। ডিওডোরেন্ট যেহেতু আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করেন, তাই কোন কোম্পানির পণ্যটি ব্যবহার করবেন তা আগে একজন স্কিন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিন।

৪। কেমিকেলযুক্ত চুলের রঙ ব্যবহারঃ

চুল পেকে যাওয়া বা হাল ফ্যাশনের সাথে মানিয়ে নিতে চুলে নানা রঙের ব্যবহার, যেটিই হোক না কেন, দোকান থেকে সস্তার চুলের রঙ কিনে আনবেন না। এতে চুল তো পড়ে যেতে পারেই, সেই সাথে এতে ব্যবহৃত ক্ষতিকর কেমিকেলের কারণে হতে পারে স্তন ক্যান্সার। তাই ভালো কোম্পানির ভেষজ চুলের রঙ ব্যবহার করুন। আর মেহেদী ব্যবহার করলে তা একদিকে যেমন চুলের জন্যে ভালো আর সেই সাথে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।

৫। প্লাস্টিকের বক্সে সব সময় খাবার রাখাঃ

প্লাস্টিকের বক্সে খাবার রাখা এবং বিশেষত সেটিতেই ওভেনে গরম করা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। এর চেয়ে কাঁচের পাত্র ব্যবহার করুন। আর প্লাস্টিক ব্যবহার করতে চাইলে তা ফুড গ্রেড কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।

৬। এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহারঃ

ঘরের দূর্গন্ধ দূর করতে বা সুগন্ধিযুক্ত ঘর পেতে এয়ার ফ্রেশনারের ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। কিন্তু এতে থাকা প্যাথালেট নামক প্লাস্টিসাইজিং কেমিকেল, যা সুগন্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করে। এটির সাথে স্তন ক্যান্সারের সরাসরি সম্পর্ক আছে। এর চেয়ে ফুটন্ত পানিতে এক টুকরো দারুচিনি ফেলে দিন। এবার দেখুন, ঘরময় কি সুগন্ধই না ছড়াচ্ছে!

৭। কেমিকেলযুক্ত ক্লিনার ব্যবহারঃ

অদ্ভুত হলেও সত্যি যে, আপনার রান্নাঘরের সিঙ্ক বা কেবিনেট যে রঙিন তরল ক্লিনার দিয়ে আপনি পরিস্কার করছেন, তাতে থাকা কেমিকেল কেবল আপনার স্তন ক্যান্সারই নয় বরং অন্য ধরনের ক্যান্সার ও বিভিন্ন ধরনের ক্রনিক রোগ, যেমন মাইগ্রেন ও এলার্জিরও জন্ম দিতে পারে। তাই কেমিকেলযুক্ত এই ক্লিনার ব্যবহার না করে ভিনেগার বা বেকিং সোডা দিয়ে পরিস্কার করতে পারেন।

৮। ন্যাপথলিনের ব্যবহারঃ

আলমারির কাপড়চোপড় পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচাতে নেপথলিন তো আমরা ব্যবহার করেই থাকি। অনেকে আবার বাথরুমের দুর্গন্ধ এড়াতে বেসিনের সিঙ্কেও ফেলে রাখেন কয়েকটি। কিন্তু এটি পুরোটাই ক্ষতিকর কেমিকেল দিয়ে তৈরী, যা কেবল পোকামাকড়কে ১০০ মাইল দূরেই রাখে না, বরং আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুকিও বাড়ায় বহুগুণে। এর চেয়ে নিমপাতা শুকিয়ে কাগজে মুড়িয়ে রেখে দিন। একই উপকার পাবেন।

দৈনন্দিন ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন। দূরে থাকুন স্তন ক্যান্সার থেকে। সুস্থ থাকুন।



মন্তব্য চালু নেই