হেফাজত এখন নীরব কেন, প্রশ্ন আইজিপির

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ও গুলশানে জঙ্গি হামলার পরও কেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা নীরব সেই প্রশ্ন তুলেছেন।

হেফাজত নেতাদের উদ্দেশ করে পুলিশপ্রধান বলেছেন, ‘আপনারা নীরব কেন? জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আপনারা কেন সোচ্চার হচ্ছেন না?’

‘যদি আপনারা নীরব থাকেন তাহলে জঙ্গিবাদের প্রতি আপনাদের সমর্থন প্রমাণ করে’, বলেন আইজিপি।

ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহত দুই পুলিশ সদস্যের স্মরণে আজ শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে এক সভায় পুলিশপ্রধান এসব কথা বলেন।

জঙ্গিবাদকে জাতীয় সমস্যা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘জঙ্গিরা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার মতো অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। শোলাকিয়া ও গুলশানে হামলার ঘটনায় আটক জঙ্গিরা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছে।’

‘যারা জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত তারা ইসলামের শক্র, মানবতার শত্রু। এদের কবল থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে হবে।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাহফুজুল হক নূরুজ্জামান, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, জেলা পরিষদের প্রশাসক জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ ইমাম-ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আনোয়ার শাহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশান ২ নম্বর সেকশনের স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সেখানে সন্ত্রাসীরা দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জনকে হত্যা করে।

পরদিন ২ জুলাই সকালে জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। অভিযানে সাত সন্ত্রাসীর মধ্যে ছয়জন নিহত হয়।

জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টেলিজেন্স দাবি করে, এ হামলার ঘটনার দায় নিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলাসিক স্টেট (আইএস)। আইএসের বার্তা সংস্থা আমাকের বরাত দিয়ে সাইট এ হামলায় অংশগ্রহণকারী পাঁচজনের ছবিও প্রকাশ করে।

গুলশানের ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদগাহ মাঠের অদূরে পুলিশের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির সময় ওই এলাকায় ঝর্ণা রানী ভৌমিক নামে এক গৃহবধূর নিহত হন। এ দিন ঘটনাস্থলে সন্দেহভাজন এক জঙ্গিও নিহত হয়।

আইজিপি আজ সকালে কিশোরগঞ্জ পৌঁছে হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে দুপুরে তিনি নিহত গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিকের বাসভবনে যান এবং তাঁর স্বজনদের সান্ত্বনা দেন।



মন্তব্য চালু নেই