জঙ্গিরা জন্মদিনের স্বাদ চিরদিনের জন্য নষ্ট করে দিলো

জনপ্রিয় অভিনেত্রীর জন্মদিন ছিলো গেল শুক্রবার, ১ জুলাই। প্রতিবারের ন্যায় এবারেও তিনি প্রস্তুতি নিয়েছিলেন জন্মদিনকে ঘিরে। কিন্তু গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিকে জঙ্গি হামলায় সব ভেস্তে গেল। শোকাতুর প্রাণে আর জন্মদিনের সুখের মোমবাতি জ্বালা হলো না জয়ার!

শুধু কী তাই। জয়া আহসান বললেন, ‘জঙ্গিরা আমার জন্মদিনের স্বাদটা চিরদিনের জন্য নষ্ট করে দিল।’

জয়া তখন ছিলেন নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘রাজকাহিনি’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার নিতে সেখানে হাজির হয়েছিলেন। মঞ্চেও ওঠেছিলেন। কিন্তু তার আগেই গুলশানের খবরটি পেয়ে বেদনায় মুষড়ে গিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।

সোমবার (৪ জুলাই) ভারতের আনন্দবাজারে ছোট্ট এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন জয়া আহসান। তিনি বলেন, ‘নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে। গমগম করছে আমার দেশের জাতীয় সংগীত। আমি সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলাচ্ছি। তখনো অনেকেই সেভাবে জানেন না, ঢাকায় কী চলছে। আমাকে দেখেও বাইরে থেকে হয়তো কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু আমার ভেতরটা ফালা-ফালা হয়ে যাচ্ছিলো। আমি যে ততক্ষণে খবর পেয়েছি, গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে ঢুকে জঙ্গিরা বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে রেখেছে!

নর্থ অ্যাটলান্টিক বেঙ্গলি কনফারেন্স-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার। মার্কিন সময় সন্ধে ছ’টা-সাড়ে ছ’টা হবে। তার মানে ভারত-বাংলাদেশে ততক্ষণে শনিবার সকাল হবো হবো। আমার শরীরটা কেমন অসাড় মনে হচ্ছে। সবুজ পতাকার উদিত লাল সূর্যের মধ্যে কেমন যেন কালো-কালো দাগ দেখছি। গান হচ্ছে, ‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়নজলে ভাসি’। আর থাকতে পারলাম না। আমারও দু’চোখ বেয়ে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা উপচে পড়ল।’

জয়া আরো বলেন, ‘কাজের জন্য এখন কলকাতায় আছি। ঢাকায় ফিরবো শিগগিরই। মনে পড়ে, গুলশানের ওই ক্যাফেতে আমি কতবার গিয়েছি, কত সুন্দর সময় কাটিয়েছি! ওই এলকাতেই আমার ভাই থাকেন।’

জঙ্গি হামলায় নিহত ইশরাত আখন্দকে নিয়ে জয়া বলেন, ‘আগে গুলশানে হামলার খবরটি পাই। কিছুক্ষণ পর ইশরাত আপার খবরটা পেলাম। ইশরাত আখন্দকে ওরা মেরে ফেলেছে। আমরা একই জায়গায় আঁকা শিখেছি ছোটবেলায়। একসঙ্গে হাতে তুলি ধরতে, রং দিতে শিখেছি। কী আশ্চর্য প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন। আর ওর সঙ্গে আর দেখা হবে না? ভাবতে পারছি না। ঈদের সকালে এখান থেকে সোজা ঢাকায় ফিরব বলে কত আগে থেকে সব ঠিক করে রেখেছিলাম। আমার ভালবাসার দেশ, জন্মভূমির ক্ষত না-সারলে আর কি ঈদের সেই খুশি ফিরে পাব!’



মন্তব্য চালু নেই