কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ঝুঁপড়ি গুলো অপরাধের স্বর্গরাজ্য
মোঃ আমান উল্লাহ, কক্সবাজার থেকে : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অতি ব্যস্ততম ও পর্যটক সমাগম এলাকা সুগন্ধা পয়েন্টে’র অবৈধ ঝিনুক মার্কেট (ঝুঁপড়ি দোকান) অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ওই ঝুঁপড়ি দোকানগুলোর আড়ালে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা অপরাধ। কথিত সভাপতি জালাল ও ফরিদের নেতৃত্বে প্রতি মাসে ২০ লাখের বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে এখানে।
একই সাথে ইয়াবা ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কিছু নেই সেখানে করছে না এই জালাল। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিষ্ট পুলিশের নামেও এই জালাল-ফরিদ চাঁদা আদায় করছে ।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে একই এলাকার শহরের নতুন বাহারছড়া এলাকার বীচ বাইক ব্যবসায়ী আনোয়ার ইসলাম হিরুর কাছে চাঁদার জন্য গেলে চাঁদা না দেওয়ায় তার এক মাত্র গাড়ি রাখার ঘরটি নারকীয় কায়দায় ভেঙ্গে দেয় ও ব্যাপক তান্ডব চালায় চাঁদাবাজ চক্রের প্রধান জালাল, তার সহযোগী ফরিদ ও অন্য সাঙ্গ পাঙ্গরা। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ টাকা। পরে খবর পেয়ে ট্যুরিষ্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি সার্কেল) রায়হান কাজেমী ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন এবং ক্ষয়ক্ষতি স্বচক্ষে দেখেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পুরো সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট জুড়ে শুধু চাঁদাবাজি নয়, ইয়াবা ও হেরোইন ব্যবসায়ী, মদ বিক্রতা, ছিনতাইকারী ও সমাজের গর্হিত অপরাধের সাথে জড়িত চিহ্নিত অপারাধিদের নিরাপত্তা দেয় জালাল চক্র। এমনকি সে নিজেই এই অপরাধ গুলো বেপরোয়াভাবে করে যাচ্ছে। নিজেকে যে ঝুঁপড়ি দোকানের (অবৈধ ঝিনুক মার্কেট) সভাপতি দাবি করছে সেটি পুরোপুরি অবৈধ। জালাল রীতিমত একটি অপরাধী সিন্ডিকেট তৈরি করে নিয়মিত সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ পুরো সৈকত এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ পর্যটকদের নানা হয়রানি করে চলছে।
অবৈধ ঝিনুক মার্কেটটি সমুদ্র সৈকতের ব্যস্ততম সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকার সৌন্দর্য হানি ও পরিবেশ দুষিত করে চলছে। ঝুঁপড়ি দোকান গুলো যেমনিভাবে সৈকতের সৌন্দর্য হানি করছে তেমনিভাবে কথিত ব্যবসার আড়ালে রাতের আঁধারে চলছে নানা অপকর্ম। এই অপকর্মের মূলহোতা জালাল দাবী করছে সে ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনকে টাকা দিয়ে এসব করছে।
সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট ঝুঁপড়ি দোকানগুলোতে অবৈধ সংযোগে প্রতিমাসে লাখ টাকার বিদ্যুৎও চুরি করছে এই জালাল।
অভিযোগ রয়েছে ওই সব ঝুঁপড়ি দোকানগুলোতে রোহিঙ্গাসহ অপরাধীদের পুর্ণাবসন করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা কর্মচারীরা দিনে দোকানী সাজলেও সন্ধ্যার পরপরই এদের রূপ পাল্টে যায়। এরা ভয়ংকর ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত রয়েছে এবং এসব অপকর্মের নেতৃত্বদানকারী জালাল-ফরিদ বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া সৈকত এলাকায় কেউ ব্যবসা করলে তাকে নিয়মিত চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হবে বলে প্রকাশ্যে হুংকার ছাড়েন।
স্থানীয় সুত্র জানায়, মাত্র কিছু দিন আগে মাদকাসক্ত এই জালাল এখন নেতা সেজে এলাকার নীরবে বড় চাঁদাবাজ হিসেবে চরম বেপরোয়া হয়ে উঠছে। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। উক্ত নারকীয় ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িগণ একাধিক মামলা দায়ের করছে বলে জানা যায়।
মন্তব্য চালু নেই