প্রেমের ফাঁদ পেতে লুঠ! বিয়ে পাগল ছেলেদেরই টার্গেট করে এই তিন নারী!
একবার দেখেই নাকি প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এক কাপড়ে বাড়ির অমতে গিয়ে বিয়ে করতেও রাজি। আর যদি তাঁর সঙ্গে বিয়ে না হয়? তাহলে নাকি জীবনটাকেই বলি দিয়ে দেবেন! ৩৭ বছরের এক মহিলার এই প্রস্তাব ফেলতে পারেননি সদ্য স্ত্রীকে হারানো বছর পঞ্চাশের পারসোটাম। ব্যস, ফাঁদে পা দিয়েই হাড়ে হাড়ে টের পেলেন প্রেমের জ্বালা! প্রেমের চক্করেই মহিলা গ্যাং-এর কবলে পড়ে লুঠ হলেন তিনি। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতে। ওই ব্যক্তির অভিযোগ পেয়ে গ্রেফতার হয়েছে তিন জনের ওই মহিলা গ্যাং। গ্রেফতার হয়েছে এক যুবকও।
৫০ বছরের পারসোটাম রাজকোটের বাসিন্দা। ছ’মাস আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলেন। পাঁচ কন্যা এবং দুই ছেলে তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে দেবেন বলে স্থির করেন। শুরু হয় পাত্রীর খোঁজখবর। যোগাযোগ হয় এক ম্যাচমেকারের সঙ্গে। শিলা নামে ওই ম্যাচমেকার তাঁকে পাত্রী দেখতে আমদাবাদে আসতে বলেন। সেখানে তিন পাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ হয় পারসোটামের। পছন্দসই না হওয়ায় আরও কয়েক জন পাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন শিলা। এর পর পারসোটাম রাজকোটে ফিরে আসেন। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। ঘটনার সূত্রপাত এর দিন দুয়েক পর।
মঞ্জুলা নামে এক মহিলা তাঁকে ফোন করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। মঞ্জুলা জানান, তিনি তাঁকে এতটাই ভালবেসে ফেলেছেন যে বাড়ির বিরুদ্ধে গিয়েই বিয়ে করতে চান। আর পারসোটাম তাতে রাজি না হলে সুইসাইড করবেন। যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া মহিলাদের মধ্যে একজন ছিলেন এই মঞ্জুলা। মঞ্জুলার কথা শুনে ভয় পেয়ে যান পারসোটাম। তাঁর কথা মতোই কাজ করতে শুরু করেন। আমদাবাদে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চলে যান। সেখান থেকে দু’জনে যান মাউন্ট আবুর একটি হোটেলে। প্রস্তাব মেনে হোটেলে যাওয়াটাই কাল হয় পারসোটামের।
হোটেলের ঘরে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে প্রথমে তাঁকে অচেতন করে দেন মঞ্জুলা। তারপর কাজে নামে মহিলা গ্যাং। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই তাঁর কাছে থাকা ১২ হাজার টাকা, মূল্যবান গয়না লুঠ করে চম্পট দেন তাঁরা। মঞ্জুলার সঙ্গে বেশ কিছু আপত্তিকর ছবিও তোলা হয় তাঁর। ঘটনার পরে অসহায় পারসোটাম বাড়ি ফিরে আসেন। অনেক চেষ্টা করেও মঞ্জুলার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি।
এর কয়েক দিন পরে অজানা নম্বর থেকে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। এক পুরুষ কন্ঠ তাঁকে জানান যে, তাঁর কাছে হোটেলের ঘরে এক মহিলার সঙ্গে পারসোটামের বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি আছে। ২৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সেই ছবি তাঁকে ফিরিয়ে দেবেন তিনি। না দিলে ফাঁস করে দেবেন। ভয় পেয়ে যান পারসোটাম। ৫ লক্ষ টাকায় রফা হয় বিষয়টি। বাড়ি ফেরার পর থেকেই পারসোটামের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা সন্দেহ জাগিয়েছিল পরিবারের মধ্যে।
তাঁকে বিষয়টা জিঞ্জাসা করায় পারসোটাম ভেঙে পড়ে পুরোটাই জানান। এর পরেই তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন। পুলিশ মহিলা গ্যাঙের তিন সদস্য ৩৭ বছরের মঞ্জুলা, ৪৫ বছরের দেইসি মাকবান এবং ৫৪ বছরের শিলা ক্রিশ্চিয়ানকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হয়েছেন ওই গ্যাং-এ জড়িত ২৫ বছরের যুবক মাইকেলও। জেরায় পুলিশ জেনেছে, তাঁদের টার্গেট মূলত বিয়ে পাগল লোকজনেরাই। এর আগেও একইভাবে কয়েকজনকে ফাঁসিয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই