ধূমপান ছাড়তে চান? জেনে নিন কার্যকরী কিছু কৌশল

মে মাসের ৩১ তারিখকে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দিনে ধূমপানের বিরুদ্ধে সচেতনতা এবং ধূমপান ত্যাগে উৎসাহ প্রদান করা হয়। আপনি চেইন স্মোকার হন বা টিন স্মোকার, হুট করে ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করাটা আপনার জন্য কষ্টসাধ্য। ধূমপানের অভ্যাস রাতারাতি ত্যাগ করা সম্ভব নয়। এরজন্য অনেকগুলো উপায় রয়েছে। তবে সব উপায় সবার জন্য কার্যকর নয়। আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনার উপায়টি। যেকোন বদ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য বেশি প্রয়োজন হয় ইচ্ছার। আপনার ইচ্ছাশক্তি এবং কিছু কৌশল পারে এই অভ্যাস ত্যাগ করতে।

১। দৃঢ় প্রতিজ্ঞা

প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করার। ধূমপান ত্যাগ করার জন্য প্রয়োজন দৃঢ় প্রতিজ্ঞার। আপনি যদি নিজেকে ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগের জন্য তৈরি করতে পারেন তবেই পারবেন এই অভ্যাস ত্যাগ করতে।

২। একটি তালিকা তৈরি করুন

আপনি ধূমপান কেন পছন্দ করেন? ধূমপানের কোন দিকটা আপনার খারাপ লাগে? এই বিষয়গুলো নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করে ফেলুন। যার একপাশে ধূমপানের সব ইতিবাচক দিক আরেকপাশে নেতিবাচক দিক লেখা থাকবে। Daniel Z. Lieberman, M.D., director of the Clinical Psychiatric Research Center at George Washington University Medical Center in Washington, D.C মতে আপনি যখন দেখবেন ইতিবাচক দিক নেতিবাচক দিকের থেকে কম হয়ে গেছে তখন আপনি ধূমপানের প্রতি কিছুটা হলেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। যা আপনাকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করবে।

৩। একটি তারিখ নির্দিষ্ট করুন

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি তারিখ নির্দিষ্ট করুন, যেদিন থেকে আপনি ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করবেন। এই দুই সপ্তাহের মধ্যে আপনি নিজের মনকে ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রস্তুত করে নিন। যদি আপনি কর্মক্ষেত্রে বেশি ধূমপান করেন। তবে আপনি আপনার ছুটির দিনটিকে ধূমপান ছাড়ার জন্য নির্বাচন করুন। কিংবা আজ থেকে চেষ্টা করতে পারেন ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগের।

৪। সিগারেট কম কিনুন

এক প্যাকেট সিগারেট কেনার পরিবর্তে একটি বা দুটি সিগারেট কিনুন। যখন আপনার সিগারেট খেতে ইচ্ছা করবে সবসময় পকেটে পাবেন না। এটি সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস কমিয়ে দেবে যা ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে সাহায্য করবে।

৫। বাসা, গাড়ি, অফিস সব স্থান থেকে সিগারেটের প্যাকেট সরিয়ে রাখুন

ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগে এটি আপনাকে সাহায্য করবে। বাসা, গাড়ি বা অফিস যেসব স্থানে সিগারেট রাখতেন সেখান থেকে সিগারেট, লাইটার, স্ট্রে সরিয়ে ফেলুন। এমনকি যেসব কাপড় থেকে সিগারেটের গন্ধ আসে সেগুলো ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। গাড়ি, কার্পেট, ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। সিগারেটের গন্ধ আসতে পারে এমন কিছু ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।

৬। পরিবারের সাহায্য নিন

আপনার বন্ধু, পরিবার বা কাছের মানুষটিকে জানান এবং বলুন ধূমপান ছাড়তে আপনার তাদের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। সবচেয়ে ভাল হয় এমন একজন বন্ধু খুঁজে বের করুন যে নিজেও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে চাচ্ছে।

৭। চিকিৎসকের সাহায্য নিন

সিগারেট ছাড়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোন ধরণের থেরাপি বা মেডিটেশন ছাড়া হুট করে সিগারেট ছাড়া উচিত নয়। সিগারেটের নিকোটিনের ওপর আপনার শরীর অনেক বেশি নির্ভর হয়ে পড়ে। তখন শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। তাই সিগারেটের বিকল্প কিছু চিন্তা করা উচিত।

বলা হয় মানুষ অভ্যাসের দাস। কিন্তু ইচ্ছাশক্তির কাছে সব অভ্যাসই হার মেনে যায়। ধূমপান ত্যাগের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। মনে রাখবেন ধূমপান শুধু আপনার নিজের ক্ষতি করছে না, আপনার পাশের মানুষটিও এটি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই