মা ও ছেলের স্নেহ ভালবাসা……..
মা প্রত্যেক মানুষের খুব প্রিয়, আস্থার, ভালোবাসার একটি ডাক। প্রতিটি শিশুর স্বাভাবিক মানুষিক বিকাশের জন্য মায়ের ভালোবাসা, স্নেহের প্রয়োজনীতা অপরিহার্য।মা হচ্ছেন সেই যিনি স্বার্থপর পৃথিবীর বাইরে এক নি:স্বার্থ, নির্মল, অনাবিল আনন্দের, সুখের ছবি একে দেন প্রতিটি সন্তানের চোখে। দু:ক্ষজনক ভাবে অনেক শিশুই বঞ্চিত হোন এই মমতা থেকে, স্নেহের পরশ থেকে।সব সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা একি রকম নয় আবার সব সন্তান ও মাকে একই রকম ভালোবাসেন না, সে বাস্তবতাও সত্য।
আমার মায়ের প্রতি আমার দুর্বলতা ছিল অত্যন্ত বেশী। এখন ও মনে পড়ে আমি যে মায়ের পেছনে পেছনে সব সময় ঘুর ঘুর করতাম, আর মা যেন কোনদিন মারা না যান, সেই প্রার্থনায় অধিকাংশ রাতে ঈশ্বরের কাছে চোখের জল ফেলতাম।
কিন্তু মায়ের সময়ের ছিল প্রচন্ড অভাব।তিন বেলা শ্বশুর শাশুড়ি, স্বামী সন্তানের রান্না করে মা ব্যস্ত হয়ে পড়তেন প্রতিবেশীদের উপকারে, চার্চের কাজে।বড় ছেলের প্রতি অধিক স্নেহ থাকায় বাকি সন্তানরা এমনিতেই বেড়ে উঠছিলেন।তবুও কাউকেই কোনদিন কিছু করতে হয়নি।১৩ বছর বয়সে যে মায়ের ভুমিকা শুরু হয়েছিল স্ত্রী এবং মেয়ের মধ্য দিয়ে, সেই ভুমিকা পরিবর্ধিত হয়েছিল বৌমার, বৌদির,মায়ের, বুয়ার, সমাজ কর্মীর, ভুমিকা দিয়ে। ছোট বেলায় বুঝতে না পারলেও বড় হয়ে বুঝতে শিখেছি, এই সব ভুমিকার মাঝেই আমার মায়ের পড়াশুনা শেখার খুব ইচ্ছা ছিল।আর ইচ্ছা ছিল তিনি চাকরি করবেন। এই দুটো চাওয়া ছাড়াও মায়ের নিজেরও কিছু চাওয়া পাওয়া সুখের বিষয় ছিল।যার দিকে লক্ষ্য রাখার মত না ছিল কেউ পরিবারে বা সমাজে। এভাবেই হয়তো অধিকাংশ মায়েদের ইচ্ছে গুলো, ভালোলাগা, ভালোবাস গুলো মরে যায় অলক্ষ্যে।
আমার মায়ের প্রান ছিল তার বড় ছেলের মধ্যে লুকানো। বড় ছেলে সেই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে না পারলেও মা পেয়েছিলেন এক পালিত ছেলে। হটাত পরিচয়ে সেই সন্তান দুলাল মায়ের কষ্টের অনেকটাই ভুলিয়ে দিয়েছিলেন তার ভালোবাসায়।
ছেলেটি ফরিদপুর থেকে প্রতি সপ্তাহে মায়ের কাছে ছূটে আসতো।তার ভালোবাসার বহি:প্রকাশ দেখে মনে হত, আমার মাকে ছাড়া তিনি কিছুই বুঝতেন না।
এক সময় তিনিও জীবিকা আর দুরুত্বের তাগিতে হারিয়ে গেলেন। চড়াই উতরাই পেরিয়ে মায়ের ভাগ্যের লিখন হয়ে রইলেন মায়ের প্রিয় বড় সন্তান যার সাথে তিনি সারাজীবন থাকতে চাইতেন। প্রিয় মানুষের সাথে বাস করা সব সময় সুখের নয় এটা এক সাথে থাকলে মাঝে মাঝে মনে হলেও, মা আমার এখন নাতি, নাতনি, ছেলে, ছেলের বৌ নিয়ে অনেক সুখে আছেন। মাঝের জীবন যেমনই গেল, শেষের জীবন দেখে অনেক ভাল লাগে।
সকল মায়ের জীবন আনন্দে কাটুক।মায়েরা ভালো থাকুন।
মন্তব্য চালু নেই