যৌন হয়রানি : এবার শিক্ষককে গণধোলাই দিল ছাত্রীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের দ্বারা ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগে বয়ে যাচ্ছে নানান সমালোচনা। এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গা শহরের ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আহাদ আলীর বিরুদ্ধেও উঠেছে এমন অভিযোগ।
তবে এবার অভিযোগে ক্ষান্ত থাকেনি ছাত্রীরা। ওই শিক্ষককে স্কুল মাঠেই ধরে উত্তম-মাধ্যম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় এই বিক্ষোভ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিচার প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে ছুটে যান। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছে ছাত্রীরা।
এদিকে, বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা সংগঠিত হয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক আহাদ আলীকে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ছুফি উল্লাহ ঘটনাস্থলে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিদ্যালয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং ছুটি দেয়া হয়। বেলা ১টায় পুলিশ প্রহরায় শিক্ষককে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত ৩০ এপ্রিল শুক্রবার শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়। ওই শিক্ষার্থী বাড়ি গিয়ে অভিভাবক ও পরদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানান। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে কয়েকদফা বৈঠক হলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় শেষে ছাত্রীরা আন্দোলনে নামে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের ঘটনার শিকার ওই ছাত্রী লিখিত কোনো অভিযোগ না দেয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তবে বিষয়টি উভয়পক্ষকে নিয়ে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা বলেন, ‘বিষয়টি জানার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযুক্ত শিক্ষক আহাদ আলী দাবি করেন, ‘যৌন হয়রানি অভিযোগ সঠিক নয়। স্কুলছাত্রী তাকে বিয়ে করতে প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ষড়যন্ত্র করছে।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোজাম্মেল হক জানান, বিদ্যালয়ে বিক্ষোভের কথা শুনে সেখানে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। শিক্ষককে নিরাপত্তা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই