‘ইসি সংসদীয় রীতিনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের নির্বাচনী প্রতীক ‘মশাল’ হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার নেতৃত্বাধীন অংশের হাতে দেয়ার সিদ্ধান্তকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি’ বলে দাবি করেছে শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন অপর অংশ।
শুক্রবার এ অংশের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত, অসময়োচিত এবং দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক নয়।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে অপর অংশের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সিদ্ধান্ত নিতে আরও তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন হতে পারে বলে শুনানিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোন পক্ষ মশাল পাবে সে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের। এমতাবস্থায়, নির্বাচন কমিশনের আকস্মিক এ সিদ্ধান্ত জাসদকে বিভক্ত করাকেই প্রকারান্তরে এগিয়ে নিয়ে গেছে, যা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না।
শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান বলছেন, ১২ মার্চের কাউন্সিলে ‘গঠনতন্ত্র ও নির্বাচনী রীতি-নীতি পরিপন্থি’ ঘটনার বিষয়ে তাদের অভিযোগগুলো আমলে না নিয়েই ইসি তাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী ইনু নেতৃত্বাধীন অংশকে মশাল প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘রহস্যজনক’ আখ্যায়িত করে বিবৃবিতে বলা হয়েছে, গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে যারা ওই প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনজন এমপি আম্বিয়া-প্রধান নেতৃত্বাধীন জাসদের সঙ্গে রয়েছেন। এরপরও ইসি তাদের দাবি ‘উপেক্ষা’ করেছে। যারা সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও সংসদ নির্বাচনে মশাল প্রতীক ব্যবহার করেননি, তাদের পক্ষে রায় দিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট, ন্যায়বিচার পরিপন্থি এবং সংসদীয় রীতিনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
গত ১২ মার্চ জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে দু’ভাগ হয় জাসদ। পরে হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতারের কমিটির পাশাপাশি দলটির কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল, শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধানের আলাদা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
দুই পক্ষই নিজেদের ‘মূল জাসদ’ দাবি করে দলীয় প্রতীক মশালের অধিকার নিয়ে ইসির দ্বারস্থ হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল আলাদাভাবে দুই পক্ষের শুনানি করে ইসি।
শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ইনু-শিরীনের জাসদকেই ‘মূল ধারা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে দলের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ‘মশাল’ তাদের হাতেই থাকে।
প্রসঙ্গত, ইসির সিদ্ধান্ত পক্ষে পাওয়া ইনু ও শিরীন দু’জনই গত নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে।
এসব বিষয় বিবেচনা করে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশনকে আবারও ‘ভালোভাবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে আম্বিয়া-প্রধান অংশের বিবৃতিতে।
মন্তব্য চালু নেই