লিফলেটের মাধ্যমে ৮ জনকে হত্যার হুমকি!
সুজন দাস, চাঁদপুর: হাজীগঞ্জের হিন্দুধর্মালস্বলীদের নাম উল্লেখ করে লিফলেটে মাধ্যমে ৮ জনকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। গতকাল সকালে কম্পিউটার কম্পোজ করা ঐ লিফলেটি কে বা কারা ছড়িয়েছে তা লিফলেটে উল্লেখ করা হয় নাই। ৭টি হিন্দু বাড়িতে রাতের আধাঁরে একই ধরনের লিফলেট পাওয়া যাওয়ার কারনে হিন্দু পরিবার গুলো অজানা আতঙ্কে ভূগছে। লিফলেটটি একেবারে যে হাওয়ায় ভেসে এসেছে তা ঐ পরিবারগুলো মানতে রাজী না। ভূক্তভোগী পরিবারগুলো নিশ্চিত করে বলেন তাদের পূর্ব পরিচিত একটি পরিবারের এ ঘটনা করেছে । ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় উপজেলার ৯নং গর্ন্ধব্যপুর ইউনিয়নের সর্বতারা গ্রামের হিন্দু অধ্যশতাধিক এলাকায়। এ বিষয়ে ভূক্তভোগীদের পক্ষ হাজীগঞ্জ থানায় গতকাল রাতে ডায়েরী করা হয়।
লিফলেটের লিখাটি হুবহু এরকম ‘‘দুলাল তালুকদার, কিলটন, বাবুল চক্রবর্তী, সহদেব, দিপক ও নয়ন, নিমাই পন্ডিত, নিবাস তোমাদেরকে অনুরোধ করিতেছি যে তোমরা দয়া করে আমাদের বউমাকে পিরতদেও এবং আমাদের নামে মামলা গুলো উঠিয়ে নেও ভাল হবে। তানাহলে তোমাদের সকলের লাশ পাওয়া যাবে,মাথা থাকবে একজায়গায়, হাত থাকবে একজায়গায়, বডি থাকবে আরেক জাগায়। এবং এই কথা কাউকে যদি কাউকে জানাও ভাল হবেনা বলে দিলাম, মৃত্যু অবদারিত”
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক ও একই ঘটনায় ভূক্তভোগীদের একজন দুলাল তালুকদার ওরফে দিজেন্দ্র তালুকদার বলেন, আমার অনার্স পড়ুয়া মেয়েকে জোর করে ঢাকা নিয়ে আটকে রেখে বিয়ে হয়েছে বলে জানায় আমাদের এলাকার প্রচার করে আলীর ছেলে আমজাদ হোসেনসহ পরিবারবর্গ। এ ঘটনায় আমরা আইনের আশ্রয়ে গেলে আমজাদসহ অন্য আসামীরা জেলে যায়। আর তারই সূত্র ধরে লিফলেট বিতরন করা হয়েছে বলে আমরা বিশ^াস করি। তিনি আরো জানান, গত শুক্রবার দিনের বেলা আলীর আরেক ছেলে ইমান হোসেন রামগঞ্জ থেকে এলাকায় এসে অনেকের সাথে বিভিন্ন বাজে কথা বলেছে বলে আমরা শুনেছি এবং অনেক রাত পর্যন্ত তাকে অনেকে তাকে রাস্তয় দেখেছে। কিন্তু আজ তাকে ও পরিবারের কাউকে দেখা যায় না।
স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার ভোর বেলা যে যার ভাবে ঘুম থেকে উঠে দেখেন কারো বাড়ির উঠানে, কারো বসত ঘরের সামনে কিংবা কারো একেবারে ঘরের ভিতর দরজার সামনে ছোট একটি লিফলেট পড়ে থাকতে দেখা যায়। লিফলেটে ভীবর্ষ ভাবে হত্যা করার হুমকি দেয়া হয় আর তা পড়ে যে যার ভাবে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে লিফলেটের ঘটনাটি জানাজানির পরে দেখা যায় একই এলাকার দুলাল তালুকদার বাড়ি, দীপক হাওলাদার বাড়ি, ঠাকুর বাড়ি, ডাক্তার বাড়ি, সহদেব ওরফে সিদ্ধার বাড়ি, নিমাই পন্ডিত বাড়ি, নয়ন বিশ^ানের দোকানের বিভিন্নস্থানে একই ধরনের লিফলেট পাওয়া যায়।
লিফলেটের বিষয়ে একই সুরে কথা বললেন, বিধান চক্রবর্তী, নয়ন বিশ^াস, সুমন বিশ^াস, আরতী রানীসহ অন্যরা। এরা বলেন সকালে ঘুম থেকে উঠেই লিফলেটটি পাই। আর এতে যা লিখা রয়েছে তা পড়ে সবাই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ি।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক সত্যব্রত ভদ্র মিঠুন বলেন, এই লিফলেটে সর্বতারা গ্রামের হিন্দুরা আতঙ্কগ্রস্থ না আমরা পুরো উপজেলা হিন্দুরা আতঙ্কগ্রস্থ। পূর্বের ঘটনার মতো আমরা এই লিফলেটের গডফাদার কারা তা প্রশাসন বের করে আইনের আওতায় আনবে এটা আমাদের প্রত্যাশা।
হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আঃ রাজ্জাক বলেন, লিফলেট পাওয়ার ঘটনায় আমি ঐ এলাকায় পরিদর্শন করেছি।
লিফলেট পাওয়ার বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, তারা সন্ধ্যার দিকে থানায় আসে বলে জানিয়েছে। অপর এক প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আইনের সহায়তা চাওয়া আমরা পূর্নঙ্গ সহযোগিতা করবো।
মন্তব্য চালু নেই