‘বাজেটে দেশীয় শিল্প রক্ষায় জোর দেওয়া হবে’
আগামী ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় শিল্প স্বার্থরক্ষার ওপর জোর দেওয়া হবে। একইসঙ্গে কর রেয়াতের সুবিধা প্রত্যাহার করা হতে পারে।
তবে সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সচিবদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনাকালে এ কথা বলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ইআরডি সচিব মেজবাহ উদ্দিনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি বড় হচ্ছে। প্রতি অর্থবছরই বাজেটের আকার বাড়ছে। আগামী ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেট ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। তবে বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের শেষ বাজেট ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আগামী বাজেটে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সচিবদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাজেট বড় হচ্ছে এর সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নের হার বাড়াতে মন্ত্রণালয়গুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে বাজেট বাস্তবায়নের হার নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রশ্ন দূর করে কীভাবে বাস্তবায়ন বাড়ানো যায় সে দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, খুব শিগগির জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। মুদ্রা বিনিময় হার কাঙ্খিত পর্যায়ে রাখা হবে। দেশে এখন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মুল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এটা যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যেতে পারে সেদিকেও নজর রাখা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের শুল্ক আদায়ের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এটাকে বাড়াতে হবে। শুল্ককর পরিশোধে যাতে সাধারণ মানুষ উৎসাহী হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে হবে। সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে জ্বালানি খাতে ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধে সবচেয়ে বেশি অনীহা দেখা যায়। আগামী অর্থবছরে এ প্রবণতা দূর করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাট-ট্যাক্স সময়মত পরিশোধ করতে হবে।
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে। আশা করছি আইনটি কার্যকর হলে ভ্যাট আদায়ে অনেক অগ্রগতি হবে। করদাতারা যাতে কর পরিশোধে আগ্রহী হন সে বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে।
এ বিষয়ে এনবিআর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এরইমধ্যে আয়কর পরিশোধ ব্যবস্থা সহজ করা হয়েছে। এটি আরো সহজ করা হবে। এছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটিও অর্জন করা সম্ভব হবে।
নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, দেশে নারীর ক্ষমতায়ন অনেক বেড়েছে। এখন থেকে নারী ও শিশুদের আলাদাভাবে না দেখে বরং উন্নয়নের মূলস্রোতে নিয়ে আসা উচিত। টেকসই ব্যবস্থা নারী ও শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারে। এ বিষয়ে সমাজের সবার সমান ভূমিকা রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান সরকারের অর্জন উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। আর এ কারণে আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছি আমরা। তবে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় তা সঠিকভাবে ব্যয় করা সম্ভব হলে এ খাত আরো উন্নয়ন করা সম্ভব। বিশেষ করে দেশীয় অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হলেও নানা জটিলতায় বিদেশি সহায়তা সময়মত ব্যয় করা সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ সময় অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যখাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমাদের প্রায় ১৩ হাজার ৩০০টি কমিউিনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখছে। আর এমডিজি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কমিউিনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে।
মন্তব্য চালু নেই