গর্ভবতী নারীর জন্য অসংখ্য সওয়াব
নারীর গর্ভকালীন সময়ের কষ্ট আল্লাহর দরবারে অনেক মর্যাদা ও সওয়াবের কারণ হয়। দীর্ঘ ১০ মাস ১০ দিন প্রতিটি দিনে এবং প্রতিটি রাতে তার জন্য রয়েছে মহামহিম পালনকর্তার পক্ষ থেকে মর্যাদাপূর্ণ বিনিময়। উত্তম প্রতিদান। বিখ্যাত মহিলা সাহাবি হজরত সুলামা (রাজি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) তাকে বলেছেন— তোমাদের কেউ কি এতে খুশি নয় যে, সে যখন স্বামী কর্তৃক গর্ভবতী হয় এবং স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্টও থাকে তখন (এই গর্ভকালীন) সে আল্লাহর পথে সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারারাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পাবে? তার যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন শীতলকারী কী কী নিয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার পরিবর্তে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এ সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (অসুখ ইত্যাদির কারণে বিরক্ত করে মাকে ঘুমুতে না দেয়) তাহলে সে আল্লাহর পথে নিখুঁত সত্তরটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব পাবে (মেশকাত শরিফ, কানযুল উম্মাল)। প্রিয় পাঠক! গর্ভবতী নারীর কষ্টের কারণে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে কী অপূর্ব সওয়াব! অভাবনীয় পুরস্কার! বাবার চেয়ে মায়ের মর্যাদা বেশি হওয়ার কারণ এটাই। প্রিয় নবী (সা.)-এর কাছে একবার এক সাহাবি এসে বললেন, আমি কার সেবা করব? তিনি বললেন, মায়ের। আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কার? প্রিয় নবী আবারও বললেন, মায়ের। আবার সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কার? রসুল (সা.) এবারও মায়ের সেবার আদেশ দিলেন। চতুর্থবার যখন সাহাবি আবারও জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কার? বিশ্বনবী (সা.) তখন বললেন, তোমার বাবার (তিরমিজি)। এখানে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, মায়ের মর্যাদা বাবার চেয়ে তিনগুণ বাড়িয়ে দিলেন নবী। এটা এ কারণে যে, মা গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান লালন-পালনে বাবার চেয়ে বহুগুণ বেশি অবদান রাখেন। বাবা বিশেষত সন্তান ও পরিবারের আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করেন। খাবার-দাবার ও পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবস্থা করেন। আরেক সাহাবি একবার প্রিয় নবীর কাছে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইলে নবী (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি মা জীবিত আছে? সাহাবি হ্যাঁ বললে রসুল (সা.) বললেন, তুমি তোমার মায়ের সেবা কর। অর্থাৎ মায়ের সেবা করা জিহাদ করার চেয়ে বেশি মর্যাদা রাখে।
মন্তব্য চালু নেই