আপনি কি জানেন? কিভাবে এলো আন্তর্জাতিক নারী দিবস
![](https://archive1.ournewsbd.net/wp-content/uploads/2016/03/full_1363449007_1457376780.jpg)
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ বছর এই দিবসটির প্রতিপাদ্য সমতার জন্য অঙ্গীকার। নারী-পুরুষ সমতা নিয়ে চলছে নানা কথা। আন্দোলন। কিন্তু আদৌ কী সমতা বিরাজ করে সমাজে? সমতা ছিল না। সমতা নেই। কিন্তু এবারের অঙ্গীকার এই সমতা নিয়েই।
আজ যে নারী দিবস আমরা পালন করি তার শুরু কবে, কেন-ই বা নির্ধারিত হলো এই দিনটি? এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস।
১৮৫৭ সালে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৮ সালে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হলো।
ক্লারা ছিলেন জার্মানির রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতিবছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় : ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে।
দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এর পর থেকে পৃথিবীজুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সম-অধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার প্রত্যাশা নিয়ে।
ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে সূচিত এই দিবস পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীনসহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপিত হয়। জাতিসংঘ দিবসটি উদযাপন শুরু করে ১৯৭৫ সাল থেকে। এখন আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই।
বাংলাদেশেও আমরা প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করি। নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে, সংবাদমাধ্যমে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। কিন্তু উন্নত বিশ্ব ও বাংলাদেশের নারীর অবস্থার মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। এ দেশে নারীসমাজ আজও অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। সমতার জন্য অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকারে বিরাজ করবে সমতা। এগিয়ে যাবে নারী। এগিয়ে যাবে সমাজ-রাষ্ট্র। প্রত্যাশা এই।
মন্তব্য চালু নেই