ভ্রমণে প্রস্তুতি: ব্যাগ গোছানোর কার্যকরী টিপস

ভ্রমণে ব্যাগে কী নেবেন আর কী নেবেন না এটা প্রতিবারই যেন একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। অনেক ভেবে চিন্তে যা নিয়ে গেলেন, দেখা গেল তার অনেক কিছুই কাজে লাগলো না। অযথা ব্যাগ ভারী হল। আবার হয়তো দেখা গেল, দরকারি জিনিসটাই আনা হয় নি ভুলে। জেনে নিন, ব্যাগ গোছাতে কী কী খেয়াল রাখবেন।

সঠিক ব্যাগ পছন্দ করুন:
ভ্রমণে সঠিক ব্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাকিং-এ গেলে বিশাল লাগেজ নেওয়া অবশ্যই চরম বোকামীর পরিচয় হবে! আবার ব্যবসায়িক মিটিং এ আপনাকে যদি বিদেশ ভ্রমণ করতে হয় তাহলে অবশ্যই আপনি ব্যাকপ্যাক নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন না। খেয়াল করুন।

ঝটিকা সফর-
ট্রাকিং এ গেলে অথবা হাতে অল্প সময় কিন্তু অনেক দিকে ঘুরতে যাবেন তাহলে আদর্শ হল ব্যাকপ্যাক। বড় একটা ব্যাগ কিন্তু তার অনেক পকেট থাকবে। চেষ্টা করবেন ব্যাগের বেল্টের ফিটিংস যেন ভালো হয় যাতে আপনি সহজে দীর্ঘসময় বহন করতে পারেন।

পারিবারিক ট্যুর-
পরিবারের সাথে আপনি যখন ছুটির সময়টা সুন্দর কোথাও কাটানোর উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করেন তখন আপনাকে লাগেজ বা বড় ভারী ব্যাগ ব্যবহার করতে হতে পারে। বিভিন্নরকম ট্রাভেল ব্যাগ পাওয়া যায় যা ভারী হলেও চাকা থাকায় সহজে টেনে নেওয়া যায়। অনেকগুলো ব্যাগের পরিবর্তে একটা বড় লাগেজ ভ্রমণকে সহজ করতে পারে।

ব্যবসায়িক সফর-
ব্যাবসায়িক কাজে ব্রীফকেস সবচেয়ে সঠিক পছন্দ। ব্রীফকেস বানানোই হয় এমনভাবে যাতে আপনার ফাইল, ডকুমেন্টস, পাসপোর্ট সবকিছু সহজে ভাগ ভাগ করে রাখা যায়। গুছিয়ে বহন করা যায়।

দরকারি জিনিসের তালিকা তৈরি:
আপনার ভ্রমণে কি কি নেবেন তার একটা তালিকা তৈরি করে ফেলুন। যেমন-

কাজের জিনিস-
এই তালিকায় আপনার ল্যাপটপ থাকতে পারে। থাকতে পারে ক্যামেরা, চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক, মানিব্যাগ, টাকা, ক্রডিট কার্ড, পাসপোর্ট, ন্যাশনাল আইডি কার্ড ইত্যাদি।

পোশাক-
কেমন জায়গায় যাচ্ছেন, কয়দিনের জন্য যাচ্ছেন, আবহাওয়ার অবস্থা সব বুঝে পোশাক নিন। ব্যাগ যত কম ভারী হবে ততোই ভাল।

বিনোদন-
গান শোনার যন্ত্র, হেডফোন, ভাল কোন বই হতে পারে আপনার ভ্রমণ সংগী।

মেডিকেশন এবং প্রসাধনী-
ভ্রমণে অবশ্যই প্রাথমিক চিকিৎসা দ্রব্য বহন করা উচিৎ। পেইন কিলার, অডোমস ইত্যাদি সাথে নিন। গ্যাস্ট্রিক, হজমের সমস্যা, মাথাব্যথা এসব ছোটখাট সমস্যা আপনার ভ্রমণের আনন্দ মাটি করে দিতে পারে।
টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, শ্যাম্পু এসব নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু গুছিয়ে নিন।

ঘুমের সুবিধার্থে-
নেক পিলো, চোখের মাস্ক, এয়ার প্লাগ সাথে নিতে পারেন। ভ্রমণে প্রয়োজণীয় মাত্রার ঘুম আপনাকে তরতাজা রাখবে। তবে অবশ্যই ব্যাগে সহজে এঁটে যায়, কম ওজন এবং কমজায়গা নেয় এমন জিনিস নিন।
ব্যাগে জায়গা বাঁচাবেন যেভাবে:
১। কাপড় গোল করে ভাজ করুন।
২। ভ্রমণের জন্য আলাদা ছোট টুথব্রাশ, ছোট পেস্ট, মিনি প্যাক শ্যাম্পু, ছোট রেজার নিন।
৩। একটাই জুতা নেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি আরও নিতেই হয় তাহলে জুতার ভেতরের অংশে ঢুকিয়ে ফেলুন ব্রাশ, পেস্ট বা ছোট কাপড় গুলো (মোজা, গেঞ্জি ইত্যাদি)।
৪। কাগজপত্র এলোমেলো না নিয়ে পাতলা কোন ফাইলে নিন। খেয়াল করবেন, ফাইলটি যেন আলাদা জায়গা না নেয়।

দরকারি কিছু জিনিস ভুলে যাবেন না:
১। রেইনকোট বা ছাতা
২। সানগ্লাস
৩। পাওয়ার ব্যাংক
৪। পরিচয়পত্র/ দরকারি কাগজপত্র
৫। পাহাড়ি এলাকায় গেলে অবশ্যই ম্যালেরিয়া প্রতিশেধক খেয়ে যাবেন।

যা যা করবেন না:
১। অযথা ব্যাগ ভারী করবেন না।
২। আরামদায়ক নয় এমন জুতা বা পোশাক নেবেন না।
৩। ভ্রমণে সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন, কোনভাবেই বিবাদে জড়াবেন না।
৪। পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখুন, আপনার স্বসাচ্ছন্দ্য যেন অন্যকে ডিস্টার্ব না করে।
৫। প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।



মন্তব্য চালু নেই