“ছড়িয়ে পড়েছিল যে, আমি আর ইহজগতে নেই”

কারাগারে মারাত্মক জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই আমি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ি। জন্ডিস শনাক্তকরণের জন্য রক্ত পরীক্ষা করার পর দেখা গেল সিরাম বিলোরোবিন ২৭.৪ হয়ে গেছে। প্রতিদিন ভোরের ব্যায়াম করা তো দূরের কথা, বিছানা ছেড়েই উঠতে পারছিলাম না। দুপায়ের উপর ভর করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারতাম না। সমস্ত শরীর থর থর করে কাঁপতে থাকতো। একনাগাড়ে কয়েকদিন কোনো খাবারই মুখে দিতে পারিনি। যা কিছু মুখে দিতে পারতাম,তা-ও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বমি হয়ে বেরিয়ে যেতো। পেটের নাড়িভুঁড়ি সব বেরিয়ে আসতে চাইতো।

টলটলায়মান যকৃতের কার্যকারিতা ছিল নিভু নিভু প্রদীপের মতো, হয়তো মুহূর্তের একটা দমকা হাওয়ায় নিভে যাবে আমার প্রাণপ্রদীপ।

শুনেছি, ছড়িয়ে পড়েছিল যে, আমি আর ইহজগতে নেই। ৬৮ হাজার গ্রামের কোটি কোটি মানুষের মুখে উচ্চারিত হয়েছিল ‘ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজউন’। কিন্তু জন্ম-মৃত্যুর মালিক যিনি সেই আল্লাহপাকের হিসাবটাই তো আলাদা।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসব কথা লিখেছেন তার সদ্যপ্রকাশিত আত্মজীবনী ‘আমার কর্ম আমরা জীবন’ গ্রন্থে।



মন্তব্য চালু নেই