গৃহবধূর গায়ে আগুন দিলো শাশুড়ি

রংপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে তহমিনা (২৭) নামে এক গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে শাশুড়ি। পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের দাদোন গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে প্রথমে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামী আব্দুল মান্নানকে আটক করেছে।

পুলিশ ও তহমিনার মা জীবন্নেছা বেগম জানান, উপজেলার পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের তফিল উদ্দিনের মেয়ে তহমিনার সঙ্গে দাদোন গ্রামের মনতে আলীর ছেলে মান্নানের ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি বিভিন্নভাবে তহমিনার উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।

ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মা আলেমা বেগমের সঙ্গে ছেলে মান্নানের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় স্বামীর পক্ষ নিয়ে তহমিনা কথা বলতে গেলে আলেমা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তহমিনার গায়ে কেরোসিন ঢেলে কুপির আগুন ধরিয়ে দেন শাশুড়ি। এতে তহমিনার শরীরের অনেকটাই ঝলসে যায়। এসময় প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করেন।

তহমিনা জাগো নিউজকে জানান, ১২ বছর ধরে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। এরপরও তারা বাঁচতে দিল না। এ ঘটনায় শাশুড়ির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

তহমিনার মামা আব্দুস সামাদ জানান, বিয়ের পর থেকেই তহমিনার উপর বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। দুই মেয়ে মুন্নী (১০) ও মুক্তার (৮) কথা ভেবে সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করেছিলো তহমিনা। এতেও শেষ রক্ষা হলো না তার।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক শাহ হাকিম আজমল হোসেন জানান, তহমিনার শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পীরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ রংপুর মেডিকেল থেকে মান্নানকে আটক করেছে। থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং শাশুড়িকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।



মন্তব্য চালু নেই