তারেকের নাম ভাঙিয়ে ছাত্রদলে প্রতারণা

শনিবার রাতে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ৭৩৬ সদস্যের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়। তার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মেরাজ ও সদস্য পদ থেকে দুজনকে বহিষ্কার করা হয়।

জানা গেছে, তারেক রহমানের কথিত উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার এম সায়েম এবং হুমায়ুন কবির তারেক রহমানের রেফারেন্স দিয়ে ছাত্রদলের এই বিশাল বহরে এ দুজনকে দিয়েছিলেন। তারেক রহমান বিষয়টি জানেন না বলে পরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে বহিষ্কৃতদের বাদ দেয়ার কথা বলেননি।

তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে দুজনকে কমিটিতে দেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের বহিষ্কার করা হয়। তবে বহিষ্কারের কোনো কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

লন্ডনে ব্যাঙের ছাতার মতো তারেক রহমানের উপদেষ্টা গজিয়েছে। তারেক রহমানের সঙ্গে কোনোভাবে কয়েকবার যোগাযোগ হলেই সে নিজেকে তারেক রহমানের উপদেষ্টা পরিচয় দিচ্ছে। যত্রতত্র উপদেষ্টারা নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত এভাবেই প্রতারণা করে যাচ্ছে।

বিশাল বহরের এই কমিটি নিয়ে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। পদবঞ্চিতরা কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। প্রায় চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জিয়াউর রহমানের মুর‌্যাল। কমিটির নেতাদের একাংশ মন্দের ভালো টাইপের তৃপ্তি নিচ্ছেন। কেউ কেউ কমিটিকে হাস্যকর আখ্যা দিচ্ছেন।

ছাত্রদলের কমিটিতে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। এর দায়ে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ইউনিটের নেতার বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে প্রবাসীও।

নয়াপল্টনে ছাত্রদল নেতাদের ভাঙচুর প্রসঙ্গে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সরকারের উসকানিতে ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী পা দেবে না। পদবঞ্চিত হয়ে থাকলে সমন্বয় করার সুযোগ আছে।’

কমিটি গঠনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২ জনকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বহিষ্কার নয়। তারাও বাইরের কেউ নয়, ছাত্রদলের লোক। যুক্তরাজ্য থাকে। তারা দেশে এসে রাজনীতি করতে চেয়েছিল। তারা আসেনি তাই বাদ দেয়া হয়েছে।’

ধর্ষণের দায়ে বহিষ্কৃতকে সংগঠনে ফেরানো প্রসঙ্গে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকারামুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বিদ্রোহী নেতারা জানিয়েছেন, ৭৩৬ সদস্যের কমিটি বাতিল করে গঠতন্ত্র মোতাবেক নতুন কমিটি না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। অবশ্য ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ সরকারকে দায়ী করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই