আ. লীগে লতিফের ‘ভাগ্য নির্ধারণ’ ১২ অক্টোবর

হজ নিয়ে মন্তব্য করায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় ‘বিপদে থাকা’ আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ভাগ্য নির্ধারণে ১২ অক্টোবর বসছে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্ষদ ‘কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ’।

দলের কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেন, “১২ অক্টোবরের বৈঠকে লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য আমাদের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগেই জানিয়েছিলেন, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে ‘বাদ দিতে হলে’ কার্যনির্বাহী সংসদে আলোচনা করেই সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ফাইল ছবি ফাইল ছবি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চালিয়ে আসা লতিফ সিদ্দিকী গত ২৮ অক্টোবর নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্তব্য করে ব্যাপত সমালোচনার মুখে পড়েন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে তার অপসারণের পাশাপাশি ও শাস্তির দাবিও তোলা হয়।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরেই শুক্রবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, লতিফ সিদ্দিকী আর মন্ত্রীসভায় থাকবেন না।

“আমি নির্দেশ দিলে রিজাইন (পদত্যাগ) করতে হবে। নইলে বিদায় করে দিতে হবে। কিন্তু বিদায় দিতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল পাঠাতে হবে। রাষ্ট্রপতি হজে গেছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবও হজে গেছেন। আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ফাইল তৈরি করে রাখতে বলেছি, অফিস খুললে ফাইল চলে আসবে।”

রাষ্ট্রপতি ফিরলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব তার কাছে ফাইল নিয়ে যাবেন এবং তাতে রাষ্ট্রপতি সই করলেই লতিফের ‘বিদায়’ হবে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

লতিফ সিদ্দিকীর মন্তব্যে সরকার বেকায়দায় পড়েছে কি না -এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, “লতিফ সিদ্দিকী যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সরকার বেকায়দায় পড়েছে বলে আমি মনে করি না, উনি নিজেই বেকায়দায় পড়েছেন; এটা হলো বাস্তব কথা। আর এখানে সরকারের কি দোষ? সরকার তো বলেনি। উনি যেটা বলেছেন তার খেসারত উনাকেই দিতে হবে।”

লতিফকে দল থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বাদ দিতে হলে তা নিয়ে দলে আলোচনা করতে হবে। অভিযোগ তুলে ধরে আলোচনা করতে হবে। ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

আগামী সপ্তাহে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে লতিফের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, “তার বক্তব্যের বিষয়েই আলোচনা হবে। ওয়ার্কিং কমিটি যদি মনে করে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া ভাল- তাহলে অব্যাহতি দিয়ে দেবে।”

নিউ ইয়র্কের ওই অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী।”

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ায় দেশের অর্থ আর শ্রম শক্তির ‘অপচয়’ হয়। উৎপাদনে প্রভাব পড়ে।

লতিফের ওই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ দেয়ার অভিযোগে লতিফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অন্তত দুই ডজন মামলা হয়। বিএনপি এবং কয়েকটি ইসলামী সংগঠন তাকে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানায়।



মন্তব্য চালু নেই