অচিরেই সরকার পতনের আন্দোলন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘অনির্বাচিত সরকার জনগণ নয় প্রশাসনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার পাঁয়তারা করছে। বিএনপি দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারের বাকশালী স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেবে না। অচিরেই এই সরকারের পতনের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনে মাঠে নামবে দেশবাসী।’
বুধবার বিকেলে কুড়িগ্রামের এম এ সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তাদের নেতারা এবং চামচারা, যাদের কোনো জনসমর্থন নেই তারা সরকারের কাঁধে ভর করে মন্ত্রী হয়েছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণের সরকার যখন নির্বাচিত হবে তার প্রধান হবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ একটি বড় জেলে আবদ্ধ। আর বিএনপির নেতাকর্মীরা অপরাধ না করেই ছোট জেলে বন্দি থাকছেন। আমরা দেশের প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। সুবিচার চাই। কিন্তু সরকার প্রথম থেকেই অন্যায়ভাবে বিএনপিকে অভিযুক্ত করছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপিতে কোনো সংস্কারপন্থি নেই। সংস্কারপন্থির কথা যারা বলেন তারা সব সময় বলবেন। এ নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাত্র দল বিএনপি। কেউ কেউ ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপির মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে অগণতান্ত্রিকভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে দলের ভেতর থেকে নয় দলের বাইরে থেকে তারা সেই চেষ্টা করছে। আমরা যারা বিরোধী দল করি, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলি তাদের পেছনে পুলিশ লাগিয়েছে, গুপ্তচর লাগিয়েছে, আর যারা প্রকৃত অপরাদী তারা নিবিঘ্নে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
সম্প্রতি দুই বিদেশি ও প্রকাশক হত্যার বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশে কিছু ঘটলেই সরকার এবং সরকারের চামচারা কোনো তদন্ত ছাড়াই ঢালাওভাবে বিএনপির কাঁধে দোষ চাপিয়ে দেয়। বিএনপিই যদি সবকিছু করতে পারে তবে আপনারা ক্ষমতা ধরে রেখছেন কেন? ছেড়ে দেন ক্ষমতা। জনগণের কাছে দায়িত্বশীল এবং জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। যে সরকারের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম।’
জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীর-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা, অ্যাডভোকেট রেহানা খানম বিউটি, পৌর মেয়র নুর ইসলাম নুরু প্রমুখ। এছাড়াও বক্তব্য দেন নয় উপজেলা ও তিন পৌরসভার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকগণ।
পরে সন্ধ্যায় কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে তাসভীর-উল-ইসলামকে সভাপতি, আবু বকর সিদ্দিককে সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাইফুর রহমান রানাকে সাধারণ সম্পাদক, সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদকে যুগ্ম-সম্পাদক এবং নুর ইসলাম নুরুকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৭ আগস্ট কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে সর্বশেষ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ছয় বছর পর সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে ইউনিয়ন থেকে উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিল সম্পন্ন করা হয়। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে কুড়িগ্রামে বিএনপির সাংগঠনিক ভীত বেশ সবল হয়ে উঠেছে। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা।
মন্তব্য চালু নেই