দুর্ভাগ্য! যে আমরা আমাদের কাজে কর্মে ভাল রক্তের পরিচয় ধরে রাখতে পারছি না

ক্লাস চলছে। অংকের ক্লাস। স্যার গভীর মনোযোগ সহকারে বোর্ডে চক টানছেন। আমার ডান পাশে সে দাঁড়িয়ে কাঁচের টুকরোটি ছুঁড়ে মারল স্যারের পাশে ব্ল্যাক বোর্ড বরাবর। স্যার ঘুরলেন ঠিক সেই সময়। বন্ধুটি তখনও বসতে পারেনি। দেখে ফেললেন তিনি ছেলেটিকে। কাঁচের টুকরোটি তাঁর দুহাত দূরে বোর্ডে লেগে ঝনঝন করে ভেঙ্গে পড়ল।

স্যার দুই হাত ধরে ছেলেটিকে ঝাঁকি দিয়ে বললেন, “তোমার শরীরে কোন রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে ?”

ঘটনাটি ১৯৭৯ সালের দিকে।

একই ধরণের কাহিনী বলল, আমার সেই দুপুরে না খেয়ে থাকা বন্ধুটি (পূর্বের স্ট্যাটাস)।

সে তখন কলেজে। একদিন ক্লাস চলাকালীন এক ছেলে স্যারের পিছন থেকে মুখ দিয়ে চিৎকার করে এক অদ্ভুত আওয়াজ করেছিল। ছেলেটিকে ধরে স্যার বলেছিলেন, “আমরাও এই কলেজে পড়েছি। আমাদের সময় ব্লাড টেস্ট করে ছাত্র ভর্তি করা হত”।

স্যার কি বুঝাতে চেয়েছিলেন তা আর ভেঙ্গে বলার দরকার নেই।

চাকুরীতে আমার যোগদানের পরপর আমার সিনিয়র এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, “মাহবুব সবসময় মনে রাখবে, তোমার প্রতিটি পদচিহ্ন, তোমার পিতামাতার পরিচয় বহন করে”।

দুর্ভাগ্য আমাদের। এখন আমরা আমাদের কাজে কর্মে ভাল রক্তের পরিচয় আর রাখতে পারছি না। এভাবেই অবক্ষয় নেমে আসে। নেমে আসে নৈতিকতার পতন।

আজকের পিতামাতা আমরাই যেখানে সৃজনশীল ভূমিকা রাখতে পারছি না, সেখানে আমাদের সন্তানরা পরিবার দেশ ও জাতির ঝাণ্ডা তুলে ধরবে তা আশা করাই বোকামি।

এক ঘুষখোর কমিশনখোর কর্মকর্তার কথা শুনলাম। যিনি ঘুষ নেয়ার সময় কেউ কম দিতে গেলে উচ্চস্বরে দম্ভ করে বলেন, “আমার বাপ বলেছে এক টাকাও কম না নিতে, কাজেই……”।

আমাদের রক্তের রঙ মনে হয় দিনদিন কাল হয়ে যাচ্ছে!! আর নৈতিক অবক্ষয় এবং মূল্যবোধের অধঃপতন এর কথা নাইবা বললাম। জানি না বের হবার পথ কি এবং কোথায়??

মাহবুব কবির মিলন এর ফেসবুক থেকে নেওয়া



মন্তব্য চালু নেই