বনবিবিতলার বটগাছটি ঘিরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটনশিল্প
সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলা একটি ঐতিহ্যবাহী ও বহু প্রাচীন ইতিহাসের ধারক ও বাহক উপজেলা হিসেবে পরিচিত। এখানে বৃটিশ আমলে ছিল জমিদারদের বসবাস। উপজেলা সদর থেকে টাউনশ্রীপুর পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ৩ কিঃমিঃ এর মধ্যে ছিল ১৮ জন জমিদারের বসবাস। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই টাউনশ্রীপুওে বাংলাদেশের দ্বিতীয় পৌরসভা ছিল। যার নাম ছিল টাউনশ্রীপুর মিউনিসিপ্যালিটি। এখানে আরেকটি বড় ঐতিহ্যবাহী জিনিষ হচ্ছে সদরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি বটগাছ রয়েছে। যে বটগাছটিকে ঘিরে রহস্য ও কৌতুহলের শেষ নেই। গাছটির না জানে কেউ জন্ম সাল বা না জানে কেউ জন্মের রহস্য। এই গাছটিকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য একটি আনন্দময় ও শান্তির জায়গা। এই সুন্দর ও মনোরম জায়গাটি একদিকে যেমন হয়ে উঠতে পারে সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি পহ্না ঠিক তেমনি হয়ে উঠতে পারে ভ্রমন পিপাসুদের বেড়ানোর মনোরম স্থান। স্থানীয় মুরুব্বীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, প্রাচীন এই গাছটি কবে আর কিভাবে এভাবে গড়ে উঠেছে সেটা কেউ বলতে পারেনা। স্থানীয়রা গাছটিকে বনবিবিতলা নামে ডাকে। এখানে প্রতিবছর পহেলা মাঘে এই বনবিবিতলায় মেলা বসে। এখানে গড়ে উঠেছে একটি বনবিবিতলা থান। এই থানে মেলার দিনে অনেকে বিভিন্ন মনোবাসনা পূরনে মানত করে। কেউ দেয় মুরগী, কেউ দেয় টাকা আবার কেউবা দেয় বিভিন্ন প্রকারের জিনিষপত্র। অনেকের মনোবাসনা বনবিবি মা পূরন করে দেন বলে জানা যায়। কথিত আছে অনেক বছর আগে কোন এক ব্যক্তি এই গাছটির ডাল কাটলে গেলে সে এমন ভয়ঙ্কর জিনিষ দেখে সেটা আর সে বলতে পারেনা। এখানে অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষেরা বেড়ানোর জন্য আসেন। অনেকে আবার বনভোজনের উদ্দ্যেশ্যেও এখানে আসেন। তাই এই ঐতিহ্যবাহী স্থানটিকে ঘিরে সরকারী বা বেসরকারী পর্যায়ে গড়ে উঠতে পারে একটি পর্যটন কেন্দ্র। দেবহাটা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ এই বনবিবিতলায় জাকজমকপূর্নভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ঐদিনে এখানে বিভিন্ন লোকজ ও বাউল সঙ্গীত সহ দেশী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাই স্থানীয়দের দাবী এই ঐতিহ্যবাহী স্থানটিকে আরো সুন্দর ও নান্দনিক করে গড়ে তুলতে সরকারীভাবে উদ্যোগ গ্রহন করা হোক।
মন্তব্য চালু নেই