ঈদের পরে ব্যালটের মাধ্যমে নতুন ছাত্রদলের কমিটি!

ছাত্রদল নেতাদের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির কিছুটা বিরতি হয়েছে। আপাতত কমিটি ঘোষণা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে ঈদের পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে। তবে ছাত্র নেতাদের কেউ কেউ চাচ্ছেন ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হোক।

কয়েকদিন ধরে গুঞ্জন ছিল যে কোনো সময় ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা হতে পারে। ঘোষণার চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় এসে আটকে গেলো নতুন কমিটি। নেতাকর্মীদের অভিযোগ কতিপয় সিন্ডিকেট বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নতুন কমিটি বাগিয়ে আনার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

সূত্র জানায়, রাজিব আহসানকে সভাপতি, আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক, মিয়া রাসেলকে সাংগঠনিক সম্পাদক, আবদুল ওহাবকে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও আসাদুজ্জামান আসাদকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করে সুপার ফাইভ কমিটি চূড়ান্ত করা হয়।

আন্দোলন-সংগ্রামে এবং বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে কোনো ভূমিকা না থাকা সত্ত্বেও রাজিব আহসানকে সভাপতি মনোনীত করায় একটি সিন্ডিকেট চরম প্রতিক্রিয়া দেখায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সামনে। এসময় রাজিব আহসানের পরিবারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা এবং সুবিধা নেয়ার কথাও উঠে আসে।

২০০৩ সালে জসিম উদ্দিন হলের সভাপতি থেকে শুরু করে সর্বশেষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাজিব আহসান। অভিযোগ উঠেছে, কমিটিতে পদ পেতে লবিং তদবিরকে চূড়ান্ত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে খালেদা জিয়ার সামনেই চরম হট্টগোল হয়।

অন্যদিকে, বর্তমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক মিয়া রাসেল বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অবিবাহিত বলে তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করার সুপারিশ করেন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সহ-সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু। পাশাপাশি সর্বশেষ কমিটিতে কোনো পদ না থাকলেও আব্দুল ওহাবকে মনোনীত করা হয় যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে। ওহাব বিয়ে করা সত্ত্বেও তাকে অবিবাহিত বলে পদ ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীম।

গত মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া কমিটি চূড়ান্তকরণ সভায় রাত ১টায় খালেদা জিয়া যখন বুঝতে পারেন বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা করা দরকার তখনই তিনি উল্লেখিত ৫ জনকে সুপার ফাইভ করে গঠিত কমিটির সুপারিশে স্বাক্ষর করেননি। ফলে ভেস্তে যায় নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া।

যার প্রতিফলন বুধবার রাতে দেখা যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে। সংগঠনটির সহস্রাধিক নেতাকর্মী শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাঁসি দাবি জানায়।

পরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছাত্র ছাত্র নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। ছাত্র নেতারা তাদের কথা জানান। কমিটি হওয়ার আগে ক্ষোভ প্রকাশের জন্য ছাত্র নেতাদের ধমকান খালেদা জিয়া।

কথিত সুপার ফাইভে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদেরকে নিয়ে নানা বিতর্ক থাকায় ক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাকর্মীদের চোখ এখন গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের দিকে। বুধবার দুপুরের পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে গুলশান কার্যালয়ের আশেপাশে জড়ো হয় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

ছাত্রদল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগীদের নিয়েই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। অন্যথায় পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়তো বিএনপির পক্ষে সম্ভব হবে না।

নতুন কমিটি প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসির বলেন, ‘একটা ক্রাইটেরিয়া তৈরি করা হোক। সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হলে সবাই মেনে নেবে।’



মন্তব্য চালু নেই