যৌনপল্লি থেকে অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত শ্বেতা
শ্বেতা কট্টী। মুম্বাইয়ের কামাথিপুরা যৌনপল্লির এক বাসিন্দা। যিনি সম্মানিত হলেন রাষ্ট্রসংঘের ইউথ কারেজ অ্যাওয়ার্ডে।
শিক্ষাক্ষেত্রে অননুকরণীয় সাহস দেখানোর জন্য এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে ১৯ বছরের শ্বেতা কট্টীকে।
সাহসিকতা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রতি বছর মেয়েদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়। রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে ইমেল পাঠিয়ে এই সম্মান প্রাপ্তির কথা জানিয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে মুম্বাইয়ের রেড লাইট এলাকায় বসবাস করছেন বহু মেয়ে। ক্রান্তি নামে এক এনজিওর উদ্যোগে তারা শিক্ষার আলো দেখছেন। এই প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতাতেই শ্বেতার পড়াশোনা সম্পূন্ন হয়েছে।
ক্রান্তির এক সদস্য রবিন চৌরাসিয়া জানিয়েছেন, শ্বেতা যৌনপল্লি থেকে বেরিয়ে আসা সেই মেয়ে, যাকে রাষ্ট্রসংঘ সম্মানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিউ ইয়র্কের বার্ড কলেজ ইতিমধ্যে শ্বেতাকে ২৮ লাখ টাকার বৃত্তি দিয়েছে।
২০১৭ সাল পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে বাস করে বার্ড কলেজে মনোবিজ্ঞানে ডিগ্রি কোর্স করবেন শ্বেতা।
বার্ড কলেজ আমেরিকার শীর্ষ দশটি কলেজের মধ্যে অন্যতম একটি। এখানে ৪ বছরের স্নাতক ডিগ্রির জন্য খরচ পড়ে ২৮ লাখ টাকা।
একটি অনুষ্ঠানে বার্ড কলেজেরই এক প্রাক্তন ছাত্রের সঙ্গে দেখা হয় শ্বেতার। তিনিই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে শ্বেতার নাম প্রস্তাব করেন। শ্বেতার জীবন কাহিনি শুনে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে বৃত্তি দিতে রাজি হয়।
কর্নাটকের বাসিন্দা শ্বেতার মা মুলত দেবদাসী ছিলেন। শ্বেতার জন্মের পর তাকে নিয়ে তিনি মুম্বাই চলে আসেন। কামাথিপুরাতেই ছোটবেলা কেটেছে শ্বেতার। মুম্বাইয়ে একজনের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্ক ছিল তার মায়ের। যৌনকর্মী না-হলেও ওই এলাকাতেই বসবাস করতেন তিনি। সে সময় মায়ের পুরুষ সঙ্গীর যৌন লালসার শিকারও হতে হয় শ্বেতাকে। তবে তাতেও দমে যাননি তিনি। একনিষ্ঠভাবে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। একই সঙ্গে ক্রান্তির হাত ধরে তিনি যৌনকর্মীর সন্তানদের পড়াশোনাও শেখাতে শুরু করেন। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেওয়ার পর শ্বেতা এক বছর পড়াশোনা বন্ধ করে রাজস্থান, নেপাল এবং ঝাড়খণ্ডে মেয়েদের যৌন শিক্ষার প্রচার অভিযানে সামিল হন। নিউ ইয়র্কে পড়াশোনার পাট শেষে ভারতে এসে তিনি যৌন নিগৃহীতাদের সাহায্য করতে চান। তিনি চান, এদেশে যৌন কর্মীদের অধিকার এবং তাদের পেশা আইনি অনুমোদন পাক।
তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়া টাইমস।
মন্তব্য চালু নেই