দাদী না ডাইনি?
পিরোজপুর বাবা আদর করে নাম দিয়েছিলেন ছোঁয়া। দেড় মাসের ছোঁয়াকে রেখে দুমাস আগে তাকে চলে যেতে হয় বিদেশে। পরম মমতায় আর চরম নির্ভরতায় স্ত্রী কন্যাকে রেখে গিয়েছিলেন স্বজনদের কাছে। আদর আর ভালোবাসার ছোঁয়ায় থাকার কথা ছিল ছো্ট্ট শিশু ছোঁয়ার। কিন্তু না, আপনজনের মমতা আর আদরের পরিবর্তে নির্মম পৈশাচিকতার শিকার হয়েছে শিশুটি। এখন শিশুটির ঠিকানা হয়েছে হাসপাতালে।
সাড়ে তিনমাস বয়সী ছোঁয়াকে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দেয়া হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। আর পাশবিক এ ঘটনা ঘটিয়েছেন শিশুটির আপন দাদী।
তিনদিন আগে এ পৈশাচিক এ ঘটনাটি ঘটেছে পিরোজপুর সদর উপজেলার ভৈরমপুর গ্রামে। শিশু ছোঁয়ার বাবা শফিক খান পিরোজপুর সদর উপজেলার ভৈরমপুর গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচবছর দেশের বাইরে বাহরাইন থাকার পরে তিনি দেড় বছর আগে বাড়ি আসেন বিয়ে করতে।
স্থানীয় সূত্রমতে, বছর দেড়েক আগে বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে শফিক খান পাশের পান্তডুবি গ্রামের হাসি আকতারকে বিয়ে করেন। মাস দুয়েক আগে স্ত্রী ও কন্যাকে রেখে ফের বিদেশে চলে যান। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় হাসির ওপর চলতে থাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন।
এক পর্যায়ে গত বুধবার গরম খুন্তি দিয়ে শিশু কন্যা ছোঁয়ার ডান পায়ের ঊরুতে ছ্যাঁকা দেন শিশুর আপন দাদী মুরফিয়া। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধ ও বৃহস্পতিবার চিকিৎসা শেষে ছোঁয়াকে তার নানা বাড়ি নেবা হয়। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বিকেলে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুর মা হাসি জানান, বিয়ের পর শফিক বাহরাইনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছিল। এজন্য তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে দায়ী করে। এ নিয়ে তার সাথে শ্বশুর বাড়ির লোকদের প্রায়ই মনোমালিন্য ও ঝগড়া হতো।
হাসি আরো জানান, বুধবার দুপুরে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি ফেরার পরে শাশুড়ি তার কোল থেকে ছোঁয়াকে নিয়ে পাশের রান্নাঘরে যায়। একটি গরম খুন্তি দিয়ে ছোঁয়ার ডান পায়ের ঊরুতে ছ্যাঁকা দেন। বাধা দিতে গেলে একটি দা দিয়ে তাকে আঘাত করে।
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ননী গোপাল জানান, শিশুটির ক্ষতটি অনেক বড় এবং সেরে উঠতে কয়েক দিন সময় লাগবে।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, এ ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য চালু নেই