ঘাটাইলে আ’লীগের দু’সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ তুঙ্গে
![](https://archive1.ournewsbd.net/wp-content/uploads/2014/11/songarso.jpg)
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। এরা হচ্ছেন, রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক সরকার ও একই ইউনিয়নের মোমিনপুর ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মর্তুজ আলী। ওই বিরোধে গ্রামবাসী জড়িয়ে পড়ায় বর্তমানে দুই গ্রামের বিরোধে রূপ নিয়েছে। বিরোধের জের ধরে উভয়ের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
জানাগেছে, ঘাটাইলের রসুলপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর হাইস্কুল মাঠে স্থানীয় স্পোটিং ক্লাবের উদ্যোগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর মোমিনপুর ও ঘোনারদালী গ্রামের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলার দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোলকে কেন্দ্র করে খেলোয়ারদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
এক পর্যায়ে স্কুলের প্রধান ফটক বন্ধ করে ঘোনারদালী গ্রামের লোকদের মারপিট করে। এতে, ঘোনারদালী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম(১৮), কান্দু মিয়ার ছেলে জাহিদুল(২২), মফিজ উদ্দিনের ছেলে আলামীন(১৮), কায়েম উদ্দিনের ছেলে রাকিব(১৫) ও মনসুর আলীর ছেলে মাজহারুল(২৪) এবং মোমিনপুর গ্রামের আলমাস সিকদার(৩২) ও গড়ানচালা গ্রামের তুলা মিয়ার ছেলে ফারুক(২৮) আহত হন। তাদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
খেলোয়ারদের আটকে রেখে মারপিট করার সংবাদ পেয়ে ঘোনারদালী গ্রামের লোকজন একতাবদ্ধ হয়ে লাঠি-শোঠা নিয়ে মোমিনপুর গ্রামের দিকে যেতে থাকে। এহেন পরিস্থিতিতে রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক সরকার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে গ্রামবাসীকে নিবৃত করেন। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর মোমিনপুর গ্রামের ২০-২৫ জন লোক লাঠি-শোঠা নিয়ে ঘোনারদালী গ্রামের দিকে যেতে থাকলে ঘোনারদালী গ্রামের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। পরে মোমিনপুর গ্রামের লোকজন জোটবদ্ধ হয়ে পুণরায় ঘোনারদালী গ্রামের লোকদের পাল্টা ধাওয়া দেয়। ধলাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির হস্তক্ষেপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া বন্ধ হলেও এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনার পর মোমিনপুর ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মর্তুজ আলীর সমর্থক মোস্তাক(৪০), জাকির(২৬), ফিরোজ(২৫), সফিকুল(৩৫), সেন্টু মিয়া(৩৫), রাজু(৩২) ও আনিছ(২০) সহ ১০-১২জন লোক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সম্বলিত রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক সরকারের দেয়া ঈদ শুভেচ্ছার ৩০-৩২টি ব্যানার-ফেস্টুন ভাঙচুর করে।
মোমিনপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মর্তুজ আলী জানান, ফুটবল খেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমদাদুল হক পানি ঘোলা করায় মোমিনপুর ও ঘোনারদালী গ্রামের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। ইচ্ছে করলে তিনি বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন, তিনি তা করেননি।
রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক সরকার জানান, সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোমিনপুরের লোকজন ঘোনারদালী গ্রামের লোকদের মারপিট করেছে। এজন্য ঘোনারদালী গ্রামের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে লাঠিশোটা নিয়ে মোমিনপুর গ্রামে আক্রমন করতে যাচ্ছিল। তিনি গ্রামবাসীকে ফিরিয়ে এনেছেন। মিমাংসা করার জন্য মর্তুজ আলীকে সহ ওই গ্রামের লোকদের বললেও তারা সাড়া দেয়নি, বরং গ্রামবাসীকে উস্কে দিয়েছেন।
রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন(সেন্টু) জানান, ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। দুই গ্রামের লোকদের সাথে তিনি কথা বলে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছেন। ওই বৈঠকে উভয় গ্রামের মধ্যে সমঝোতা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্তব্য চালু নেই