চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিবারে পুলিশের নির্যাতন! থানায় মিথ্যা মামলা
চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলায় সাংবাদিক পরিবারের উপর পুলিশের নির্যাতনে সুশিল সমাজ ও সাংবাদিক সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ কি ভাবে রাতকে দিন ও দিনকে রাত করে নির্মম নিযাতন করতে পারে একটি সাংবাদিক পরিবারে। সচেতন মহল ভাবতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের উপর নানা অজুহাতে পুলিশ কতটুকু হয়রানী করে থাকে।
টাকার বিনিময়ে পুলিশ নিরিহলোকও গুলি করে হত্যা করতে পাবে এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো রাউজান থানা পুলিশ। এমনি একটি উদাহরণ হলো রাত ১টায় আটক, রাত ১টা ৪৫ মিনিটে হাসপাতালে ব্যবস্থাপত্র সংগ্রহ, রাত ৩টায় মোটা অংকের টাকা নিয়ে থানা পুলিশের মিথ্যা মামলা গ্রহন। এটা হলো রাউজান থানা পুলিশের চরিত্র।
জানা যায়, রাউজান প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ও রাউজানবার্তা২৪.কম পত্রিকার ব্য: সম্পাদক সাহেদুর রহমান মোরশেদসহ তার চার ভাই ও তার পরিবারের মহিলা সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় আটক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত শনিবার ১৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১টা থেকে তিনটার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। সূত্র জানায়, নোয়াপাড়া সামহালদার পাড়ার মৃত জালাল খায়ের এর ছেলে লোকমান আলী সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ এর ভাই ব্যাবসায়ী সাদেকুর রহমান এর কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা আতৎসাত করলে গত ৩১ আগষ্ট তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (সি আর মামলা নং-১১৯/২০১৫)। মামলা দায়েরর পর থেকে সে ও তার ভাই লেয়াকত আলী ও মোহাম্মদ আলী মামলা প্রত্যাহার না করলে সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ ও তার ভাইদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
শনিবার ১৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত গভীর রাতে রাউজান থানার একদল পুলিশ কোন কারন বা ওয়ারেন্ট না দেখিয়ে তার তিন ভাই নোয়াপাড়া ভারতশ্বরী রহমানিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক স্বনাম ধন্য ব্যাবসায়ী সাদেকুর রহমান, একই প্রতিষ্টানের পরিচালক আনিছুর রহমান রুবেল, পরিচালক মুশফিকুর রহমানকে কোন ওয়ারেন্ট না দেখিয়ে রাউজান থানা পুলিশের একটি দল আটক করে নিয়ে যায়।
সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ দাবি করেন তাকে ও তার ভাইদের হয়রানী করতে লোকমান আলী ও তার ভাইয়েরা মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। লোকমান আলীর দায়ের কৃত মামলায় ১৯ সেপ্টেম্বর যে স্থানে মারপিটের ঘটনা উল্লেখ আছে সে স্থানের আশ পাশের স্থানীয়রা এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি বা শুনেনি বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।
ঘটনার সময়ে সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ রাউজান প্রেস ক্লাব সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক এর সাথে ছিল প্রেস ক্লাবে। সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ আরও অভিযোগ করেছে একই রাতে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার পরিবারের মহিলা সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন ও নগদ টাকা, স্বর্নলংকার লুঠে নিয়ে গেছে।
এই ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। রাউজান প্রেস ক্লাবের কর্মসূচী: সাংবাদিক পরিবারের উপর পুলিশের নির্যাতন ও আটকের পর আসামীকে আদালতে সোপর্দ করতে রাউজান থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ও তদন্তকারী অফিসারের গড়িমেসির প্রতিবাদে থানা ফটকে অবস্থান কর্মসূচীর করেছে। রাউজানে কর্মরত সাংবাদিকরা দোষি পুলিশের শাস্তি দাবি করেন।
ওয়ারেন্টভুক্ত এক জন পালাতক আসামী কিভাবে থানায় এসে মিথ্যা মামলা দায়ের করতে পারে এবং ওসি কি ভাবে মিথ্যার উপর ভর করে নিজের বিবেক বিক্রি করতে পাবে তারা প্রশ্ন তুলেন। এসময় আইনের পোষাক পড়ে জনগনকে সেবার আদলে দাগী আসামীদের সাথে অফিস রোমে বসে আড্ডা দেয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
সাংবাদিকরা দোষি পুলিশের শাস্তি না হওয়া পষর্ন্ত বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষনা করেন। রাউজান প্রেস ক্লাব সহ সভাপতি সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার পরিবারের মহিলা সদস্যদের নির্যাতনের সুষ্ট তদস্তের জন্য উর্দ্ধতন পৃুলিশ প্রশাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করে রাউজান থানা চত্বরে রাউজান প্রেস ক্লাব কর্মকর্তা এই অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে।
অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন রাউজান প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মীর আসলাম, শফিউল আলম, জাহেদুল আলম, এম বেলাল উদ্দিন, প্রদীপ শীল, বর্তমান সভাপতি তৈয়ব চৌধুরী সাধারন সম্পাদক এস.এম ইউছুপ উদ্দিন, সাংবাদিক এম.রমজান আলী, সাংবাদিক এম জাহাঙ্গীর নেওয়াজ, সাংবাদিক কে.এম জাহেদ, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন, সাংবাদিক জয়নাল জুবাইর।
রাউজানে কর্মরত সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ তার তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলার আশংকা করলে গত ৯ তারিখ আধুনিক রাউজানের রুপকার এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির পিতার মৃত্যু বার্ষিকির দিন রাউজানে কর্মরত প্রায় সকল সাংবাদিকের উপস্থিতিতে এমপি সাহেবকে বিষয়টি অবগত করে। তখন এমপি সাহেব সাংবাদিকদের উপর কেউ অন্যায় জুলুম বা কোন ধরনের মিথ্যা হয়রানি করা ব্যাক্তিকে ছাড় দেয়া হবে না বলে সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে রাউজান প্রেস ক্লাব সহ সভাপতি সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার পরিবারের মহিলা সদস্যদের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাটহাজারী প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ।
এক বার্তায় হাটহাজারী প্রেস ক্লাবের কর্মকর্তা সাংবাদিক কেশব কুমার বড়–য়া, সাংবাদিক শিমুল মহাজন, সাংবাদিক আবু তালেব, সাংবাদিক মনসুর আলী, সাংবাদিক মো: হোসেন, সাংবাদিক আসলাম পারভেজ, সাংবাদিক খোরশেদ আলম শিমুল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার পরিবারের মহিলা সদস্যদের নির্যাতনের সুষ্ট তদন্ত সহ সংশ্লিষ্ট থানার ওসীর বদলী দাবী বরেন।
নোয়াপাড়া ভারতশ্বরী মার্কেটের ব্যাবসায়ী কল্যান সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শফি ও সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, সাদেকুর রহমান ও তার ভাইয়েরা দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সহিত ব্যাবসা করে আসছেন। তারা সাদেকুর রহমান ও তার ভাইদের নামে ষড়যন্ত্র মুলক দায়ের কৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।
এ ব্যাপারে রাউজান থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ জানান, মারামারির ঘটনার একটি মামলায় তাদের আটক করা হয়েছে। সাংবাদিক সাহেদুর রহমান মোরশেদ এর এক ভাই মুশফিকুর রহমান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই