ফরিদপুরে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করে সাবলম্বী হচ্ছে বেকার যুবকরা
মুসলমানদের সর্ববৃহত দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে স্বল্প সময়ের মধ্যে গরু মোটাতাজা করার লক্ষে ফরিদপুরে ছোট-বড় প্রায় ১৮শত খামার গড়ে উঠেছে। ১৮শত খামারে প্রায় ৫হাজার গরু লালন পালন করছে খামারিরা। ফরদপুরের বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখাগেছে খামারিরা ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারের গরু গুলোর প্রতি বাড়তি যতœ নিচ্ছেন তারা। শেষ সময়ে এসে খামারের গরুগুলো যেন সুস্থ্য ও সবল থাকে সেজন্য সার্বক্ষনিক ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করছেন।
সরেজমিনে শহরতলীর নরসিংহপুর এর আবু বাকারের খামারে গয়ে দেখা যায় ৪জন যুবক খামারে থাকা ১৬টি গুরুকে পরিচর্যা করছে। কথা হয় খামার মালিক বাকারের সাথে তিনি জানালেন, সংসারের সুখ-শান্তির জন্য পরিবার পরিজন রেখে বিদেশে গিয়েছলেন। বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করে কিছু টাকা নিয়ে দেশে ফিরেছেন।
দেশে এসে কিছুদিন বেকার অবস্থা কাটিয়ে ছেন। সম্প্রতি সময়ে ২৫একর জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন মৎষ খামার ও গরু মোটাতাজা করা খামার। এই খামারে ১২জন বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মৎষ খামারে ৭জন, গরুর খামারে ৪জন এবং ১জন মাহিলা রান্নার কাজের জন্য।
আবু বাকার জানালেন, তিন মাস আগে দেশী জাতের ২০টি গুরু ৬লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করে খামার শুরু করেছে। কর্মচারীদের বেতনসহ সবমিলিয়ে এবছর গরুর খামারে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৭হাজার টাকা। গরু মোটাতাজা করার জন্য ব্যবহার করছেন নিজের ২৫ একর জমির খামারের প্রচুর কাঁচা ঘাস, খড়, ভুষি, গমের ছাল, খৈল, খুদের ভাত, লালি গুড় সহ নানারকম সুষম খাদ্য উপাদান। তিনি আরও জানান কোন প্রকার ক্ষতিকারক ভারতীয় বিষাক্ত ট্যাবলেট বা ইনজেকশনসহ উচ্চমাত্রার ক্ষতিকার ওষুধ ব্যবহার করিনি।
আমার গরু সম্পূর্ণ দেশীয় খাদ্য দিয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে। আমি গত হাটে ৪টি গরু বিক্রয় করেছি ২লাখ ৪০হাজার টাকা। বাকি ১৬টি গরু আগামী হাটে বিক্রয় করার ইচ্ছে আছে। আসা করছি বাকী ১৬টি গরু প্রায় ৯লাখ টাকা বিক্রয় করতে পারব। তবে যদি এর মধ্যে ইন্ডিয়ান গরু ঢুকে তাহলে এই দামে গরু বিক্রয় করতে পারব না এবং আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ব। শুধু আমি একাই ক্ষতিগ্রস্থ হব না আমার সাথে সাথে অন্য খামারীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এবছর আমি খামার থেকে লাভবান হলে আগামীতে আরও বড় আকারে খামার গড়ে তুলব। সরকার আমাদের মতো ছোট খামারীদের সহজ শর্তে ঋণ দিলে আগামীতে দেশে গরুর ঘাটতি হবেনা। এমনকি আমরাও দেশের চাহিদা পুরন করে বিদেশে গরু রফতানি করতে পারব।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা প্রভাস চন্দ্র সেন জানান, ফরিদপুরে প্রায় ছোট-বড় ১৮শটির মতো গরু মোটাতাজা করার খামার আছে। আমরা নিয়মিত এসব খামারে গিয়ে তদারকি করেছি। তিনি আরও বলেন এ অঞ্চলের খামারিরা সঠিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করেছে। কোনো খামারি অবৈধ পন্থায় গরু মোটাতাজা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য চালু নেই