টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে যুবতীকে ধর্ষণ : ৪ দিন পর থানায় মামলা
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়া ফুলহারা গ্রামের সুমী আক্তার (২০) নামে এক যুবতী ধর্ষিত হয়েছে। সে গত ২২ জুলাই এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে মামার বাড়িতে যাওয়ার সময় ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষিতা ঘটনার ৪ দিন পর নিজে বাদী হয়ে গতকাল ঘাটাইল থানায় মামলা করেছে। পুলিশ সোমবার সকালে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মামলার অভিযোগ ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, মেয়েটি ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়া ফুলহারা গ্রামের মৃত ফরমান আলীর মেয়ে। তার মা পাগল হয়ে বর্তমানে নিখোঁজ রয়েছে। দুই বছর আগে একই উপজেলার চৌরাশা গ্রামের শহিদুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। সম্প্রতি সে স্বামী কতৃক তালাক প্রাপ্ত হয়। অসহায় এ মেয়েটি ঢাকায় একটি বাসায় গৃহ পরিচারিকার কাজ করত। ঈদে সে তার মামার নাম ছামাদ আকন্দের বাড়িতে বেড়াতে আসে। সেখান থেকে গত ২২ জুলাই সে পার্শবর্তী গোপালপুর উপজেলার পাকুয়া গ্রামে চাচার বাড়িতে অসুস্থ দাদীকে দেখতে যায়। সেখান থেকে সে এই দিনই সন্ধ্যা রাতে মামার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। বাড়ির কাছাকাছি খসর মিয়ার বাড়ির কাছে পৌছলে মেয়েটিকে একা পেয়ে ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়া ফুলহারা গ্রামের আবু হানিফ (৩৮) তার পথ রোধ করে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে সে রাজি না হলে হানিফ মেয়েটির মুখ বেঁধে তার তিন বন্ধু একই গ্রামের মোঃ নাসির উদ্দিন (২৫), সাইফুল ইসলাম(২৮), মোঃ কবির হোসেন(২৫)ও জিন্নাহকে (৪০) ফোন করে নিয়ে আসে। পরে আবু হানিফ (৩২) মেয়েটিকে সাবেক চেয়ারম্যান ছত্তার মিয়ার পুকুর পাড়ের সবজি ক্ষেতে নিয়ে যায়। চার বন্ধু সহায়তায় আবু হানিফ যুবতীটিকে সেখানে রাতভর ধর্ষণ করে।
ঘটনাটি ফাঁস হলে ধর্ষিতাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ধর্ষক হানিফ ও তার সহযোগীরা। তারা মেয়েটিকে চকের একটি স্যালোমেশিন ঘরে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে যায়। পরে মেয়েটি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বাড়ি ফিরে যায়।
পরের দিন ২৩ জুলাই লোক লজ্জার ভয়ে মেয়েপি আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তখন বিষয়টি বাড়ির লোকজন জানতে পারে। বাড়ির লোকজন এই দিন তাকে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যায়। তার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায় এবং থানায় মামলা না করার জন্য হুমকি দিতে থাকে। এ অবস্থায় বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে পড়লে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এলাকাবাসী মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসে। পরে ধর্ষিতা নিজে বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
ঘাটাইল থানার ওসি মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, এ ব্যাপরে ধর্ষিতা বাদী হয়ে মামলা করেছে। ধর্ষিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য চালু নেই