৯ মাস আগে ‘ধরে নেওয়া’ যুবক চট্টগ্রামের ‘জঙ্গি আস্তানায়’
চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে র্যাব, তাদের একজনকে নয় মাস আগে নীলফামারী থেকে ধরে নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের কর্নেলহাটে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ছবি টেলিভিশনে দেখে নিজের ছেলে নূরে আলমকে শনাক্ত করেন নীলফামারী শহরের উকিল মহল্লার বাসিন্দা নূর নাহার বেগম।
নীলফামারী সরকারি কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নূর আলম (২২)। তার বাবা আব্দুল কাদের কয়েক বছর আগে মারা যান।
নূর নাহার সাংবাদিকদের বলেন, এ বছরের ১১ এপ্রিল রাতে তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে প্রায় ৪০ জন ‘প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে’ এসে বাড়ি থেকে নূরে আলমকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
ছেলের সন্ধানে পরদিনই নীলফামারী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন নূর নাহার। তবে তার কোনো খবর বের করতে পারেনি পুলিশ।
নীলফামারী সদর থানার ওসি মো. বাবুল আকতার বলেন, “ছেলে নিখোঁজ রয়েছেন উল্লেখ করে গত ১২ এপ্রিল থানায় একটি জিডি করেছিলেন নূর নাহার।
“চট্টগ্রামে র্যাবের অভিযানে আটক নূরে আলম নীলফামারীর উকিল মহল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া নূরে আলম বলে তার পরিবারের লোকজন এখন নিশ্চিত করেছেন।”
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের কর্নেল হাট এলাকায় একটি বাড়ি ঘিরে কয়েক ঘণ্টা অভিযান চালানোর পর বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ পাঁচজনকে আটকের খবর জানায় র্যাব।
আটক ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজিবি) সদস্য বলে দাবি করা হয় র্যাবের এক সংবাদ সম্মেলনে, যাতে ঢাকা থেকে গিয়ে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান।
র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক কিংবা কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে আগে তুলে নেওয়ার অভিযোগ আগেও এসেছে।
তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা প্রত্যাখ্যান করেছে। চট্টগ্রামে নূরে আলমকে আটকের ক্ষেত্রেও একই বক্তব্য এসেছে অভিযান পরিচালনাকারী র্যাব-৭ এর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
নূর নাহারের অভিযোগের বিষয়ে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতা উদ্দিন বলেন, “অনেকে অনেক কিছু বলে, তবে এই ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই।”
এই বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব এই বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব তিনি বলেন, কর্নেল হাটের এই বাসাটি গত মাসের মাঝামাঝিতে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল।
“তাদের (আটক) কাছ থেকে পাঁচটি বাসের টিকেট পাওয়া গেছে। তারা কেউ ২৩ তারিখে (নভেম্বর) কেউ ২৪ তারিখে চট্টগ্রামে এসেছে।”
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নূরে আলম মুফতি মাইনুল ইসলাম কর্তৃক পরিচালিত ‘৩১৩ বদরের সৈনিক’ নামক জঙ্গি গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য ছিল। মুফতি মাইনুল ইসলাম সদলবলে র্যাব কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর কিছুদিন নিস্ক্রিয় থেকে পুনরায় জঙ্গি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ শুরু করে।”
মন্তব্য চালু নেই