৮২-র কলঙ্কের ইতিহাসের ছায়ায় কোয়ার্টার ফাইনালে লড়াই জার্মানি-ফ্রান্সের

দিলীপ মজুমদার (কলকাতা): ৮২-র বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স-পশ্চিম জার্মানি৷ পশ্চিম জার্মানির গোলরক্ষক শ্যুমাখার বল ছেড়ে কুং-ফু চার্জ করেছিলেন ফ্রান্সের ব্যাটিস্টনকে৷ রেফারির চোখ এড়িয়ে গেলেও টেলিভিশনে ধরা পড়েছিল সেই কুখ্যাত দৃশ্য৷ ৩২ বছর পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফের মুখোমুখি ফ্রান্স-জার্মানি৷ এবার লক্ষ্য, তিন দশকের কলঙ্কমোচন৷
জেরার্ড হউলিয়ার বলছেন, সেই ঘটনার পরই ফ্রান্সবাসী ফুটবলকে ভালবাসতে শুরু করে৷ ৮৪ সালে ইউরো কাপ জয়ের মূল কারিগরও সেই ঘটনা৷ এমনকি অনেকে বলেন, ৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের দুর্দান্ত জয়ের নেপথ্যেও নাকি এই বিস্মৃতপ্রায় অধ্যায়৷
সময়- ১৯৮২ সালের ৮ জুলাই৷ স্থান- স্পেনের সেভিল৷ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পরস্পর মুখোমুখি পশ্চিম জার্মানি এবং ফ্রান্স৷ পেনাল্টিতে ৫-৪ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় পশ্চিম জার্মানি৷ কিন্তু এই হারা ম্যাচই ফুটবলের উন্মাদনা বয়ে আনে ফ্রান্সে৷ এই ম্যাচেই ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড প্যাট্রিক ব্যাটিস্টনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাত হয় পশ্চিম জার্মানির গোলরক্ষক হেরাল্ড শ্যুমাখারের৷ ধাক্কা খাওয়ার পর মাঠেই ব্যাটিস্টন সংজ্ঞা হারান৷ তাকে স্ট্রেচারে মাঠ থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ মাঠেই পড়ে থাকে তাঁর দুটি দাঁত৷ হাসপাতালে পরীক্ষার পর জানা যায় ব্যাটিস্টনের পাজর চুরমার৷ যদিও রেফারি কোনও ফাউল দেননি! গোটা স্টেডিয়াম স্তব্ধ এই ঘটনায়৷ সেই সময় টিভিতে খেলা দেখা দর্শকরাও কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কেন এই ঘটনা ঘটালেন জার্মান গোলরক্ষক! রেফারি লালকার্ড দেখালেন না কেন? কেন দেওয়া হল না কোনও ফাউল! টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে বল ছেড়ে শ্যুমাখার নিয়ম বহির্ভূতভাবে কুং-ফু চার্জ করেছিলেন ব্যাটিস্টনকে৷ অথচ তা চোখ এড়িয়ে গেল রেফারির!
প্রাক্তনিদের অভিমত, এই ঘটনার পরই ফ্রান্সে ফুটবল অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে৷ ফ্রান্সের জনগণ এই ঘটনাটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবেই দেখে আরও বেশি একাত্মবোধ করতে শুরু করে ফুটবলের লড়াইয়ের সঙ্গে৷ ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ৩২ বছর৷ বিশ্বকাপের মঞ্চে ফের মুখোমুখি জার্মানি, ফ্রান্স৷ এবার কোয়ার্টার ফাইনাল৷ ইউরোপিও ফুটবলের দুই সুপার পাওয়ারের ডু অর ডাই ম্যাচ তাই আবার ফেরাচ্ছে ৮২-র কলঙ্কের স্মৃতি৷ তবে এবার লক্ষ্য কলঙ্কমোচন৷



মন্তব্য চালু নেই