৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ স্মরণে ৭১ ফুট দূর্গাপূজার প্রতিমা নোয়াখালীতে
এম.এ আয়াত উল্যা, স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী : দূর্গা পূজা এখন ধর্মী আবেগকে সঙ্গী করে উৎসবে রূপ নিয়েছে। তার প্রমাণ বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনী বাজার। চমক জাগানো প্রতিমায় প্রতিবছর এখানের পূজায় সারাদেশ থেকে পূজার্থীরা জড়ো হন। থাকেন অন্য ধর্মের দর্শণার্থীরাও। তাইতো পূজার্থী ও দর্শণার্থীদের চমকে দিতে এবার বিজয়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির তাদের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বানিয়েছেন দেশের মধ্যে দূর্গার সবচেয়ে বড় প্রতিমা। ৭১ ফুট দীর্ঘ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে স্মরণেই এ আকার। এখন শুধু অপেক্ষা পূজোর ক্ষণ গণনায়।
এবারের পূজা উপলক্ষে চৌমুহনী কলেজ রোড়ের রামেন্দ্র সাহার বাড়ির সামনের এই বিশাল প্রতিমার খবর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে দেশ-বিদেশে। এ প্রতিমায় পূজা দিতে সারাদেশের হিন্দুধর্মালম্বীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। অন্যদিকে মহামিলন ঘটবে দর্শণাথীদের এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজক কমিটির। চৌমুহনী কলেজ রোডে অবস্থিত এক সময়ের জমিদার রামেন্দ্র সাহার বাড়ির সামনের চত্বরে বিশাল আকারের ৭১ ফুট প্রতিমার আনুষাঙ্গিক শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত দেখা গেছে কারিগরদের।
দিনে-রাতে সমান তালে চলছে কাজ। বিশাল এই প্রতিমা নির্মাণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শরীয়তপুর জেলা থেকে আসা প্রতিমা কারিগর অমল কৃষ্ণ পাল। গত ৪০ বছর ধরে তিনি প্রতিমা তৈরীর কাজ করলেও এবারই তিনি এই বিশাল আকারের প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন বলে জানান।
অমল কৃষ্ণ পাল আরো জানান, ১৯৭৪ সালে ছাত্রজীবন থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করলেও এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠ প্রতিমা। এর আগে বাংলাদেশের কোথাও এতো বড় দূর্গার প্রতিমা তৈরি করা হয়নি। ১২ জন সহযোগী ও কারিগর নিয়ে গত আড়াই মাস ধরে তিনি এ কাজ করছেন।
বিজয়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির কোষাধ্যক্ষ রনি সাহা জানান, গত বছর পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতার দেশ প্রিয় পার্কে ৮৭ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরি করা হলেও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান রেখে এই প্রথম ৭১ ফুট দীর্ঘ দেবী মায়ের প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। ২০ বছর পূর্তিতে এ বিশাল প্রতিমা তৈরী করার মধ্যে দিয়ে সারাবিশ্বে প্রমাণ করা হবে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।
তাছাড়া প্রতি বছর বিজয়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের পক্ষ থেকে তারা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেন। বিজয়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্রী শান্তনু সাহা জানান, ৭১ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরীতে বাজেট ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা।
প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে মন্ডপ এবং লাইটিং সহ এ খরচ অর্ধকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সহ-সভাপতি তপন চন্দ্র মজুমদার আশা প্রকাশ করে জানান, দূর্গোৎসব উপলক্ষে তাদের এই বিশাল আয়োজন শুধু নোয়াখালীতে নয় সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মানুষ এটি দেখার জন্য আসবেন। তবে পূজোর শেষ দিন পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মন্তব্য চালু নেই