এও সম্ভব!

৪৪ বছর ভারতে থেকেও বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্র পেলেন !

দীর্ঘ ৪৪ বছর ভারতে বসবাস করেও বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্র পেলেন এক ব্যক্তি। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দকাটি গ্রামে।
তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দকাটি গ্রামে উদ্ধব চন্দ্র সরকারের ছেলে তপন কান্তি সরকার (৬০) সালে দেশবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ১৯৭১ সালের পর দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। সেই থেকে তিনি সেখানে লেখাপড়া শেষ করে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার গোড়িয়ার সরকারী বারাট সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) এর সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী পদে কর্মরত আছেন।
তথ্যানুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ২০১৫ সালের বিধিান সভার নির্বাচনে দক্ষিণ ফরতাবাদ, ২৬ নং ওয়ার্ডের সোনাপুর ৭০০০৮৪ ভোটার তালিকার ৬ নম্বর পাতায় ১৩৫ ভোটার তিনি। তার পরিচিতি নম্বর এল এম ডব্লিউ ৪৬৯৩৯৯০। তার ভারতীয় বাড়ী নং-এন ০০৬৭। তার ভারতীয় পাসপোর্ট নং এফ ০১৩৯০৬৮। এমনকি ভারতে এক নারীকে ধর্ষন ও পাশবিক নিযাতনের অভিযোগে সোনারপুর থানায় দায়েরকৃত মামালায় দীর্ঘদিন কারাভোগও করেন তপন কান্তি সরকার।
অথচ ভারতীয় নাগরিকত্ব গোপন করে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় বাংলাদেশী ভোটার হিসেবে নাম অর্ন্তভূক্তি করেছেন তিনি। এমনকি কেউ জানা বোঝার আগে তড়িঘড়ি করে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঢাকা জাতীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে তার পরিচয়পত্রও নিয়ে নিয়েছেন তিনি। যার নং- ৮৭১১৫৫০০০০৫৪।
বিষয়টি জানার পর কালিগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের দেবদাস সরকার কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় নির্বাচন অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তপন কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে প্রমানপত্রসহ লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে কালিগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সেলিম বিষয়টি তদন্ত করেন।
এ বিষয়ে দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে তপন কান্তি সরকার ভারতে বসবাস করেন। সেখানে তিনি সরকারি চাকুরী করেছেন। সম্প্রতি তিনি সেখানে নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। তিনি ১৯ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেও তাকে কখনও দেখেননি।
জনপ্রতিনিধির সম্মতি ছাড়া কিভাবে তিনি ভোটার হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল ইসলাম জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য রামপদ বাবু থেকে তার ভোটার লিস্টে নাম তুলতে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও জানান গোবিন্দকাটি গ্রামের বলাই কৃষ্ণ সরকারের ছেলে রমেন্দ্র নাথ সরকারকেও ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ভোটার করা হয়েছে। রমেন্দ্র নাথ সরকারও ১৯৭১ সালের পর থেকে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। এবং সেখানে সরকারি চাকুরী করেন।

দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রামপদ সরকার বলেন, তপন কান্তি সরকার ভারতে বসবাস করলেও মাঝে মধ্যে এখানে বেড়াতে আসেন। যে কারনে তাকে তিনি ভোটার হতে সহযোগিতা করেছেন। এটি বে-আইনী কিনা এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবী করেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সেলিম বলেন, তদন্ত করে তপন কান্তি সরকার যে ভারতীয় নাগরিক তার সত্যতা পেয়েছেন। তদন্ত রিপোর্টটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জানান, তদন্ত রিপোর্টে দোষী প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই