ঝিনাইদহের কিছু খবর :

২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ১৯তম দিনে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ১৯ তম দিনে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সকাল ১০টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়।

অবরোধের সমর্থনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মসিউর রহমান নেতৃত্বে একটি মিছিল ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে হরিনাকুন্ডু -ঝিনাইদহ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন হাটখোলায় শেষ হয়। মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জনাব মসিউর রহমান। জনাব মসিউর রহমান বলেন বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত ৭ দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার অঙ্গীকার করেন।

এদিকে ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত নাশকতার আশংখায় ২০ দলীয় জোটের ৯জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঝিনাইদহের জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন জানান অবরোধে নাশকতা ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 

 

কালীগঞ্জে চিনি শিল্প রক্ষার স্বার্থে এবং আখ থেকে উৎপাদিত চিনি বিক্রি বৃদ্ধির লক্ষে মানববন্ধন ও মৌন মিছিল
ঝিনাইদহের কালীগেঞ্জর মোবারকগঞ্জ সুগারমিলের শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা ও এলাকার জনগন মৌন মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। শনিবার সকাল ১১ টার দিকে চিনি শিল্প রক্ষার স্বার্থে, আখ থেকে উৎপাদিত চিনি বিক্রি বৃদ্ধির লক্ষে এ মানববন্ধন ও মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি চিনিকল থেকে শুরু করে সারা শহর প্রদক্ষিন করে।

মিছিল শেষে মেইন বাসস্ট্যান্ডে এসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুল আজীম আনার।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মিলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শহিদুল ইসলাম, কারখানা ব্যবস্থাপক নওশেরুজ্জামান, আখচাষী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জহুরুল ইসলাম, মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম নবী, সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান, কর্মচারী কবীর হুসাইন প্রমুখ।মানববন্ধনে এমপি আনার বলেন, যেকোন মূল্যে মোবারকগঞ্জ চিনিকলকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মিলের উৎপাদিত আখের চিনি উৎকৃষ্ট মানের, মিষ্টি বেশি, সুস্বাধু ক্ষতিকর ক্যামিক্যালমুক্ত ও স্বাস্থ্য সম্মত।

তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিলের চিনি বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত কালীগঞ্জে বাইরের চিনি বিক্রি করতে দেয়া হবে না। তিনি মিলকে বাঁচানোর স্বার্থে ব্যবসায়ীদের বাইরে চিনি বিক্রি বন্ধ করে দিয়ে মিলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি করার জন্য আহবান করেন।

 

কালীগঞ্জে চাঁদা না দেওয়ায় কৃষকের বাড়িতে তালা দিয়েছে আওয়ামী কর্মী
দাবিকৃত ৩০ হাজার টাকা না পেয়ে কৃষক আনোয়ার হোসেনের বাড়ির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে এক আওয়ামীলীগ কর্মী। গতকাল দুপুরে যখন তারা ঘরে বসে খাবার খাচ্ছিলেন তখন তাদের বের করে দিয়ে এই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এখন কৃষক আনোয়ার হোসেন বৃদ্ধা বাবা-মা আর স্ত্রীকে নিয়ে অন্যের ঘরের বারান্দায় রাত কাটাচ্ছেন। কৃষক আনোয়ার হোসেন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার সোনালীডাঙ্গা গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র।

কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, তার জমির সিমানার মধ্যে ছিল আব্দুল ওয়াদুদ এর একটি ঘর। আব্দুল ওয়াদুদ আওয়ামীলীগের সক্রিয় কর্মী। তিনি বেশ কিছু দিন থেকেই এই ঘরটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য আব্দুল ওয়াদুদকে অনুরোধ করে আসছিলেন। কিন্তু তিনি ঘর না সরিয়ে আনোয়ার হোসেনের উপর ক্ষিপ্ত হন। আনুমানিক দেড় মাস পূর্বে আব্দুল ওয়াদুদ তার মাটির ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। সেখানে যাবার পর তার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। বলেন ঘর সরাতে তার এই টাকার ক্ষতি হয়েছে। আনোয়ার হোসেন জানান, এই টাকার জন্য তার উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, কিছু টাকা তিনি দেবেন তবে সময় দিতে হবে। এই টাকা না দেওয়ায় ৩/৪ দিন পূর্বে আব্দুল ওয়াদুদ আবার বাড়ি ফিরে এসেছেন। একটি টিনের ঘর দিয়ে তার পথ আটকে দিয়েছেন। পাশাপাশি মঙ্গলবার বিকালে তার বাড়ি বাড়ির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

এ সময় তিনি ঘরে বসে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। তাকে তাড়িয়ে বের করে দিয়ে এই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আনোয়ার হোসেন আরো জানান, ঘরে তালা ঝুলাবার পর তাকে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যে কারনে রাতে তিনি অন্যত্র ছিলেন। আর তার বৃদ্ধা বাবা লাল মিয়া, মা হামিদা বেগম ও স্ত্রী বর্ষা বেগম অন্যের ঘরের বারান্দায় রাত কাটিয়েছেন। সোনালীডাঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েক জনের সাথে কথা বললে বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, আনোয়ার হোসেনের জায়গার মধ্যে আব্দুল ওয়াদুদের ঘর পড়েছে। এটা নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেওয়া উচিত। তিনি নিজে ঘর সরিয়ে এখন সরানো খরচ বাবদ অন্যের কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে। এটা ঠিক হয়। আব্দুল ওয়াদুদ আওয়ামীলীগের কর্মী হওয়ায় গ্রামের আওয়ামীলীগ সমর্থকরা এই টাকা দেওয়ার বিষয়টি বিএনপি কর্মী আনোয়ার হোসেনের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। অবশ্য সোহেল রানা ওরফে মুক্তি নামের এক প্রভাবশালি আওয়ামীলীগ কর্মী জানান, আনোয়ার টাকা দিতে চেয়ে দিচ্ছেন না। যে কারনে তালা লাগানো হয়েছে। এটা একার নয় অনেকের সিদ্ধান্তে হয়েছে।

এ ব্যাপারে আব্দুল ওয়াদুদ জানান, আনোয়ার হোসেনের জমিতে তার ঘর পড়ে যাওয়ায় সে নিজেই ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। আর অন্যত্র ঘর করার জন্য ৩০ হাজার টাকা দেবার কথা স্বীকার করেছে। এখন টাকা দিচ্ছে না। যে কারনে তিনি ঘরে তালা দিয়েছেন। টাকা পেলে ঘর খুলে দেবেন বলে জানান।



মন্তব্য চালু নেই