২০১৫ সালের সেরা ২০ প্রযুক্তি (দেখুন ছবিতে)

বছর শেষ হতে চললো। প্রযুক্তির অগ্রগতিও থেমে নেই। নতুন নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে বাজার রমরমা। খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মোবাইল, ল্যাপটপ, ব্লুটুথ স্পিকার, ক্যামেরা, গাড়ি ও ঘড়ি। তাছাড়াও এবছর প্রযুক্তিতে বেশ সারা জাগিয়েছে হোভারবোর্ড ও ড্রোন। প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবল ২০টি প্রযুক্তি পণ্যকে পুরস্কৃত করেছে ২০১৫ এর সেরা প্রযুক্তি হিসেবে।
ম্যাশেবল চয়েজ হিসেবে পুরষ্কার পাওয়া ডিভাইসগুলো নিজেদের ক্যাটাগরিতে পারদর্শীতা, মান, কোয়ালিটি ও ফাংশন বিতরণে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার।
একনজরে দেখে নেয়া যাক ২০১৫ সালের সেরা প্রযুক্তিগুলোকে।
২০. তালিকার সর্বশেষে রয়েছে ডেলের ল্যাপটপ এক্স পি এস ১৩। আকর্ষণীয় সব ফিচার সহ এই ল্যাপটপটি ১৩ ইঞ্চির। ১৩ ইঞ্চি হওয়ার পরেও ১২ ইঞ্চির ল্যাপটপের খোলসে এটা আরামসে এঁটে যাবে। উইন্ডোজ ল্যাপটপ গুলোর মধ্যে এই মডেলটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
১৯. ল্যাপটপের আগে আছে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৬। অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত সেরা স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে এস ৬ এর অবস্থান শীর্ষে। ৫.১ ইঞ্চির এই ফোনে ১৬ মেগা পিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা রয়েছে। ৫৭৬ পিক্সেল পার ডেনসিটির এই মোবাইলে অক্টা কোর প্রসেসরের সাথে আছে ৩ জিবি র্যাম।
১৮. স্যামসাং ফোনের একধাপ আগে রয়েছে এলজি জি ফোর স্মার্টফোনটি। অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত সেরা স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে জি ফোর ও এগিয়ে আছে। ৫.৫ ইঞ্চির এই ফোনে ১৬ মেগা পিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা রয়েছে। ৫৩৮ পিক্সেল পার ডেনসিটির এই মোবাইলে হেক্সা কোর প্রসেসরের সাথে আছে ৩ জিবি র্যাম। এর বিল্ট ইন মেমোরি ৩২ জিবি।
১৭. এ বছরের নতুন উদ্ভাবনের মধ্যে রয়েছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর। স্যামসাং এর নির্মিত স্যামসাং গিয়ার ভি আরের স্থান রয়েছে ১৭ তে। প্লে স্টেশন দ্বারা গেম খেলা যায় এমন ভিআর গুলো স্যামসাং ছাড়া অন্য কোন প্রতিষ্ঠান এখনো বাণিজ্যিকভাবে নির্মাণ শুরু করেনি। মাত্র ৯৯ ডলার অথবা বাংলাদেশী টাকায় ৭ হাজার ৭০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এই ডিভাইসটি। এটি ওজনে হালকা, এবং চারটি ফোন দিয়েই এই ভিআর চালানো যায়।
১৬. ১৬ তম স্থানে রয়েছে অ্যাপলের নিউ ম্যাক বুক। ১২ ইঞ্চির রেটিনা ডিসপ্লেসহ ম্যাকবুকটির রয়েছে ৯ ঘন্টা দীর্ঘ ব্যাটারি ব্যাকআপ। টানা ৯ ঘণ্টা ওয়েব ব্রাউজ করলেও ল্যাপটপটির ব্যাটারি ব্যাকআপ দেবে। এতে রয়েছে ইউএসবি সি পোর্ট। অ্যাপল ম্যাক বুকটির মূল্য ১ হাজার ২৯৯ ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ১ লক্ষ ১ হাজার টাকা।
১৫. ১৫ তম স্থানে রয়েছে এবছরের সারা জাগানো প্রযুক্তি ডিজেআই ফ্যানটম ৩ স্ট্যান্ডার্ড। এই ড্রোনটি ক্যামেরা বহনের জন্য দারুণ। ড্রোনটি সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং ড্রোনটির সাথে একটি এইচ ডি ক্যামেরা রয়েছে।
১৪. অ্যাপল ওয়াচ রয়েছে ১৪ তম স্থানে। অ্যাপলের এই স্মার্টওয়াচটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, কার্যকরীতায় রয়েছে সুনিপুণ দক্ষতা। দুটি সাইজে তৈরি এ স্মার্ট ওয়াচের ব্যান্ডে রয়েছে নানা স্টাইল। ৩৪৯ ডলার থেকে শুরু করে ১৭ হাজার ডলার পর্যন্ত এই স্মার্ট ঘড়ির মূল্য।
১৩. গেম খেলতে কে না পছন্দ করে? আর যে খেলনা খেলার সাথে সাথে কাজও সম্পাদন করবে তার মজাই আলাদা। বিখ্যাত গেম টুল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডিজনি এবং তার টয় পার্টনার মিল্কিং মিলে বানিয়েছে এসপি হিরো বিবি-৮। এই গেমটি ১৩ তম স্থান পেয়েছে সেরা প্রযুক্তি সাঁরিতে। এই খেলনাটাকে স্মার্টফোন অথবা আইফোনের অ্যাপস দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই খেলনার উপরে রয়েছে একটি শক্তিশালি ক্যামেরা যা চলতি পথে দ্রুততার সাথে যে কোনো ধরণের ছবি তুলতে সক্ষম।
১২. হার্ডডিস্কের সবচে উন্নত সংস্করণ এসেছে চলতি বছরে। এসএসডি বা সলিড স্ট্রেট ড্রাইভ যেমনি হালকা ও পাতলা তেমনি কার্যদক্ষতায় তার রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। স্যামসাংয়ের পোর্টেবল এসএসডি টি১ এর স্থান ১২তম। এই এসএসডিতে ৩ জিবি ওজনের একটি ফাইল ট্রান্সফার করতে সময় লাগে মাত্র ৮ সেকেন্ড। ১৫ জিবির একটি ৪র্থ জেনারেশনের মুভি অ্যাপল ল্যাপটপ থেকে স্যামসাংয়ের এই এসএসডিতে ট্রান্সফার করতে সময় লেগেছে মাত্র ৩৭ সেকেন্ড। উচ্চ মূল্যের এই এসএসডির মূল্য ৫০০ ডলার বা ৩৯ হাজার টাকা।
১১. হারিয়ে যাওয়া ফিল্ম ক্যামেরার বিকল্প হিসেবে এসেছে পোলারয়েড স্ন্যাপ ডিজিটাল ইন্সট্যান্ট ক্যামেরা। এই ক্যামেরাটির অবস্থান ১১ তে। ক্যামেরাটির মূল্য ৯৯ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় ৭ হাজার ৭০০ টাকা। মুহূর্তেই ফটো স্টিকার সহ ছবি প্রিন্ট করা যায় এই ক্যামেরা দিয়ে। এই ক্যামেরাটিতে ছবি সংরক্ষণ করার জন্য এসডি কার্ড ব্যবহার করা যায়।
১০. প্রযুক্তির সারিতে গুগলের কিছু থাকবে না এমনটা ভাবাই যায় না। গুগলের ফোন নেক্সাস ৬ এর অবস্থান ১০ নম্বর অবস্থানে। স্মার্টফোনের সকল সুযোগ সুবিধা সহ ফোনটির বডি মেটাল দিয়ে তৈরি। এর স্ক্রিন কোয়াড এইচডি। অ্যানড্রয়েডের সর্বশেষ ভার্সন মার্সম্যালো দিয়ে ফোনটি পরিচালিত। এই ফোনটির দাম ৪৯৯ ডলার বা বাংলাদেশী টাকায় ৩৮ হাজার ৯০০ টাকা।
০৯. মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১০ চলতি বছরে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। সবচে মজার ব্যাপার হল উইন্ডোজ ৭, ৮ বা ৮.১ ব্যবহারকারীদের জন্য এই অপারেটিং সিস্টেম বিনামূল্যে দিচ্ছে মাইক্রোসফট কোম্পানি। সেরা প্রযুক্তি নির্ণয়ে ম্যাশেবল এই প্রতিষ্ঠানটিকে দিয়েছে নবম স্থান। এই অপারেটিং সিস্টেম পিসি এবং মোবাইলে সমান তালে চলবে। এর ইন্টারফেসটি চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে। উইন্ডোজ ৮ এবং ৮.১ এর সমস্যা সমাধান করে এটি বানানো হয়েছে আরও দ্রুততর করে।
০৮. অষ্টম স্থানে রয়েছে অ্যাপল টিভি। টিভি বলতে শুধু একটি বক্স আর রিমোট। নিউ অ্যাপল টিভিতে রয়েছে টিভি প্রোগ্রাম রেকর্ড করার শিডিউল সুবিধা। এর রিমোট কন্ট্রোলটি গ্লাস টাচ প্যাডের। ৩২ জিবি মেমোরি সহ এই অ্যাপল টিভির দাম ১৪৯ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় ১১ হাজার ৬০০ টাকা।
০৭. সপ্তম স্থানে রয়েছে স্যামসাংয়ের স্মার্টওয়াচ স্যামসাং জিয়ার এস ২। গোলাকার ধরণের এই স্মার্টওয়াচে ব্যবহার করা যাবে স্যামসাং স্মার্টফোনের সব সুযোগ সুবিধা। এবং এই ঘড়িটি পরতেও বেশ আরাম। নিজের শার্টের সাথে মিলিয়ে ইচ্ছে মতো এর বেল্ট বদলানো যায়। এটি অ্যাপলের স্মার্ট ওয়াচের চেয়ে সস্তা। স্পোর্টস ঘরানার এই স্মার্ট ওয়াচটির দাম ২৯৯.৯৯ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় ২৩ হাজার ৪০০ টাকা।
০৬. ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে বছরের নজরকারা প্রযুক্তি হোভারবোর্ড। যদিও অনেক দেশে এখন হোভারবোর্ড নিষিদ্ধ। হাঁটা চলাকে ক্লান্তিহীন করার জন্যই এই প্রযু্ক্তি। সাগাওয়ের উদ্ভাবিত হোভারবোর্ডটির মডেল এক্স ১। মাত্র ৪০০ ডলারেই মিলবে এই হোভারবোর্ড। বাংলাদেশী টাকায় ৩১ হাজার ২০০ টাকা।
০৫. পঞ্চম স্থানে রয়েছে আইফোন সিক্স এস বা সিক্স এস প্লাস। আইফোনের এই দুই ফ্ল্যাগশিপ আইফোন গ্রাহকদের মন জয় করেছে। পাতলা ডিজাইনের এই ফোনগুলোতে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির সব সুযোগ সুবিধার সঙ্গে থ্রিডি টাচ। ফোনগুলোর পেছনে রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা এবং সামনে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। এই মোবাইল গুলো দিয়ে ৪ কে ভিডিও ধারণ করা যায়।
০৪. গাড়ির জগতে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, জাগুয়ারের সাথে ভলভো গাড়িরও রয়েছে জনপ্রিয়তা। মার্সিডিজ বেঞ্জের মতো স্পিড, বিএমডব্লিউর মতো ব্রেক, জাগুয়ারের মতো পরিচালনা এবং আরামদায়ক ভ্রমণ পাওয়া যাবে ফ্যামিলি কার লুকিংয়ের ভলভো ভি ৬০ পোলস্টারে। সেরা প্রযুক্তি রেটে এর অবস্থান চতুর্থ।
০৩. প্রযুক্তি নিয়ে র্যাংকিং হলে সেখানে প্যাড বা ট্যাব থাকতেই হবে। অ্যাপলের আইপেড প্রো সেরা প্রযুক্তি সাঁরিতে তৃতীয়। আইপ্যাড প্রো প্যাডের মধ্যে সবচে বড় ডিসপ্লের। স্মার্ট কি-বোর্ড এবং অ্যাপল পেন্সিলের সাথে যুক্ত হয়ে আইপ্যাড প্রো পরিণত হয় শক্তিশালি কাজ সম্পাদনের ডিভাইস হিসেবে। এই আইপেড দিয়ে ৪ কে ভিডিও এডিট করা যায়।
০২. মাইক্রোসফটের সারফেজ বুক প্রযুক্তি সারিতে দ্বিতীয়। এই ল্যাপটপের রয়েছে আল্ট্রা পোর্টাবলিটি। ম্যাগনেশিয়াম দিয়ে তৈরি এই ল্যাপটপটি ট্যাব এবং ল্যাপটপ উভয়ভাবেই ব্যবহার করা যায়। এর রয়েছে টার্বো চার্জড সম্পন্ন ব্যাটারি। এর বিল্ট ইন পেনটি অন্য যে কোন স্টাইলাসের চেয়ে অধিক কার্যক্ষমতা সম্পন্ন। মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেমে চলা ল্যাপটপগুলোর মধ্যে এই ল্যাপটপটি শীর্ষে রয়েছে।
০১. প্রযুক্তি সারির প্রথম যে হবে তার থাকবে আলাদা বৈশিষ্ট্য। ম্যাশেবল ওয়েবসাইট তাদের সেরা প্রযুক্তির সারিতে প্রথম স্থান দিয়েছে অ্যামাজনের তৈরি অ্যামাজন ইকো ব্লুটুথ স্পিকার। এই স্পিকারে রয়েছে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট। আপনার কন্ঠস্বর দ্বারা এই স্পিকারকে প্লে, পস, নেক্সট, প্রিভিয়াস করা যাবে। এটি আবহাওয়া এবং পত্রিকার হেডলাইন পড়ার ক্ষমতা রাখে। সবচে মজার ব্যাপার হলো অ্যাপল প্রযুক্তি নির্মাণে সবচে এগিয়ে থাকলেও অ্যামাজন বানিয়েছে এই ব্লুটুথ স্পিকার অ্যাপলের আগেই। এই ডিভাইসের মূল্য ১৭৯.৯৯ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় ১৪ হাজার টাকা।
মন্তব্য চালু নেই