২০১৫-এর সবচেয়ে দামি ১০ মডেল
পেশার দিক থেকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ মডেলিং। ক্যারিয়ার নিয়ে সব সময়ই অনিশ্চয়তায় ভোগেন মডেল তরাকারা। একটু ঊনিশ-বিশ হলেই তলানিতে গিয়ে ঠেকবে তারকা খ্যাতি! কিন্তু সব কিছু ঠিক থাকলে যশ, খ্যাতি সঙ্গে অর্থ সব পাওয়া সম্ভব মডেলিং করে।
মডেলিং ক্যারিয়ারে এমন কয়েকজন তারকা রয়েছেন যারা ২০১৫ সালে আয় করে নিয়েছেন বেশ বড় অংকের অর্থ। পাশাপাশি যশ-খ্যাতি তো ছিলই। ২০১৫ সালের সবেচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া শীর্ষ ১০ মডেল:
১. গিজেল বুন্ডশেন : আয় ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
ব্রাজিয়ান মডেল, অভিনেত্রী এবং প্রযোজক গিজেল ক্যারোলিন বান্ডচেন। নব্বইয়ের দশকে মডেলিং শুরু করেন তিনি। ১৯৯৯ সালে মডেলিংয়ে ‘হিরোইন চিক’ যুগের অবসান করেন এ তারকা মডেল। ২০০০ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট মডেলসে অংশ নেন তিনি। ২০০৪ সালে ট্যাক্সি এবং ২০০৬ সালে দ্য ডেভিল ওয়ার্স প্রাডা সিনেমায় পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। রেড ক্রস, সেভ দ্য চিল্ড্রেন এবং ডক্টরস উইদাউট বোর্ডার দাতব্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আছেন গিজেল।
২. কারা ডেলেভিঙ্গে : ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
২০১৫ সালের শীর্ষ দশ পারিশ্রমিক পাওয়া মডেলের তালিকায় রয়েছেন কারা ডেভেলিঙ্গে। তিনি একাধারে সুপারমডেল, অভিনেত্রী এবং গায়িকা। ১০ বছর বয়সে মডেলিংয়ে অভিষেক হয় তার। এরপর ২০০৯ সালে লেখাপড়া ছেড়ে স্ট্রোম মডেল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০১২ এবং ২০১৪ সালে ব্রিটিশ ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ডে মডেল অব দ্য নির্বাচিত হয়েছেন কারা ডেলেভিঙ্গে। ডোলেস অ্যান্ড গ্যাবানা, বারবেরি, মুলবেরি এবং জ্যাসন-উ সহ বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য ফ্যাশন হাউজের হয়ে র্যা ম্পে হাজির হয়েছেন তিনি। অ্যানা ক্যারেনিনা (২০১২), পেপার টাউন্স (২০১৫) এবং সুইসাইড স্কোয়াড সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছাড়া টেইলর সুইফটের ব্যাড ব্লাড মিউজিক ভিডিওতে দেখা গেছে তাকে। আস্ক ম্যান জরিপে সবচেয়ে আবেদনময়ী নারীর তালিকায় ১৩ তম অবস্থানে রয়েছেন কারা ডেলেভিঙ্গে।
৩. অ্যারিয়ানা লিমা : ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
ব্রাজিলিয়ান মডেল অ্যারিয়ানা লিমা। ২০১০ সাল থেকে মেবেলাইন কসমেটিকসের মুখপাত্র হয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া ২০০৩ সাল থেকে সুপার বোল এবং ২০০৯ সাল থেকে কিয়া মটর্সেরও মুখপাত্র তিনি। এ তারকা মডেল বেশি পরিচিতি পান ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট মডেল হিসেবে। প্রথম যখন স্কুলে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন তখন থেকেই মডেল হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন লিমা। ১৫ বছর বয়সে ফোর্ড সুপার মডেল অব ব্রাজিল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। পরবর্তীতে ফোর্ড সুপারমডেল অব ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হন। এরপর তিনি নিউ ইয়র্কে চলে যান এবং এলিট মডেল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। সেখান থেকেই তার পথচলা শুরু হয়।
৪. ডয়েটজেন ক্রোয়েস : ৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
২০১৫ সালের শীর্ষ দশ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত মডেলের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছেন ডয়েটজেন ক্রোয়েস। ছেলেবেলায় স্পিড স্কেটিংয়ে শখ থাকলেও একটু বড় হওয়ার পর নেদারল্যান্ডসের পাপারাজ্জি মডেল ম্যনেজমেন্টের হয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর তাকে পাঠানো হয় নিউ ইয়র্কে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকতে হয়নি তাকে। ক্রোয়েস বর্তমানে ল’রিয়েলের হয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া টাইম, সেভেন্টিন ম্যারি ক্লেয়ার, গ্ল্যামার, ভোগ, হার্পার বাজার, এলে, নিউমেরোসহ বেশ কয়েকটি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছে তার ছবি।
৫. নাটালিয়া ভোদিয়ানোভা : ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
রাশিয়ান মডেল এবং অভিনেত্রী নাটালিয়া মিখাইলোভনা ভোদিয়ানোভা। তার ডাক নাম সুপারনোভা। খুবই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন এ মডেল। উপার্জনের জন্য পথের পাশে জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। ১৫ বছর বয়সে মডেল এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। ১৭ বছর বয়সে প্যারিসে পাড়ি জমান সুপারনোভা এবং চুক্তিবদ্ধ হন ভিভা মডেলসের সঙ্গে। এখন পর্যন্ত ৩০০ জনেরও বেশি ইউরোপ এবং আমেরিকান ডিজাইনারের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ক্ল্যাস অব দ্য টাইটান্সসহ বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ক্ল্যাস অব দ্য টাইটান্স সিনেমায় মেডুসা চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
৬. মিরান্ডা মে খের : ৫.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
২০০৭ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান মডেল হিসেবে ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট মডেল ক্যাম্পেইনে অংশ নেন মিরান্ডা মে খের। ১৩ বছর বয়স থেকেই মডেলিং শুরু করেন মিরান্ডা। ১৯৯৭ সালে ডলি ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে মডেল হিসেবে বিজয়ী হন। ‘কোরা অগ্রানিক’ নামে মিরান্ডা খেরের নিজস্ব একটি স্কিনকেয়ার প্রসাধনী আছে। বিশ্বের সেরা আবেদনময়ী নারীর তালিকাতেও তার নাম রয়েছে।
৭. জোয়ান স্মল: (৫.৫ মার্কিন ডলার)
যুক্তরাষ্ট্রের পুয়ের্তো রিকোর ফ্যাশন মডেল জোয়ান স্মল রদ্রিগেজ। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব পুয়ের্তো রিকো থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে নিউ ইয়র্কে পাড়ি জমান জোয়ান। উদ্দেশ্য একটাই, বড় মডেল হওয়া। ২০০৭ সালে এলিট মডেল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন জোয়ান। এরপর অংশ নেন আইএমজি মডেলস ওয়াল্ড-ওয়াইডে। তারপর যোগ দেন গিভেন্সিতে। ফেন্ডি, ডাওর, গুচি, মার্ক জ্যাকব,বারবেরি, লুইস ভুইটন, জেন পল গুইটারের ডিজিইনার হিসেবে কাজ করেছেন জোয়ান স্মল। ২০১১ সালে প্রথম লাতিন মডেল হয়ে এস্টে লওডার কসমেটিকস এর প্রতিনিধিত্ব করেন এ তারকা মডেল।
৮. লারা স্টোন : (৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)
নেদারল্যান্ডের মডেল লারা স্টোন। ১৯৯৯ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে এলিট মডেল লুকে অংশ নেন তিনি। তাকে দেখে মুগ্ধ হন এলিট এক্সিকিউটিভরা। পাশাপাশি লারাকে সুযোগ দেন এলিট মডেলিং এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার। ২০০৬ সালে আইএমজি মডেল ওয়াল্ড-ওয়াইড হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সাড়া ফেলেন স্টোন। পরের বছর প্যারিস ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে স্থান পান স্টোন। কিন্তু প্রচ্ছদে প্রথাবিরোধী ছবি থাকায় অ্যান্টি-মডেল তকমা পান তিনি। গিভেন্সি, বেলস্টাফ এবং এইচঅ্যান্ডএম এর মতো খ্যাতি সম্পন্ন ক্যাম্পেইনে কাজ করেছেন লারা স্টোন।
৯. অ্যালেসান্দ্রা অ্যামব্রোসিও : (৫ মিলিয়ন)
ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং অভিনেত্রী অ্যালেসান্দ্রা কোরিন অ্যামব্রোসিও। ১২ বছর বয়স থেকেই মডেলিং শুরু করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ১৪ বছর বয়সেই এলিট মডেল লুক ন্যাশনাল কম্পিটিশনের পরিচিতি পান তিনি। ভিক্টোরিয়ান্স সিক্রেট মডেলদের মধ্যে একজন এ তারকা মডেল। রাল্ফ লরেন, আরমানি এক্সচেঞ্জ, নেক্সট, ক্রিস্টিটিয়ান ডিওর সহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের হয়ে মডেলিং করেছেন অ্যামব্রোসিও। এছাড়া বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেছেন এ তারকা। বর্তমানে অ্যামব্রোসিও ন্যাশনাল মাল্টিপল স্কেলেরোসিস সোসাইটির দূত হিসেবে কাজ করছেন।
১০. ক্যান্ডিস সুসান সোয়ানপোয়েল : (৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)
ক্যান্ডিস সুসান সেয়ানপোয়েল একজন দক্ষিণ আফ্রিকান মডেল। এলি, জিকিউ, হার্পার বাজার, আই-ডি, লাসসহ বেশ কিছু ম্যাগাজির প্রচ্ছদে দেখা গেছে তাকে। জেসন উ, প্রবাল গুরুঙ্গ, জেন পল গলটিয়ার, ক্রিশ্চিয়ান ডিওরের বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে তাকে। ২০১০ সাল থেকে তিনি ভিক্টোরিয়ান্স সিক্রেট মডেল হিসেবেই বেশি পরিচিত। মডেলিংয়ের পাশাপাশি মাদার টু মাদার দাতব্য সংস্থার হয়ে এইডস প্রতিরোধের জন্য কাজ করেন সোয়ানপোয়েল। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর নারীর তালিকায় রয়েছে তার নাম।
মন্তব্য চালু নেই