সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা
১৩৫ জনকে অর্ধকোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিল ইসি
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতায় শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৩৫ জনকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার প্রায় ৪৮ লাখ টাকা মঞ্জুরিপত্র জারির বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। তবে প্রায় ৩শ জনের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হলেও সাবাইকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনা হয়নি। ছোটোখাটো আহতদের ক্ষতিপূরণের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন সচিবালয়ের উপ-সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনে দায়িত্বরত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা-কর্মচারী হতাহতদের প্রায় তিনশ’ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। তালিকার মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আনসার-ভিডিপির হতাহত ১৩৫ জনকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। পরে তাদের নামে অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন করা হয়।
ইসি কর্মকর্তারা আরো জানান, তালিকায় পুলিশের ১০৮ জন, সেনাবাহিনীর ২২ জন ও বাংলাদেশে বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) ৫৫ জন আহতের নাম প্রাথমিক তালিকায় ছিল। তবে তাদেরকে অর্থবরাদ্দ দেয়নি কমিশন।
বাজেট শাখার একজন সিনিয়র সহকারি সচিব জানান, আহতের ধরন অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা ও গুরুতর আহতকে এক লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক বরাবর এ অর্থ পাঠানো হয়েছে। তারা দায়িত্ব নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে ক্ষতিপূরণের অর্থ পৌঁছে দেবে। অর্থ পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিশনে অবহিত করবে।
এছাড়া আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য সেবা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট সচিবের কাছে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
সূত্র জানায়, এ, বি, সি ও ডি ক্যাটাগরিতে এ ক্ষতিপূরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিহতদের পরিবারকে দেয়া হবে সাড়ে ৫ লাখ টাকা, দুটি অঙ্গহানি হয়েছে তাদের দুই লাখ টাকা, একটি অঙ্গহানি হলে এক লাখ টাকা করে দেয়া হবে। আর যারা সামান্য আহত হয়েছেন তাদের ১০ হাজার টাকা, যারা আহত হয়ে তিন থেকে সাত দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের ২০ হাজার টাকা। যারা সাত থেকে পনেরো দিন হাসপাতালে ছিলেন তাদের ৩০ হাজার টাকা এবং যারা এর অধিক দিন হাসপাতালে ছিলেন তাদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সহিংসতার কারণে ১৫টি আসনের ৫৯৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। ওইদিন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যসহ প্রায় ২৭৩ জন আহত হন। এছাড়া দিনাজপুরে একজন, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন এবং ঝিনাইদহে একজন নিহত হন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচনের দিন চট্টগ্রামে ৫ জন, দিনাজপুরে ৭৩ জন, মাগুরায় ২ জন, যশোরে ৪৫ জন, বগুড়ায় ৩ জন, রংপুরে ১২ জন, লালমনিরহাটে ১০ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩৬ জন, গাইবান্ধায় ১৩ জন, ঝিনাইদহে ৭ জন, মৌলভীবাজারে ২ জন, কুমিল্লায় ৭ জন, জামালপুরে ১৯ জন, শেরপুরে ৯ জন, ময়মনসিংহে ১ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, নীলফামারীতে ১৬ জন আহত হন।
মন্তব্য চালু নেই