১২ কোটি টাকার মেরামত, টিকল না দেড় বছরও

১২ কোটি টাকা ব্যয় করে মেরামতের দেড় বছর না পেরোতেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক ভেঙে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ, পাথর ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানচলাচলে ধীর গতিকে চাষাঢ়া শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলায় যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের লিংক রোড দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির নগরের চাষাঢ়া মোড় থেকে চাঁদমারি আর্মি মার্কেটের সামনে পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গার পিচ উঠে পাথর ও খোয়া বের হয়ে গেছে। আর বৃষ্টির কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল তীব্রভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাঝেমধ্যে রিকশা, ভ্যানের মতো যানবাহনগুলো উল্টে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর এপ্রিল-মে মাসে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ সড়কটি মেরামত করে। কিন্তু দেড় বছর না হতেই সড়কটির ওই অংশ ভেঙে গেছে।

দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকার বাসিন্দা মার্জিয়া তালুকদার চৈতি বলেন, লিংকরোডের চাষাঢ়ার অংশের এক কিলোমিটার অংশের যে অবস্থা, তাতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সড়কের ওই অংশের ভাঙা থাকার কারণে পুরো শহরই যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। গর্তগুলোতে পানি জমায় যেকোনো প্রকার যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, সড়কটি এমন বেহাল হাল কিন্তু দেখার কেউ নেই। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা এসব না দেখে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে কী না-জানতে চান তিনি।

শহরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, প্রতিদিন ঢাকার মতিঝিলে অফিসে যেতে হয়। কিন্তু ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের এক কিলোমিটারের ভাঙা অংশ পার হতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়।

একই অভিযোগ করেন শহরের চাঁদমারি এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবুল কালাম, মোহাম্মদ আলীসহ আরও অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন করেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগ সড়কটি মেরামত করতে দফায় দফায় টাকা খরচ করলেও সড়কটি কেন চলাচল উপযোগী থাকছে না? তাঁরা বলেন, সড়কের এই এক কিলোমিটার ভালোভাবে মেরামত করলে পথচারী ও জনসাধারণের একদিকে দুর্ভোগ যেমন কমতো, তেমনি শহরের যানজট অনেকাংশেই কমে যেত। কারণ, সড়কের ভাঙা অংশে যানবাহনের ধীর গতিতে কারণে শহরের প্রবেশ মুখে সব সময় যানজট লেগে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সড়কটিতে চলাচলকারী কাউন্টার সার্ভিস গাড়িগুলোর একাধিক মালিক অভিযোগ করেন, ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলার কারণে গাড়িগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শরফুদ্দিন বলেন, বৃষ্টিতে লিংকরোডের আজগর ফিলিং স্টেশন সামনে থেকে চাঁদমারি রেললাইন এলাকা পর্যন্ত ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে সড়কটি দিয়ে ধীর গতিতে যান চলাচলের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ভাঙা সড়কের কারণে নগরীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তীব্র যানজট লেগেই থাকছে। যাত্রী ভোগান্তির পাশাপাশি যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ নারায়ণগঞ্জ অফিসের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সামসুউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। খোঁজ খবর নিয়ে সড়কটি সংস্কারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



মন্তব্য চালু নেই