হেফাজতের হরতাল প্রত্যাহার
বৃহস্পতিবারের হরতাল প্রত্যাহার করেছে হেফাজতে ইসলাম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক ওয়ালিউল্লাহ আরমান হরতাল প্রত্যাহারের কথা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করায় হরতাল প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বারিধারায় বৈঠকে বসেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
হেফাজত সূত্র জানায়, হরতাল প্রত্যাহার প্রশ্নে সংগঠনের নেতারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। নেতাদের একটি অংশ হরতালের পক্ষে এবং অন্য অংশ হরতালের বিপক্ষে অবস্থান নেন।
হরতালের বিপক্ষের অংশের বক্তব্য হচ্ছে- লতিফ সিদ্দিকী আত্মসমর্পণ করার পর হরতালের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এরপরও হরতাল পালন করলে, জনগণ হেফাজতের ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারে।
হরতালের পক্ষের অংশ নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে হরতাল কর্মসূচি পালনের পক্ষে মত দেন। তারা দ্রুত বিচার করে লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসি কার্যকর করার নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে হরতাল কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য অনড় থাকেন।
এর আগে, সোমবার দুপুরে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের কিছুক্ষণ আগে হেফাজতের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক নুর হোসাইন কাশেমী বলেছিলেন, লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফেরার পরও সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেফতার করেনি। তাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেফতার না করলে লাগাতার হরতাল দেওয়া হবে। তার কিছুক্ষণ পরই ইসলামী ঐক্যেজোট বৃহস্পতিবার দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। এর কিছুক্ষণ পর চট্টগ্রাম থেকে হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বৃহস্পতিবার হরতালের ডাক দেন।
নুর হোসাইন কাশেমী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোমবার বলেছিলেন, লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করা হলে তারা কোনো হরতাল কিংবা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন না। হরতালের ডাক দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই লতিফ সিদ্দিকী ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর হেফাজতের নেতারা হরতাল পালন কিংবা প্রত্যাহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেন। অবশেষে দীর্ঘ আলোচনার পর তারা হরতাল প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তে একমত হন।
আগামী বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। শিশুদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চলছে। তাই হরতাল হলে তারা পরীক্ষা দিতে পারবে না। এ নিয়ে অবিভাবকরাও চিন্তিত হয়ে পড়েন। অবশেষে হরতাল প্রত্যাহার হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মন্তব্য চালু নেই