হৃদয় ভাঙলে কারা বেশি কষ্ট পায় জানালো গবেষণা

আপনি কি ভেবেছেন সাবেক সঙ্গীকে অন্য কারো সঙ্গে দেখে শুধু নারীদের পেটের ভেতরই মোচড়ানো শুরু হয়? কিন্তু সত্য হলো সবচেয়ে কঠিন পুরুষটিও সাবেক সঙ্গিনীকে অন্য কারো সঙ্গে দেখে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারেন।

যারা বলেন নারীরাই শুধু সম্পর্কের ব্যর্থতার জন্য শোকগ্রস্ত হন তারা জানেন না যে পুরুষরাও হৃদয়ভাঙার ফলে অনেক কষ্ট পান। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবদাসের কথা কি ভুলে গেছেন, যিনি প্রেমিকাকে হারানোর শোকে মদ খেতে খেতে পাঁড় মাতাল হয়ে গিয়েছিলেন? জেনে রাখুন এ ধরনের চরিত্র শুধু কল্পনায়ই সৃষ্টি হয় না। গবেষণায় দেখা গেছে, পুরষরা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনার ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবিন সিমন পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারী-পুরুষের স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক থেকে পুরুষরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হন। আবার সম্পর্কে ব্যর্থ বা প্রতারিত হলে পুরুষরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

পুরুষদের অহংবোধে আঘাত হানেঃ

সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নারী-পুরুষের কোনো সম্পর্ক যদি নিজেদের অনুকূলে কাজ না করে তাহলে পুরুষরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। ড. রাজন ভোঁসলে বলেন, “সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরুষরা খুবই হিসেবি হন। তারা এর ভালো এবং খারাপ উভয় দিকই পর্যবেক্ষণ করেন। ফলে কোনো সম্পর্ক ব্যর্থ হলে তারা পরাজিত হয়েছেন বা হেরে গেছেন বলে অনুভব করেন।”

আবেগগতভাবে ভেঙে পড়েনঃ

গবেষকরা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, যখন কোনো একটি সম্পর্ক ভেঙে পড়ে তখন পুরুষরা নিজেদের মূল্য সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি মনোবলহারা হন। কারণ পুরুষরা নারীদের মতো করে নিজেদের আবেগ অনুভূতিগুলো বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রকাশ করতে পারেন না। সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সীমা হিঙ্গোরারি বলেন, “এটি একটি অতিকথন যে, হৃদয় ভাঙার ফলে শুধু নারীরাই বেশি কষ্ট পান। বরং পুরুষরাই হৃদয়ভাঙার মতো ঘটনায় বেশি কষ্ট পান। কারণ সম্পর্কে ব্যর্থ হলে তাদের অহংবোধ এবং আত্ম-মূল্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।”

ভোঁসলে বলেন, “একবার যদি কোনো পুরুষের হৃদয় ভাঙে এরপর আর তিনি হৃদয়ের টানে কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে পারেন না। এরপর তিনি প্রতিটি নারীকেই বুদ্ধি দিয়ে বিচার করেন। একবার বাজে অভিজ্ঞতার পর একজন পুরুষ আর হৃদয় দিয়ে নয় বরং মাথা দিয়ে প্রেমে পড়েন। আর এ কারণেই একজন পুরুষ প্রতিটি সম্পর্কের মাঝে তুলনামূলক মূল্যায়ন অব্যাহত রাখেন।”

শক্তিশালী সংযুক্তিঃ

পুরুষরা তার জীবন সঙ্গিনীর সাথে আবগেগতভাবে সংযুক্ত হতে অনেক সময় নেন। তবে একবার যখন আবেগগতভাবে অসক্ত হন তখন গভীরভাবেই আসক্ত হন। যখন একজন পুরুষ কোনো নারীর প্রেমে পড়েন তখন তিনি তার ব্যাপারে অনেক বেশি রক্ষণশীল ও প্রতিরক্ষামূলক হয়ে ওঠেন। আর ওই নারীটি যদি তার ভালোবাসা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যায় তাহলে তিনি তা একদমই সহ্য করতে পারেন না। নিজের নারীটি যদি অন্য কোনো পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয় তাহলে তা খুবই ব্যক্তিগতভাবে নেন একজন পুরুষ। ভোঁসলে বলেন, “একে নিজের চরম ব্যক্তিগত ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করেন ওই পুরুষ। আর এতে ওই সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।”



মন্তব্য চালু নেই