বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল :
হাসিনা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম স্বৈরাচার
শেখ হাসিনাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারী সরকার বলে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শামসুল আলম মিলনের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগ বারবার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন তাদের কেউ কেউ আত্মসমর্পন করে। অনেকেই ভারতে পালিয়ে যায়। ছিয়াশি সালে তারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে স্বৈরাচার এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়ে তার আয়ু বাড়িয়ে দেয়।’
সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আওয়ামী লীগ এরশাদের কাছ থেকে ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা নিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগকে জাতীয় বেঈমান আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তর সালে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। এখন তারা আবার ৫ জানুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বারের মতো গণতন্ত্রকে হত্যা করে মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’
‘আমরা ফাঁকা মাঠ পেয়ে গোল দিয়েছি’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন-রাষ্ট্রব্যবস্থা-জনগণের ভবিষ্যৎ কোনো ফুটবল খেলা নয়।’
‘জনগণ মেনে নিয়েছে, বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র এ নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে’ সরকারের এমন বক্তব্যেও প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা বলে আর কতো জনগণকে বোঝানো চেষ্টা করবেন। জনগণ এ নির্বাচন মেনে নেয়নি। বিশ্ব সম্প্রদায় বলেছে, যেহেতু জনগণ এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তাই বিশ্বের কোনো দেশ এখন পর্যন্ত এ নির্বাচনকে বৈধতা দেয়নি।’
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি এতই জনপ্রিয় হন তাহলে একটা নির্বাচন দিন না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন দিন। দেখা যাক আপনারা কতগুলো ভোট পান আর আমরা কতগুলো ভোট পাই। যদি আমরা ভোট না পাই তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনো রাজনীতির কথা চিন্তাও করব না।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আপনাদের জামানত থাকবে না। কারোরই জামানত থাকবে না। দশটা আসনও পাবেন না। সেজন্য ছলে-বলে-কৌশলে র্যাব, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন।’
আওয়ামী লীগ সারাদেশকে কারাগার এবং সবাইকে আসামি বানিয়ে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এক এগারোতে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে যেভাবে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল এখন সেভাবেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কিন্তু ভুলে যাচ্ছেন কেন? যতবার দেশনেত্রীকে আটকে রেখেছেন, ততবার তিনি আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছেন। দেশনেত্রীকে আটকে রেখে গণতন্ত্রের আন্দোলন রুখে দেয়া সম্ভব নয়। সেই আন্দোলন আরো শক্তিশালী হবে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চেয়াপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামন রিপন, নাজিম উদ্দিন আলম, সহ তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছা বিষয়ক সম্পাদক হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই