হাত-পা ভেঙে প্রধান শিক্ষককে পুলিশে দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান!
ঝালকাঠিতে এক প্রধান শিক্ষকের হাত পা ভেঙে দিয়েছেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই নারীসহ আরও তিন জন। এদের মধ্যে দুইজনকে ঝালকাঠি সদর এবং অপর দুইজনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন গোবিন্দ ধবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. লতিফ মিয়া, কীত্তিপাশা বাজারের ব্যবসায়ী উত্তম দাস, তার বোন রীনা দাস এবং ভাইয়ের বউ আঞ্জনা দাস।
আহত শিক্ষক প্রধান শিক্ষক লতিফ মিয়া জানান, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে কীত্তিপাশা এলাকায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান দলবল নিয়ে উত্তম দাসের ঘর থেকে প্রধান শিক্ষক লতিফ মিয়াকে টেনে হিচড়ে বের করে হকিস্টিক দিয়ে বেধরক মারধর করতে থাকে। এ সময় তাকে রক্ষা করতে এসে মারপিটে অন্যরা আহত হয়। মারপিটের এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে করে তাদেরকে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে থানা পুলিশ হাসপাতালে পাঠায়। ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জের হিসেবে তাদের উপর হামলা ও মারধর করা হয় বলে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন।
ব্যবসায়ী উত্তম দাস বলেন, আমাকে মারধরের এক পর্যায় আমার বোন রীনা দাস এবং ভাইয়ের বউ আঞ্জনা দাস এগিয়ে আসলে তাদেরও সুলতান হোসেন খানের লোকজন পিটিয়ে আহত করে। পরে আমাকে ও শিক্ষক আবদুল লতিফকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যায়।
তবে এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান জানান, তাকে হত্যার হুমকি দেওয়াতে ক্ষুব্ধ সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ব্যপারে ঝালকাঠি সদর থানার পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) মো. মাহে আলম বলেন, চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন, ওই শিক্ষক এবং উত্তম দাসসহ এলাকার একদল লোক চেয়ারম্যানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিষয়টি জানাতে পেরে এলাকার লোকজন লতিফ ও উত্তম দাসকে আটক করে থানায় আনে।
এ সংক্রান্ত কিছু মোবাইল ফোনের কথোপকথনও চেয়ারম্যান পুলিশকে দিয়েছে। তাই এ ব্যপারে চেয়ারম্যানের পক্ষে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে শিক্ষক ও ব্যবসায়ী উত্তম দাসের অভিযোগটিও খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি মাহে আলম।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক এসএম হাসান মাহামুদ জানান, আ. লতিফ এর হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই