হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তির সহজ উপায়
অনেক সময় হাঁটুর সাধারণ ব্যাথা মারাত্মক যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। এতে প্রতিদিনের কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ভারতের এক অর্থোপেডিক্স এবং ট্রমাটোলজির বিশেষজ্ঞ ড. সঞ্জয় আগারওয়ালা জানান, বর্তমানে হাঁটুর ব্যথা আগের তুলনায় অনেক বেশি দেখা যায়। অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং জীবনযাপনের কারণে এ সমস্যা বেড়েছে। ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সুগঠিত পেশি না হওয়ার কারণে হাঁটুব্যথা অতি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ধরনের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কি পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এতে করে বেশ আরাম মিলবে। জীবনটা আরেকটু সহজ হয়ে আসবে।
১. সঠিক খাবার খান : যা খাচ্ছেন তার প্রভাব সরাসরি দেহে প্রভাব ফেলে। পুষ্টিকর খাবার শক্তিশালী হাঁটু তৈরি করে। তাই পুষ্টিকর খাবার খান।
২. ভিটামিন ডি : যেকোনো বয়সে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে ভিটামিন ডি দারুণ শক্তিশালী হাড় গঠন করে। ভিটামিন ডি এর অভাবের সঙ্গে অস্টেয়োপরোসিসের সম্পর্ক রয়েছে। সূর্যের আলোতে ভিটামিন মেলে। তবে পাশাপামি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
৩. হিল জুতা ত্যাগ করুন : হাই হিল জুতা দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘ সময় এটি পরে থাকলে হাঁটুসহ দেহের বিভিন্ন অংশে ব্যথার সৃষ্টি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল নারী হাই হিল জুতা পরেন তারা হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন।
৪. ওজন কমাতে হবে : দেহের ওজন বহন করে দুই পা। চাপটা এসে হাঁটুতেই পড়ে। তাই ওপরের অংশের ওজন যদি বেড়ে যায় তবে হাঁটুতে ব্যথা হতেই পারে। নিয়তিম ব্যায়াম এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব।
৫. স্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন : অনেকেই খাদ্য গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ এনে এক সময় তা মেনে চলেন না। কিন্তু একটি ডায়েটে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন। এ কাজে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
৬. সঠিক ব্যায়াম : সিনিয়র অর্থোপেডিক সার্জন ড. পঙ্কজ বাজাজ জানান, নিশ্চিত করতে হবে যে ব্যায়ামটা সুষ্ঠুভাবে চলছে। ভুল ব্যায়ামে হাঁটুতে ব্যথা হয়। ইয়োগা বিশেষজ্ঞ ইফা শ্রফ জানান, সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম এবং বিশ্রাম অতি জরুরি বিষয়। নয়তো হাঁটুসহ নানা স্থানে ব্যথা হতে পারে।
৭. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ : অনেক সময় অস্টেয়োপরোসিস হয়ে যায়। কিন্তু সচেতনতার অভাবে তা আড়ালেই থেকে যায়। তাই একজন বিশেষজ্ঞের অধীনে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।
তিন ধরনের ব্যায়ামে হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এগুলো সম্পর্কে ধারণা নিন।
১. একটি ব্যায়াম হলো ওয়াল স্লাইড। দেয়াল পিঠ ঠেকিয়ে মেরুদণ্ড ধীরে ধীরে দেয়ালে চাপ দিতে থাকুন। পিঠ ঠেকিয়ে ধীরে ধীরে দেয়াল ঘেঁষে নামুন। হাঁটু ভাঁজ করে বসা অবস্থায় কিছুক্ষণ থাকুন। আবার মেরুদণ্ডে চাপ বজায় রেখে উঠে দাঁড়ান।
২. আরেকটি কার্যকর ব্যায়াম হলো শর্ট আর্ক কোয়াড। একটি মোটা তোয়ালে গোল করে পাকিয়ে নিন। এর পরও হাঁটুর অংশটি রেখে মেঝেতে পিঠ ঠেকিয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার একটি পা হাঁটু মুড়ে উঁচু করুন। কিছুক্ষণ রেখে পা নামিয়ে নিন। এবার অপর পা একইভাবে ভাঁজ করুন ও নামিয়ে নিন।
৩. ব্রিজ হাঁটুর পশ্চাতভাগের হ্যামস্ট্রিং ও নিতম্বের হাড়কে শক্ত করে। মেঝেতে পিঠ দিয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পায়ে ভর দিয়ে হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার পা ও হাতের শক্তিতে কোমর ওপরের দিকে তুলুন। আবার নেমে আসুন।
মনে রাখবেন, ব্যায়ামের সময় হাঁটু বা অন্যান্য হাড়ে খুব বেশি চাপ ফেলবেন না। দৌড়া, সাঁতার, ট্রেডমিল বা ব্রিস্ক ওয়াকিংয়ের সময় সাবধান থাকবেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য চালু নেই