হরিণের মাথায় কাঠঠোকরা!!

‘এ্যাই, তুমি আমাকে চিমটি কাটছ ক্যান, আমি কি তোমাকে চিমটি কেটেছি?’ ঠিক যেন দুটি শিশুর খুনসুটি। আসলে কিন্তু তা নয়। এটা হচ্ছে একটা হরিণের কথা। হরিণ আবার কথা বলতে শিখল কবে? আরে না, হরিন নিজের মুখে এটি বলেনি তো। আর সব কি মুখ ফুটে বলতে হয়, অভিব্যক্তি বলেও তো একটি কথা আছে, নাকি!

ইম্পেলা মানে আফ্রিকান হরিণের অভিব্যক্তি দেখে এমনটিই মনে হয়েছে প্রাণিবিদ ও ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার মগানস ট্রোলের। ডেনমার্কের এই আলোকচিত্রী সম্প্রতি ছবি তুলতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে। সেখানে বেড়াতে বেড়াতে হঠাৎ করেই তার চোখে পড়ে ইম্পেলার সঙ্গে মনোহর এক কাঠঠোকরার খুনসুটি। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামরাবন্দি করেন সেই যাদুকরি মুহূর্তটি।

হরিণের মাথায় কাঠঠোকরা

লাল ঠোটের পাখিটি গিয়ে বসেছিল ইম্পেলার মাথায়। ক্রমাগত তাকে ঠুকরেই চলেছিল। কখনো ঘাড়ে, কখনো মাথায় কখনো বা কানের ফোকরে। হরিণটি এমন ভাব দেখাচ্ছিল যেন খুবই বিরক্ত হচ্ছে সে। কিন্তু ৪৬ বছরের ট্রোল মনে করেন, ‘ওপরে ওপরে বিরক্ত ভাব দেখালেও সে কিন্তু পাখির খুনসুটি বেশ উপভোগই করছিল। হরিণটির আচরণ দেখে আমি খুব মজা পেয়েছি। এর আগে এমনটি আর দেখিনি।’

হরিণের মাথায় কাঠঠোকরা

কাঠঠোকরা আর হরিণের কীর্তিকলাপ দেখে পার্কের দর্শনার্থীরা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়েছিল। প্রাণিরাও যে মানুষের মত অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে তা দেখে যারপরনাই চমৎকৃত আলোকচিত্রী ট্রোল। তিনি বলেন,‘ঘটনাটি ছিল খুবই আনন্দদায়ক। পশুরাও যে মানুষের মত ভাব বিনিময় করতে পারে তা আমার জানা ছিল না। এই অদ্ভূত ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।’

লাল ঠোটের এই কাঠঠোকরাকে আফ্রিকায় বলে অক্সপেকার বা ষাড়ঠোকরা। আফ্রিকায় দুই জাতের অক্সপেকার দেখা যায়, একটা লাল ঠোটের অন্যটি ও হলুদ ঠোটের। তারা ষাড় বা গরু, জেব্রা, হরিণ ইত্যাদি নীরিহ জাতের চারপেয়েদের পিঠে চড়তে ভালোবাসে। শুনলে অবাক হবেন, নীরিহদর্শন এ পাখিটির প্রিয় খাবার হচ্ছে রক্ত। আর রক্ত খাওয়ার জন্যই তারা পশুদের পিঠে চড়ে বসে এবং ক্রমাগত ঠোকরাতে থাকে।

হরিণের মাথায় কাঠঠোকরা



মন্তব্য চালু নেই