স্বর্ণ কেনার আগে ভুলেও করবেন না এই ৬ ভুল

কোনোকিছু কিনতে গিয়ে তাৎক্ষণিক উত্তেজনায় ছোটখাট ভুল হরহামেশা করে বসি আমরা। এই ভুলগুলো পরে বড় আফসোসের কারণ হয়। আর যদি তা হয় স্বর্ণর মতো মহার্ঘ জিনিস কেনার ক্ষেত্রে- তবে তো সেই দুঃখের মাত্রাটা অনেক গভীর হয়। স্বর্ণ কেনার আগে কিছু সাবধানতা মানলে পরে আপনাকে পস্তাতে হবে না। এখানে সে ধরনের কয়েকটি টিপস দেওয়া হলো :

১। সোনার পয়সা বা স্বর্ণমুদ্রা কেনা : সোজা বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে, আপনি ভবিষ্যতে নগদ লাভের আশায় টাকা বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন। তবে স্বর্ণকারের তৈরি হালের কোনো নকশায় তৈরি বা কোনো দেশের টাকশালের তৈরি সে দেশের স্বর্ণমুদ্রা কিনতে গেলে একটু খোঁজ-খবর করুন। অতি উৎসাহের কারণে এই হিসাবটা করতে ভুলবেন না যে সামনে এই স্বর্ণর দাম বাড়তে যাচ্ছে না কমতে যাচ্ছে? কারণ, যিনি তা বেচছেন, হতে পারে সামনে দাম পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে তিনি তা করছেন। ওই তথ্যটা তার জানা আছে কিন্তু আপনার নেই। আপনার উচিত হবে বিক্রেতা বা দালাল যতই পীড়াপিড়ি করুক না কেন- আপনার উচিত বাজারদর সম্ভাব্যতর পর্যায়ের নিম্নতম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

২। সঞ্চয়ের জন্য লাভজনক নয় : কারণ, স্বর্ণ এমন কোনো সম্পদ নয় যা লাগাতার বা মাস মাস আপনাকে লাভের টাকা দিয়ে যাবে। মূলত নিয়মিত আয়দানকারী কোনো সম্পদ নয় এটা। তাই আর্থিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে- আপনার মোট বিনিয়োগযোগ্য অর্থের মাত্র ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত স্বর্ণ কেনায় বিনিয়োগ করতে পারেন- যা আপনি বিশেষ সময়ের জরুরি প্রয়োজনে নগদে বেচে বিপদ সামলাতে পারেন।

৩। ভুল জায়গা থেকে কেনা : নয়া বিনিয়োগকারীরা এই জটিলতায় বেশি পড়েন। স্বর্ণ নিয়মিত খরিদ করা কোনো ভোগ্যপণ্য বা কম্পিউটার একসেসরিজ নয়। তাই কোনটা আসল স্বর্ণ কোনটা নকল এটা চিনে নেওয়া অনেক বুদ্ধিমানের পক্ষেও সম্ভব হয় না। এ কারণে, স্বর্ণর নামে পিতল, তামা বা বেশি দামে কম ক্যারেটের স্বর্ণ কিনে ধোঁকা খেতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে লাভের হিসাব কিছুটা কম মনে হলেও প্রতিষ্ঠিত, নামি দোকান থেকেই কিনুন। স্বর্ণালঙ্কার কিনতে গেলে হলমার্কচিহ্নিত দেখে কিনুন- কারণ ছোটখাট প্রতিষ্ঠান এটা দিতে পারে না, তাই বিশ্বস্ততা নিশ্চিত হওয়া যায় না। আর স্বর্ণমুদ্রা কিনতে গেলেও বিশ্বস্ত দোকান থেকেই কিনুন।

৪। অপ্রয়োজনে কেনা : নিজের প্রয়োজন মনে করলেই স্বর্ণ কিনুন। অনেক সময় দেখা যায় আত্মীয়-বন্ধুদের খুশি করতে কেউ কেউ অহেতুক স্বর্ণ কিনে থাকেন। এটা আপনার সঞ্চয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করবে যদি না লাভ-লসের হিসাবটা ঠিকমতো করে নেন।

৫। বর্তমান দাম না জানা : স্বর্ণ ক্রেতারা এই ভুলের শিকার হন হর হামেশা। এটা হচ্ছে হালের বাজারদর না জানা। কেনা ও বেচা দুই ক্ষেত্রেই এই অজ্ঞতা আপনাকে ক্ষতির মুখে ফেলবে। এমন অনেকে আছেন ছয় মাস বা একবছর আগের দরকেই চলমান দর বলে ধরে নেন। এ ক্ষেত্রে শুধু পত্রিকা ঘেঁটে বা ইন্টারনেটে ঢুঁ মেরে কিংবা পরিচিতজনদের কাছে খোঁজ করে সঠিক দরটা জেনে নেওয়া যায়।

৬। রুপায় অনাগ্রহ : অভিজ্ঞজনদের মত হচ্ছে- যখন স্বর্ণর দর ঊর্ধ্বমুখী তখন রুপার মুদ্রা ফায়দা দিতে পারে আপনাকে। খোঁজ-খবর করে কিনে রাখুন কিছু পুরনো আমলের রৌপ্যমুদ্রা বা রুপার বার। স্বর্ণর সঙ্গে সঙ্গে চাঁদির দামও বাড়তে থাকবে- এটাই নিয়ম। সে সূত্রে যখনি সন্তোষজনক লাভ দেখবেন- স্রেফ বেচে দিন।



মন্তব্য চালু নেই