স্তন নিয়ে কিছু কথা

স্তন ক্যান্সার কি? কীভাবে বুঝবেন স্তন ক্যান্সার হয়েছে ॥ বাঁচতে হলে জানতে হবে

এই প্রবন্ধে আপনি জানতে পারবেনঃ

  • স্তন ক্যানসার কি, কেন হয়, পরীক্ষা নিরিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে

  • স্তন সুগঠিত রাখার উপায়, স্তনের ব্যায়াম সম্পর্কে

  • স্তনে হঠাৎ সমস্যা হলে কি করবেন ? প্রতিকার কি?

  • কিশোরী বয়সে স্তন ঝুলে যাওয়ার লক্ষন, কারন ও সমাধান সম্পর্কে

__________________________________

স্তন ক্যান্সার একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই এ রোগ হতে পারে, তবে মহিলাদের মধ্যেই এর প্রবণতা বেশি দেখা যায়। স্তন ক্যান্সার বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বসহ বেশিরভাগ অঞ্চলের নারীদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্কের নাম। তবে আশার কথা হলো সঠিক সময়ে এর নির্নয়ে আমরা সহজেই এর চিকিৎসা করতে পারি। আজ আমরা স্তন ক্যান্সার কি এবং এর চিকিৎসার কথা জানবো।

স্তন ক্যান্সার কি
স্তনের কিছু কোষ যখন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে তখন স্তন ক্যান্সার হতে দেখা যায়। অধিকাংশ মহিলাদের জন্য এই রোগ একটি আতঙ্কের কারণ।

স্তন ক্যান্সার হয়েছে কি করে বুঝবেন
স্তন ক্যান্সার হলে সাধারণত: নিচের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয় :
*স্তনে একটি পিন্ডের মত অনুভব হয়
*স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত বের হয়
*স্তনের আকার ও আকৃতির পরিবর্তন হয়
*স্তনের ত্বকে পরিবর্তন দেখা দেয়, যেমন-টোল পড়া
*স্তনের বোঁটা ভিতরের দিকে ঢুকে যায়
*স্তনের বোঁটার চামড়া উঠতে থাকে
*স্তনের ত্বক লালচে যেমন-কমলার খোসার মতো এবং গর্ত-গর্ত হয়ে যায়

কখন ডাক্তার দেখাবেন
নিচের কারণগুলো দেখা দেয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে :
*স্তনে নতুন এবং অস্বাভাবিক পিন্ড অনুভব করলে
*পরবর্তী মাসিক পার হয়ে গেলেও পিন্ড না গেলে
*স্তনের পিন্ড আরও বড় এবং শক্ত হলে
*স্তনের বোঁটা থেকে অনবরত রক্ত নির্গত হলে
*স্তনের ত্বকে পরিবর্তন দেখা দিলে
*স্তনের বোঁটা ভিতরের দিকে ঢুকে গেলে

কোথায় চিকিৎসা করাবেন
*জেলা সদর হাসপাতাল
*মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
*বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
*বিশেষায়িত সরকারী/বেসরকারী হাসপাতাল

কি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে
*মেমোগ্রাম (Mammogram) বা স্তনের এক্স-রে
*ব্রেস্ট আলট্রাসাউন্ড (Breast ultrasound)
*ব্রেস্ট ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমাজিং (Breast magnetic resonance imaging, (MRI))
*বায়োপসি (Biopsy)
*রক্তের পরীক্ষা
*বুকের এক্স-রে
*কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফী স্ক্যান (Computerized tomography (CT) scan)
*পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফী স্ক্যান (Positron emission tomography (PET) scan)

কি ধরণের চিকিৎসা আছে
স্তন ক্যান্সোরের চিকিৎসা নির্ভর করে স্তন ক্যান্সারের ধরণ, পর্যায় ক্যান্সারের কোষগুলো হরমোণ সংবেদনশীল কিনা তার উপর। অধিকাংশ মহিলারাই স্তন অপারেশনের পাশাপাশি অন্যান্য বাড়তি চিকিৎসাও গ্রহণ করে থাকেন। যেমন: কেমোথেরাপী,হরমোণ থেরাপী অথবা রশ্মি থেরাপী ।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন.১ . স্তন ক্যান্সার কেন হয় ?
উত্তর . স্তনের কিছু কোষ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠলে স্তন ক্যান্সার হয়।

প্রশ্ন .২ . কাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে ?

উত্তর . যাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে তারা হলেন :
*পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি
*৬০ বছর বয়সের বেশি মহিলাদের
*একটি স্তনে ক্যান্সার হলে অপরটিও আক্রান্ত হতে পারে
*মা, বোন অথবা মেয়ের স্তন ক্যান্সার থাকলে
*জীনগত (Genes) কারণে
*রশ্মির বিচ্ছুরণ থেকে (Radiation Exposure)
*অস্বাভাবিক মোটা হলে
*অল্প বয়সে মাসিক হলে
*বেশি বয়সে মনোপজ হলে (Menopause)
*বেশি বয়সে প্রথম বাচ্চা নিলে
*মহিলারা যারা হরমোন থেরাপী নেন
*মদ পান করলে

প্রশ্ন.৩.স্তন ক্যান্সারে কি ধরণের অপারেশন করার প্রয়োজন হয়?

উত্তর. স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সাধারণত যে অপারেশনগুলোর করার প্রয়োজন হয়:
*ল্যাম্পপেকটমি (Lumpectomy)
*ম্যাসটেকটমি (Mastectomy)
*সেন্টিনাল নোড বায়োপসি (Sentinel node biopsy)
*অক্সিলারি লিম্ফ নোড ডিসেকশন (Axillary lymph node dissection)

 

স্তন সুগঠিত রাখতে চান? নিয়মিত স্তনের ব্যায়াম করেন তো?

breast-cancer-awarenessস্তন-হাত, পায়ের মতোই একটি সাধারণ অঙ্গ। কিন্তু সুপ্রাচীনকাল থেকেই একে দেখা হয়েছে রক্ষণশীল দৃষ্টিকোণ থেকে। আর এ কারণেই স্তনকে ঘিরে রয়েছে নানান ভ্রান্ত ধারণা। যেমন, স্তনের আকার বৃদ্ধি নিয়ে। যদিও কোনোরকম ব্যায়াম স্তনের আয়তন বা আকৃতি পাল্টাতে পারে না, তবুও কিছু ব্যায়ামের সাহায্যে স্তনকে আরো দৃঢ় এবং পূর্ণস্ফীত করা যায়। স্তনের তলায় অবস্থিত পেক্টোরাল (পাঁজর সংলগ্ন) মাংস পেশিটিকে সবলতর করলে, এই অঙ্গটিকে অনেক বেশি স্ফীত করা যায়। ব্যায়াম আরম্ভ করার আগে দেহভঙ্গির ব্যাপারে সচেতন হোন। সামনে ঝুঁকে দাঁড়ালে স্তনের আকার শিথিল হয়ে যেতে পারে। পিঠ সোজা করে দাঁড়ান, বুক চিতিয়ে শুরু করুন ব্যায়াম।

১) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাত দুটিকে সামনে ছড়িয়ে দিন এমনভাবে যাতে হাত দুটি একে অপরের চেয়ে ১০ সেমি দূরে থাকে। এবার হাত দুটি ওঠানামা করুন – যেন সাঁতার কাটছেন। এবাবে ১০ বার করুন।

২) এবার হাত দুটি বুকের কাছে এনে একসঙ্গে মুঠো করুন এবং একে অপরের দিকে চাপ দিন। মনে মনে ৫ গুনুন। তারপর ছেড়ে দিন। এভাবে ১০ বার করবেন।

৩) হাত দুটি বুকের কাছে এনে একটি হাত দিয়ে অপরটি ধরুন। এবার দুটি হাত দু দিকে টানুন। ৫ গুনুন। এভাবে ১০ বার করুন।

৪) হাত দুটি কাঁধ বরাবর দু দিকে ছড়িয়ে দিন। হাতের তালু দুটি নিচের দিকে রাখুন। এবার হাত দুটি কাঁধ বরাবর রেখে সামনে পিছনে করুন ২০ বার। এভাবে ১০ বার করুন।

৫) একবারে সোজা হয়ে দাঁড়ান। কান বরাবর হাত দুটি উপরে তুলুন। এবার হাত দুটি দিয়ে একটি ডাম্বেল ধরুন এবং কনুই ভাঁজ করে হাত দুটি পিছনে নামান, যাতে ডাম্বেলটি আপনার পিঠে স্পর্শ করে। এভাবে ১০ বার করুন।

৬) একটি বেঞ্চের উপর শুয়ে পড়ুন। পা দুটো ঝুলিয়ে দিন। দুটি হাতে দুটি ডাম্বেল নিন। হাত দুটি আস্তে আস্তে মাথার উপর তুলে পেটের কাছে নামিয়ে আনুন। আবার ধীরে ধীরে হাত তুলে মাথার উপর দিয়ে নিয়ে পিছনে ঝুলিয়ে দিন। এভাবে ১০ বার করুন।

 

হঠাৎ করেই স্তনে সমস্যা?
ব্রেস্টে লাম্প মানেই অনেকে মনে করেন নির্ঘাত ব্রেস্ট ক্যানসার হয়েছে। ভাবাটা অস্বাভাবিকও নয়। যে হারে ব্রেস্ট ক্যানসারের সমস্যা বাড়ছে নারীদের ভয় পাওয়ার কারণটা মোটেও হেলাফেলার কিছু নয়। তবে ব্রেস্টে লাম্প দেখা দিলেই যে মনে করবেন ক্যানসার হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। ব্রেস্টে লাম্প অনেকেই হঠাৎ আবিস্কার করেন। কিন্তু প্রশ্নটা হল লাম্প 6d2ce50172c06198a0ae94457703305bহয় কেন? এক এক বয়সে এক এক কারণে লাম্প হতে পারে। চলুন তাহলে ব্রেস্টে লাম্প হওয়ার কারণগুলো জেনে নিই।

১। বয়ঃসন্ধিতে স্তনে লাম্প ফাইব্রোঅ্যাডেনোমা হতে পারে। এটা নিয়ে চিন্তার বিশেষ কোন কারণ নেই। এই লাম্প নিজে নিজেই চলে যায়।

২। অল্পবয়স্ক মহিলারা যারা (ব্রেস্ট ফিড করাচ্ছেন) ব্রেস্ট অ্যাবসেস সাধারণত যন্ত্রণাদায়ক ও লাল হয়। এই সমস্যায় সার্জন দেখিয়ে কারণ জানা ও চিকিৎসা জরুরি। প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে লাম্প অনেক কিছুই হতে পারে। সিস্ট থেকে শুরু করে বিনাইন টিউমার কিংবা ক্যানসার। মেনোপজের পড়ে স্তনে লাম্প দেখা দিলে টেস্ট করা জরুরি। কারণ এর থেকে ক্যানসার হতে পারে। তবে লাম্প দেখলেই সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। ডায়াগনসিসের ফল যাই বের হোক না কেন আপনার সচেতন হওয়া উচিত।

৩। প্রথমেই বলবো, হাইপার হবেন না। খেয়াল করে দেখুন স্তনের আর কোথাও বা বগলে আর কোনও লাম্প হয়েছে কি না। আর্মপিট লাম্প সাধারণ লিম্ফ নোড হয়। ভালো করে দেখুন স্তনের চামড়া আর নিপল আন্ডারলায়িং লাম্পের সাথে জুড়ে আছে কি না। থাকলে চিন্তার বিষয়। লাম্প নরম হলে চিন্তার কিছু নেই। খুব শক্ত হলে ডাক্তার দেখান।

৪। পিরিয়ডের সময় অনেক নারীরই ব্রেস্টে ব্যথা হয়। এটা কিন্তু ফাইব্রোসিস্টিক ডিজিজ। সামান্য ট্রিটমেন্টেই ঠিক হয়ে যেতে পারে। লাম্প নিয়ে যদি কোন সন্দেহ হয়, তা হলে সার্জনের পরামর্শ নিন।

এবার আসা যাক ব্রেস্ট ক্যানসারের কথায়। সাধারণত কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর চিহ্নিত করা যায়।

– একটা ব্রেস্টে ক্যানসার হলে অন্য ব্রেস্টেও ক্যানসার হতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

– অতিরিক্তি ধূমপান করলে বা এলকোহল পান করলে ব্রেস্ট ক্যানসার হতে পারে।

– ওবিসিটিও কিন্তু ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার অন্যতম কারণ।

women-big-breast-imageতবে বয়ঃসন্ধি থেকে যদি কেউ মোটা হতে শুরু করেন এবং ৪০-৫০ বছরেও মোটা থাকেন, তাদের পোস্ট মেনোপজাল ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি। তবে ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়া পর্যন্ত আর অপেক্ষা করার তো কোন মানে হয়না। তাই আজ থেকেই নিজেদের সচেতন করুন। কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন। হেলদি খাবার খান। ধূমপান ও অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। ওজন কমিয়ে ফেলুন। তবে কমিয়ে ফেলা যথেষ্ট নয় সেটাকে সঠিক ভাবে মেইনটেইন করতে হবে। মাঝে মাঝেই নিজেই নিজের স্তন পরিক্ষা করুন।

নারীদেহের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল স্তন। সুস্থ দেহের পাশাপাশি সুন্দর স্তনেরও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে নারীরা নিজের দেহের প্রতি খুব কমই যত্ন নিতে পারেন। দেহকে সুস্থ রাখার সাথে সুগঠিত স্তন পেতে সঠিক ডায়েট, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম, প্রচুর পানি করা, মাঝে মাঝে নিজেই নিজের স্তন চেক করা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক নারীর ক্ষেত্রেই নিজের দেহের প্রতি অযত্নের কারণে দেখা দেয় নানা সমস্যা এবং সাথে স্তনের আকারও নষ্ট হয়ে থাকে। তাই জেনে রাখুন কিছু বিষয় যেই কারণে স্তনের আকার নষ্ট হয়।

ভুল সাইজের ব্রা পরা

স্তনের সাইজ অনুযায়ী যদি সঠিক মাপের ব্রা না পরা হয় তাহলে তা স্তনের আকার নষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী। তাই ব্রা কেনার সময় অবশ্যই দেখেশুনে সঠিক মাপের ব্রা কেনা উচিৎ। আবার অন্যদিকে ১৫ বছরের একটি গবেষণার পর ২০১৩ তে প্রকাশ করা হয়, যে সকল নারীরা কখনোই ব্রা পরেন নি তাদের স্তন যারা সবসময় ব্রা পরছেন তাদের থেকেও সুগঠিত।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়া

সর্বদা সুস্থ থাকার মূল মন্ত্রই হল পানি। ঠিক মতো পানি পান না করলে যেমন ত্বকের লাবণ্যতা নষ্ট হয়ে যায় ঠিক একই ভাবে স্তনের আকারও নষ্ট হয়ে থাকে। তাই সুস্থ থাকতে ও সুগঠিত স্তন পেতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া উচিৎ নারীদের।

রোদের আলো থেকে স্তন রক্ষা না করা

আমরা জানি যে সূর্যের আলো আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এর থেকে বাঁচার উপায় হল সানস্ক্রিন। যদিও আমাদের দেশে নারীরা সানবাথ করেন না। কিন্তু তারপরেও অনেক নারীই খোলামেলা কাপড় পরে থাকেন। তাই অন্যান্য দেহের অন্যান্য অংশে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পাশাপাশি স্তনেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

ধূমপান ত্যাগ করতে হবে

দীর্ঘ ৮ বছরের একটি গবেষণার পর বলা হয়েছে যে স্তনের আকার নষ্ট হওয়ার পিছনে ধূমপান করা অন্যতম কারণ। ধূমপানের ফলে নারীর স্তনের টানটান ভাব নষ্ট হয়ে যায় এবং যার কারণে স্তন সুগঠিত থাকে না।

অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা

আপনি যদি অতিরিক্ত ডায়েট করে থাকেন তাহলে তা স্তনের জন্য ক্ষতিকর। খুব বেশি ডায়েট করার জন্য দেহের চামড়ার সতেজ ভাব কমে যায় চামড়া ঝুলে পড়ে। এবং ওজন কমানোর পরে নারীদেহে সবার প্রথমে ওজন কমে স্তনের কারণ স্তনেই সবচেয়ে বেশি ফ্যাট থাকে।

 

কিশোরী বয়সে স্তন ঝুলে যাওয়ার লক্ষন, কারন ও সমাধান

বয়স বাড়ার সাথে সাথে একটি নির্দিষ্ট কৌনিক মাত্রায় স্তন ঝুলে যাওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু কিশোরী বয়সে স্তন ঢিলা হয়ে যাবার প্রবনতা স্বাভাবিক শাররীক পরিবর্তনের পর্যায়ে পড়েনা। কিশোরীর স্তন ঝুলে যাবার সম্ভাব্য কারনগুলোর মধ্যে আছে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া, girl_breast_looseসন্তান গর্ভধারন, ধুমপান অথবা বংশগত কারনে বড় আকৃতির স্তন থাকা এবং বড় স্তনে প্রয়োজনীয় সার্পোট/সঠিক আকারের ব্রা পরিধান না করা।

লক্ষনসমুহঃ
নারী স্তন অস্থিবন্ধনীতে অবলম্বন করেথাকে; যদি ঐসকল অস্থিবন্ধনী প্রসারিত হয়, পেশীকলার শক্তি হ্রাস পাবার কারনে স্তনের প্রাকৃতিক অবস্থান সাধারনত নিচে নেমে আসে। স্তনবোঁটার স্থানচ্যুতি (স্তনের একদম নিচের দিকেচলে আসা) এবং স্তনের দুই পাশে চামড়া কুচকে যাওয়া থেকেও স্তন ঝুল সহযে অনুমান করা যায়।

কারনঃ
স্তন ঢিলা হয়ে যাবার স্বাভাবিক কারন হলো স্তন অতিরিক্ত বড় এবং ভারী হয়ে যাওয়া, অথবা অপ্রতুল স্তন-সার্পোট। সন্তান জন্মদানের কারনে অর্থাৎ প্রসুতিকালীন সময় স্তনের আকার বড় হয়ে যাওয়া এবং স্তনধারনের কারনে তা ভারী হয়ে যায় এবং ফল স্বরূপ স্তন ঢিলা হয়ে যেতে পারে। এখানে উল্লেখ্য যে সন্তানকে স্তন পান করালে স্তনের আকারে কোন প্রকার পরিবর্তন হয়না। একইসাথে উচ্চ প্রভাব ব্যয়াম যেমন দৌড়ানো, নাচ করা ইত্যাদির সময় যদি স্পোটস ব্রা কিংবা স্তনের পুর্ন অবলম্বনে সামর্থ্য ব্রা ব্যবহার না করা হয় তবে তা থেকে স্তনের ঝুলে যাওয়া সম্ভব!

উপপাদ্য/বিবেচ্য বিষয়ঃ
অনেক নারী চিন্তিত হন – সন্তানকে স্তনদানের সাথে স্তনের ঢিলা হয়ে যাবার সম্পর্ক আছে কিনা? কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে স্তনদানের সাথে স্তনের আকার এবং গঠনের পরিবর্তনের কোন প্রকার নেগেটিভ সম্পর্ক নেই। মাইয়োক্লিনিক ওয়েবসাইটের মতে প্রসুতিকালীন স্তন ঝুলার কারন হলো হঠাৎ স্তনের আকার পরিবর্তন এবং পরবতীতে তা আবার স্বল্প সময় ব্যবধানে কমে যাওয়া।
brest implant

নিবারণ/সমাধানঃ
কিশোরী বয়সে স্তনের ঝুলে যাওয়া রোধে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যেন স্তনেরঅস্থিবন্ধনী প্রসারীত না হয় এবং স্তন চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট নাহয়। যেহেতু প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ধুমপান চামড়ার স্থিতিস্থপকতা দুর্বল করে দেয় তাই ধুমপায়ীর তুলনায় অধুমপায়ী নারীর স্তন শিথিলতার প্রবনতা কম। স্বাস্থ্যকর শাররীক ওজন রক্ষা করা এবং উচ্চ-প্রভাব ব্যয়াম এবং দৈনন্দিন জীবনযাপনে পর্যাপ্ত স্তন সার্পোট স্তনের ঝুলে যাওয়া প্রতিহত করতে পারে। ‘মেডিসিন ইন স্পোর্টস এন্ড এক্সসেরসাইজ‘ জার্নাল এর জুলাই ২০১০ সংখ্যায় ছাপা এক প্রতিবেদনে বলা হয় – যে সকল স্পোর্টস ব্রা ক্রিয়াকালীন অধিক ওজনের স্তনকে সম্পুর্ন উত্তোলন এবং চেপে রাখতে সক্ষম তা নারীর অস্বস্তির সাথে সাথে স্তনের আকার/গঠনপরিবর্তন প্রতিহত করে।

সাবধানতাঃ
স্তনের আকার/গঠনে যেকোন অস্বাভাবিক পরিবর্তন এবং স্তনবোঁটার স্থান, আকার কিংবা গঠন পরিবর্তন হয়তো অন্যকোন কঠিন সমস্যার পুর্বাবাশ হতে পারে। আপনার উচিত স্তনের মাসিক স্ব-পর্যবেক্ষন করা। যেকোন হঠাৎ পরিবর্তন লিপিবদ্ধ করুন। আপনার স্তনের আকার সম্পর্কে কোন প্রকার অস্বাভাবিকতা আঁচ করলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে অস্বস্তি করবেন না। কারন লজ্জার কারনে সমস্যা প্রকটতা পেতে পারে।

তথ্যসূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও  ডা. সমীরা সাহা, সানন্দা



মন্তব্য চালু নেই